মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি -মাশরুম খাওয়ার নিয়ম

ভিটামিন ডি যুক্ত ফলের নামমাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে আমরা আজকে আলোচনা করব। আপনি যদি সঠিকভাবে জেনে থাকেন কিভাবে মাশরুমএর বীজ তৈরি করতে হয় তাহলে কিন্তু সঠিকভাবে তৈরি করতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে আসা যাক মাশরুম চাষ পদ্ধতি ও মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি কি?
multiplebd-মাশরুম-বীজ-তৈরির-পদ্ধতি -মাশরুম-খাওয়ার-নিয়ম

মাশরুম বীজ তৈরি করা কিন্তু খুব একটা জটিল কাজ নয় কিন্তু এর জন্য আপনাকে জানতে হবে সঠিক ধাপগুলো যে বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে যাবেন আমাদের আজকের এই আলোচনায়। তাই অবশ্যই বিস্তারিত জানতে আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পডুন।.

ভূমিকা 

অনেকেই মাশরুম বিজ চাষ করতে চাইলেও জানেন না যে কিভাবে মাশরুম বীজ তৈরি করতে হয় এবং মাশরুম চাষ পদ্ধতি কি। এজন্য এ সকল বিষয় সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত তথ্য জেনে যাবেন যদি আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়েন। শুধু কি তাই বরং আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জেনে যাবেন মাশরুম এর উপকারিতা, মাশরুম এর প্রকারভেদসহ মাশরুমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কেও ।

মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি

মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি এবং মাশরুম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে যদি আপনার জানা থাকে তাহলে কিন্তু খুব সহজেই আপনি বাড়িতে বসেই মাশরুম তৈরি করতে পারবেন এবং এগুলো অর্থনৈতিকভাবে বাজারজাত করার মাধ্যমে অনেক টাকা পেয়ে যাবেন। এদেরও খাবার হিসেবেও কিন্তু আপনি মাশরুম ব্যবহার করতে পারবেন।

multiplebd-মাশরুম-বীজ-তৈরির-পদ্ধতি -মাশরুম-খাওয়ার-নিয়ম

চলুন তাহলে জেনে আসা যাক মাশরুম বীজ কিভাবে তৈরি করবেন সেই সম্পর্কে। মাশরুম বীজ তৈরি করার জন্য আপনার কিছু উপকরণ প্রয়োজন হবে যেমন - ধানের তুষ অথবা কাটা ঘর, কাঠের গোড়া, পাথরের চূর্ন, গমের ভুসি এবং পানি। এ সকল উপকরণগুলো যদি আপনি সংগ্রহ করে নেন তাহলে কিন্তু খুব সহজেই এগুলো দিয়ে আপনি মাশরুম বীজ তৈরি করতে পারবেন।

এজন্য আপনাকে এই সবগুলো উপাদান ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। কয়েকটি ধাপ ফলো করার মাধ্যমে আপনি কিন্তু খুব সহজেই ঘরে বসে মাশরুম চাষ করতে পারবেন। চলুন তাহলে এই ধাপগুলো সম্পর্কে জেনে আসা যাক।

ধাপ-১ 

মাশরুম চাষ করার জন্য প্রথমেই আপনি খড়কুটো কেটে নিবেন এক ইঞ্চি মাপে এবং এগুলো জীবাণু মুক্ত করার জন্য ২০ মিনিট সময় ধরে ফুটন্ত গরম পানিতে রেখে দিবেন। 24 ঘন্টা ভিজিয়ে রাখার মাধ্যমে এটা কিন্তু পরিষ্কার করা যায়।খরগুলো ভেজানোর পরে এমন ভাবে জড়িয়ে নিবেন যাতে করে এগুলোর সঙ্গে পানি বেশি করে না থাকে কিন্তু হাত দিলে হাতে যেন কিছু পানি আসে।

ধাপ-২ 

এই ধাপে এসে আপনাকে পলিব্যাগের ভেতরে ২ ইঞ্চি করে খড় বিছিয়ে রেখে তার উপরে ব্যাগের সাইড ঘেসে বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে। আর এই বিজের উপরে দিবেন খড় এবং খড়ের ওপরে তারপর আবার একইভাবে বিজ দিবেন। এভাবে আপনি ৭ থেকে ৮ টি স্তর তৈরি করবেন এবং পলিব্যাগের মুখ ভালো করে বন্ধ করে নিবেন। খেয়াল রাখতে হবে খড়গুলো যখন বিছাবেন তখন কিন্তু প্রতিবার হাত দিয়ে চেপে চেপে এগুলো সুন্দর করে দিতে হবে যাতে করে ঘরের ভেতরে কোন বাতাস না থাকে। 

ধাপ-৩

এ পর্যায়ে এসে আপনাকে ব্যাগগুলোতে ছোট ছোট করে ১০ থেকে ১২ টি ছিদ্র করতে হবে এবং সিদের মুখগুলো ভালো করে বন্ধ করে করে দিবেন যাতে করে বাতাস চলাচল গুলো বজায় থাকতে পারে। এভাবে করা হলে কিন্তু বাইরের ধুলো ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। তারপর এই প্যাকেট গুলোকে 8 থেকে 10 দিনের মত অন্ধকার জায়গাতে রাখবেন।

আরো পড়ুনঃ মাল্টা ফলের উপকারিতা

তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন এ জায়গা গুলোতে বাতাস সারাদিন করতে পারে এবং পোকামাকড় থেকে যেন এগুলো দূরে থাকে। কারণ মাশরুমের জন্য কিন্তু মাঝে অত্যন্ত ভয়ানক এবং এটা ক্ষতি করতে পারে। 

ধাপ-৪

কয়েকদিন পর দেখবেন এই প্যাকেটের বীজগুলোতে জায়গায় জায়গায় সাদা আস্তরণ তৈরি হয়েছে আর একে বলা হয় মাইসেলিয়াম। তারপর কয়েকদিন পর যখন খেয়াল করবেন তখন দেখবেন পুরো ব্যাগ কিন্তু এভাবে মাইসেলিয়ামে ভরপুর। মুখের ছিদ্রে যে তুলো গুলো দিয়েছিলেন এবার আপনি এগুলো সরিয়ে ফেলবেন এবং আরো কয়েকটি ছিদ্র করে দিবেন যাতে করে ব্যাগ কিছুটা আলোর ভেতরে থাকতে পারে। তবে হ্যাঁ অবশ্যই খেয়াল রাখবেন সরাসরি কিন্তু রোদে রাখা যাবে না। 

ধাপ-৫

এ পর্যায়ে এসে আপনাকে প্রয়োজন অনুযায়ী প্যাকেটের উপরে মাঝে মাঝে পানি দিয়ে স্প্রে করতে হবে। তারপর কয়েকদিন পর প্যাকেটে যে ছিদ্রগুলো রয়েছে এগুলো দিয়ে কিন্তু আপনি মাশরুমের পিনহেড গুলো দেখতে পাবেন। এরকম প্রতিটা ব্যাগ থেকে কিন্তু প্রায় তিনবারের মতো মাশরুমের ফলন পাওয়া যায়। ২৫ থেকে ৩০ দিনের ভেতরে কিন্তু এই মাশরুমগুলো খাওয়ার মত হয়ে যায়। আশা করছি বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন। 

মাশরুম খেলে কি হয়

বর্তমান সময়ে খুবই জনপ্রিয় এবং পুষ্টিকর একটি খাবার হচ্ছে মাশরুম। কিন্তু অনেকেই জানে না মাশরুম খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় বা মাশরুম খেলে কি হয়। এজন্য মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। চলুন এবার জেনে আসা যাক  মাশরুম খেলে কি হয় সে বিষয় সম্পর্কে। মাশরুম খাওয়ালে শরীরে অনেকগুলো উপকারিতা নেই।

মাশরুমের ভিতরে আছে অনেকগুলো পুষ্টি উপদান সে কারণে এই পোষ্টটি অবদানগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শরীরের একাধিক রোগ গুলো সমাধান করতে ভূমিকা রাখে। আপনি যদি মাশরুম খান তাহলে এক্ষেত্রে আপনি অনেক উপকারিতা পেয়ে যাবেন। তবে হ্যাঁ খাওয়ার সময় আপনাকে অবশ্যই এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে যে।

আরো পড়ুনঃ দেশি মুরগির ডিমের উপকারিতা 

খাওয়ার পরিমাণ যেন খুব বেশি না হয় তাহলে এক্ষেত্রে শরীরে কিন্তু বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে মাশরুম খাওয়া হলে কিন্তু উপকারীর দিকে রয়েছে অনেক বেশি। চলুন তাহলে মাশরুম খেলে কি উপকার পাবেন বা আশ্রম খেলে কি হয় এ বিষয়টি পয়েন্ট আকারে জেনে আসা যাক। 

  • মাশরুম খাওয়া হলে আপনার শরীরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
  • মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে রয়েছে মাশরুমের ভূমিকা।
  • আপনি যদি মাশরুম খেতে পারেন তাহলে এক্ষেত্রে কিন্তু আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারবে।
  • মাশরুম খাওয়া হলে হজম শক্তি উন্নত করে।
  • আপনারা যারা শরীরে উঠবে এবং টেস্ট নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাদের জন্য কিন্তু মাশরুমের রয়েছে দারুন উপকারিতা।
  • মাশরুম খাওয়ালে শরীরে একাধিক ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ হয়ে থাকে।
  • মাশরুম খাওয়া হলে এখানে থাকা যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এগুলো আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগমুক্ত রাখতে ভূমিকা রাখবে।

মাশরুমের প্রকারভেদ 

মাশরুম কিন্তু অনেক প্রজাতির হয়ে থাকে যে কারণে কোন মাশরুমটি কোন প্রজাতির ভিতরে পড়ে এ বিষয়টি যদি আপনার জানা থাকে তাহলে এক্ষেত্রে কিন্তু আপনি মাশরুম খাবার এবং মাশরুম ব্রিজ তৈরি করার জন্য অনেক উপকারিতা পেয়ে যাবেন। চলুন তাহলে জেনে আসা যাক মাশরুমের কিছু প্রকারভেদ সম্পর্কে। 

  • ওয়েস্টার মাশরুমঃ এই মাশরুমটি খেতে কিন্তু অনেক মিষ্টি হয়ে থাকে এবং স্যুপ করার জন্য এই মাশরুমটি বেশ জনপ্রিয়। 
  • বাটন মাশরুমঃ মাশরুমের যেগুলো প্রকারভেদ আছে তার ভেতর থেকে সব থেকে সহজলভ্য হচ্ছে এই বাটন মাশরুম। 
  • এনোকি মাশরুমঃ মাশরুমের এই পদ্ধতিটি কিন্তু অনেক লম্বা এবং দেখতে সাদা রঙ্গের হয়ে থাকে। এই মাশরুম কি দেহের গঠন অনেকটাই সরু।বিশেষ করে সালাদ হিসেবে কিন্তু এই মাসরুমটি অনেক ব্যবহার হয়ে থাকে। 
  • শিটাকে মাশরুমঃ বিশেষ করে মাশরুমের এই  প্রজাপতিটি অনেক জনপ্রিয় আর জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হচ্ছে এটার স্বাদ খেতে কিন্তু অনেকটা মাংসের মত। 
  • পোর্টবেলা মাশরুমঃ অনেকেই খেয়ে থাকেন গ্রিল হিসেবে। এছাড়াও মাংসের বিকল্প হিসেবেও কিন্তু এই মাশরুমটির ব্যবহার রয়েছে। 

মাশরুম চাষ পদ্ধতি

সঠিকভাবে যদি আপনি জেনে থাকেন মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি  মাশরুম চাষ পদ্ধতি তাহলে কিন্তু এর মাধ্যমে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন। এজন্য আপনারা যারা জানেন না যে মাশরুম কিভাবে চাষ করতে হয় তাদের জন্য কিন্তু আর্টিকেল এই অংশটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কিন্তু অনেক প্রজাতির মাশরুম চাষ করা হচ্ছে।

যেগুলোর ভেতর থেকে আমাদের দেশে চাষের উপযোগী অনেক মাশরুম রয়েছে যা আপনি চাষ করার মাধ্যমে কিন্তু অনেকদিন দিয়ে স্বাবলম্বী  হতে পারবেন। মাশরুম চাষ করার জন্য কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার কিছু উপকরণ দরকার হবে চলুন এগুলো সম্পর্কে আবার বিস্তারিত জেনে আসি। 

ওয়েস্টার মাশরুম চাষের উপকরণঃ মাশরুমের বীজ প্রয়োজন হবে এবং এর সঙ্গে থাকতে হবে পলিথিন ব্যাগ ও খড়। যেসব দোকানগুলোতে মাশরুমের বিজ বিক্রি করে সকল দোকানগুলো থেকে কিন্তু আপনি খুব সহজে পেয়ে যাবেন। 

চাষের স্থানঃ খোলা জায়গায় কিংবা মাটিতে মাশরুম চাষ করা যাবে না। এজন্য যেসব জমি আবাদি এসকল জমিগুলোকে আপনি মাশরুম চাষ করার জন্য বেছে নিবেন না। মাশরুম চাষ করার জন্য যে সকল জায়গাতে রোদ থাকে এ সকল জায়গাগুলো কিন্তু একদমই উপযোগী না। কারণ মাশরুম হচ্ছে একটি ছায়াযুক্ত বা অন্ধকারযুক্ত স্থানের চাষ।

এজন্য মাশরুম চাষ করার জন্য আপনি এ সকল জায়গাগুলো বেছে নিবেন। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে কিন্তু ঘরের ভিতরে বাসের চালা করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘরের ভেতরে আলো ঢুকতে না পারে তাহলে কিন্তু মাশরুম সঠিকভাবে চাষ করতে পারবেন না। 

চাষ পদ্ধতি

প্রথমে আপনাকে এই খড় কেটে ছোট এবং জীবনে মুক্ত করতে হবে। এর জন্য ঘর গুলোকে আপনি কিন্তু আধা থেকে এক ইঞ্চি করে কেটে সেগুলো গরম ফুটন্ত পানিতে ফুটিয়ে নিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে পানি এমনভাবে ঝরতে হবে যেন হাত দিয়ে যখন খড় চাপ দেওয়া হবে তখন পানি যেন বের হয় না আসে এবং হাতেও একটু ভিজে থাকে।

তারপর এগুলোকে একটা পলি বেগের ভেতরে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পর পর খড় বিছিয়ে ভালো করে ছিটিয়ে নিবেন। এবং এভাবে ছিটানোর উপরে আবার খড় দিবেন এবং তারপর আপনারাই ঘরের উপর আবার বিজ দিয়ে এভাবে কয়েকটি স্তরের মাধ্যমে আপনি বীজগুলো দিবেন। তারপর পলিব্যাগের মুখগুলোকে শক্ত করে বেঁধে নিবেন।

তারপর কয়েকদিন অপেক্ষা করা হলে দেখতে পারবেন যে পুরো ব্যাগের ভেতরে মাইসোলিয়ম দেখা যাচ্ছে। এগুলো দেখা গেলে ব্যাগ থেকে তুলস সরিয়ে ফেলবেন এবং আরো কয়েকটি সিদ্ধ করে দিবেন যাতে করে ব্যাকটি একটু আলাদা থাকতে পারে। তবে আলোর পরিমাণ যেন খুব বেশি না হয়ে যায়। এই প্যাকেট এর উপরে বাতাসের আদ্রতা কেমন রয়েছে।

সেটি বোঝার মাধ্যমে আপনি হালকা করে পানি দিয়ে স্প্রে করবেন। মাশরুমের এই প্যাকেট গুলো অবশ্যই আপনি সবসময় ঠান্ডা জায়গায় রাখবেন এবং মাঝে মাঝে পানি দিয়ে স্প্রে করবেন কারণ ঠান্ডা আবহাওয়া থাকলে মাশরুমের ফলন ভালো হয়। এভাবে যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা যায় তাহলে আপনি ২০ থেকে ২৫ দিনের ভেতরে কিন্তু ভালো ফলন পেয়ে যাবেন। আশা করছি বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন। 

মাশরুম পাউডার খাওয়ার নিয়ম

আপনারা অনেকেই আমাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছিলেন যে মাশরুম পাউডার কিভাবে খেতে হয়। এজন্য আপনারা যারা এখনো জানেন না যে মাশরুম পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি তাদের জন্য থাকছে আর্টিকেল এই অংশটি। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে সরাসরি জেনে আসা যাক মাশরুম পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। 
  • মূলত সঠিকভাবে যদি মাশরুম পাউডার শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা যায় তাহলে এক্ষেত্রে কিন্তু এটা অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। যে কারণে মাশরুম পাউডার খাওয়ার পূর্বে চেক করে নিবেন যে এগুলো ভালো করে শুকনো আছে কিনা।
  • কারণ সঠিক নিয়মে যদি মাসুম পাউডার খাওয়া হয় তাহলে কিন্তু শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে। ৫০০ মিলিম পানির ভেতরে বাড়িতে যে সকল চামচ ব্যবহার করেন এই ব্যবহারিত চামচগুলোর ১ চামচ মাশরুম পাউডার দুই থেকে চার মিনিট পর্যন্ত ভালো করে গুলিয়ে নিবেন।
  • তারপর এই ৫ রুম পানি গুলো কিন্তু আপনি খেতে পারবেন এবং এটাই কিন্তু খাবার সঠিক নিয়ম। তবে হ্যাঁ মাশরুম কিন্তু আপনি আরো একাধিক ভাবে খেতে পারবেন। অনেকেই আবার তরকারির সঙ্গে মাশরুম পাউডার গুড়া খেয়ে থাকেন। 

মাশরুম এর উপকারিতা

ইতিমধ্যে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনেছি মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি। এখন আমরা জানবো মাশরুমের উপকারিতা সম্পর্কে। মাশরুম খাওয়া হলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে যে কারণে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে কি কি উপকারিতা আছে এই মাশরুমের ভেতরে। চলুন তাহলে এই উপকারের দিকগুলো এবার জেনে আসা যাক। 
  • মাশরুম খাওয়া হলে এটা হাড় এবং দাঁত গঠন করতে ভূমিকা রাখে। কারণ মাশরুমে আছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি মাশরুম আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ গুলো প্রতিরোধ করতে পারে। 
  • আপনারা যারা উচ্চ রক্তচাপের রোগী আছেন তারা কিন্তু মাশরুম খেলে অনেক উপকারিতা পেয়ে যাবেন। কারণ মাশরুম উচ্চ রক্তচাপ কম করতে সাহায্য করে। মাশরুমে থাকা পটাশিয়াম গুলো শরীর থেকে খারাপ সোডিয়াম গুলো কম করতে ভুল করা রাখে। 
  • ক্যান্সারের ঝুঁকি কম করতে কিন্তু মাশরুমের অনেক উপকারিতা আছে। এজন্য মাশরুম খাওয়া হলে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কম হয়। 
  • মাশরুমের অন্যতম একটি উপকারিতা হচ্ছে এটা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা রাখে। কারণ মাশরুম খাওয়া হলে এটা আমাদের শরীরে থাকা রক্তের সরকারের মাত্রা এবং এর জুলুমের মাত্রাকে ঠিক রাখার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • মাশরুম খাওয়া হলে এটা কিন্তু আমাদের ত্বক নরম ও কোমল রাখতে পারে। এজন্য আপনার ত্বক নরম ও কোমল রাখার জন্য মাশরুম খেতে পারেন। 
  • শরীরে থাকা চর্ম এবং চুলকানির জনিত রোগ গুলো দূর করতে পারে মাশরুম। এজন্য আপনার চর্ম জড়িত সমস্যা হয়ে থাকলে এক্ষেত্রে মাশরুম খাওয়া হলে দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি এগুলো থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। 
  • মাশরুম খাওয়া হলে এটা কিন্তু আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি উন্নত করে। কারণ মাশরুমে আছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ। 
  • মাশরুম খাওয়া হলে এটা শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল কম করার পাশাপাশি ভালো কোলেস্টরেল যুক্ত করে। এজন্য আপনারা মাশরুম খেতে পারেন। 
  • মাশরুম খাওয়ার অন্যতম একটি উপকারী দিক হচ্ছে এটা কিন্তু হৃদরোগ নিরবে ভূমিকা রাখে। মাশরুমে আছে ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি সহ আরো অনেক উপকারী উপাদান যে কারণে এটা আমাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা কম করে। 
  • আপনারা যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তাদের জন্য মাশরুম খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাশরুম খাওয়া হলে এর ভেতরে থাকা অবদানগুলো আমাদের শরীরের ভেতরে চিনির পরিমাণ কম করে এবং ওজন কম করতে ভূমিকা  রাখে। 

মাশরুমের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

আপনারা অনেকেই আমাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছিলেন যে মাশরুমের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কি। এজন্য আলোচনার আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নেব মাশরুমের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে। মূলত মাশরুমের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কিন্তু অনেক। বর্তমানে দেখা যায় যে অনেক অঞ্চলে মাশরুম চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হয়ে উঠছে।

মাশরুম যেহেতু অনেক গুণসম্পন্ন সে কারণে এর দামও অনেক বেশি। আপনি যদি সঠিকভাবে মাশরুম চাষ করতে পারেন তাহলে কিন্তু এটা খুব একটা জটিল নয়। এজন্য মাশরুম চাষ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। বর্তমানে দেশে কিন্তু প্রায় ৪০ থেকে ৪১ হাজার টন মাশরুম উৎপন্ন হয়ে থাকে।

যা দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত করে ৮০০ কোটি টাকা। অনেক তরুণ এবং তরুণীরা মাশরুম চাষ করার মাধ্যমে তারা নিজেদেরকে অনেক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশে বিক্রি করার পাশাপাশি বর্তমানে কিন্তু মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করার মাধ্যমে অনেক পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে। 

মাশরুম খাওয়ার নিয়ম

আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনেছি মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি। এগুলোর পাশাপাশি কিন্তু মাশরুম খাবার নিয়ম আপনাকে জানতে হবে। কারণ মাশরুম যদি সঠিক নিয়মে না খেয়ে থাকেন তাহলে এক্ষেত্রে কিন্তু উপকারের চেয়ে মাশরুমের ক্ষতিকর দিক বেশি হতে পারে। এজন্য সঠিক নিয়মে মাশরুম খাওয়ার অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
multiplebd-মাশরুম-বীজ-তৈরির-পদ্ধতি -মাশরুম-খাওয়ার-নিয়ম
মাশরুম অনেক রকম ভাবে খাওয়া যায় কেউ খায় সুখ কিংবা রান্না করে এছাড়াও কেউ আবার সালাত করেও খেতে পছন্দ করে। অনেক মানুষের কাছে আবার মাশরুম ভেজে খাওয়া অনেক পছন্দের একটি খাবার। যেভাবে খাওয়া হোক না কেন মাশরুম খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এটি ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

মাশরুম খাওয়ার পূর্বে এটা ভালো করে সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত না হলে অনেক সময় দেখা যায় এখান থেকে এলার্জিজনিত সমস্যা তৈরি হয়। মাশরুম খাওয়ার জন্য ভারী মসলা ব্যবহার করা ঠিক হবে কারণ অতিরিক্ত মসলা ব্যবহার করা হলে মাশরুমের পুষ্টিগুণ গুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। 

মাশরুমের ক্ষতিকর দিক

মাশরুমের উপকারের দিকের পাশাপাশি কিন্তু আছে কিছু ক্ষতিকর দিক। মাশরুমের ক্ষতিকর দিক যে কারণে আমাদেরকে জানতে হবে। চলুন তাহলে এবার সরাসরি ভাবে জেনে নিন মাশরুম খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে বা এর অপকারী দিকগুলো। 

  • মাশরুম খাওয়া ভালো তবে ওদের একটু পরিমাণ যদি খাওয়া হয় তাহলে এক্ষেত্রে পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
  • এমন অনেক মাশরুম রয়েছে যেগুলো কিন্তু অনেক বিষাক্ত এবং ক্ষতিকর যে মাশরুমগুলো খাওয়া হলে অনেক সময় বিভিন্ন দুর্ঘটনা তৈরি হতে পারে।
  • মাশরুম যখন অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া হয় তখন এক্ষেত্রে দেখা যায় পেটে ব্যথা কিংবা পেটে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
  • বিশেষ করে যে মাশরুম গুলো বুনু প্রজাতির হয়ে থাকে এই বুনো মাস্টারমগুলো অনেক বিষাক্ত হয় যে কারণে এ সকল মাস্টারমশ খেলেও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
  • অনেক সময় দেখা যায় কিছু কিছু মাশরুমে থাকে ক্ষতিকর উপাদান যেগুলো অনেক ভারী ধাতব ও ক্ষতিকর রাসায়নিকে ভরপুর যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কাম্য নাই।
  • এছাড়াও মাশরুম যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণ খেয়ে ফেলেন তাহলে এক্ষেত্রে কিন্তু শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
  • অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে মাশরুম খাওয়া হলে ত্বকে ফলা ভাব কিংবা শরীরে চুলকানি সৃষ্টি হচ্ছে। আপনার শরীরে এমন হলে মাশরুম করা থেকে বিরত থাকুন।

মাশরুম পাউডার খাওয়ার উপকারিতা

শুধু মাশরুম নয় বরং মাশরুমের পাটার থেকেও কিন্তু অনেক উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। এজন্য মাশরুম পাউডার খাওয়া হলে কি কি উপকারিতা মিলবে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আমরা এখন আলোচনা করব। 

  • মাশরুম পাউডার খাওয়া হলে এটার কিন্তু শরীরে একাধিক সমস্যা গুলো সমাধান করতে ভূমিকা রাখবে।
  • নিয়মিত যদি মাসুম পাউডার খাওয়া হয় তাহলে শরীরে হেপাটাইটিস বি এবং জন্ডিসহ একাধিক সমস্যাগুলো সমাধান হতে পারে।
  • মাশরুম পাউডার খাওয়া হলে এটা কিডনি এবং এলার্জির জড়িত সমস্যা গুলো দূর করতে ভূমিকা রাখবে কারণ এতে রয়েছে নিউক্লিক অ্যাসিড।
  • মাশরুম পাউডার যদি গ্রহণ করা হয় তাহলে এক্ষেত্রে এটা আমাদের শরীরে কমলতা বৃদ্ধি করবে এবং স্নায়ুতন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করবে।
  • প্রতিদিন যদি নিয়ম করে কিছু পরিমাণে মাশরুমের গোড়া খাওয়া হয় তাহলে এটা কিন্তু আমাদের বিভিন্ন ধরনের ডিপ্রেশন কমাতে ভূমিকা রাখবে।
  • শক্তি ধরে রাখতে কিন্তু মাশরুম পাউডারের গুরুত্ব অনেক। মাশরুম পাউডার আছে খনিজ এবং ভিটামিন যে আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।

লেখক এর মতামত 

আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে নিশ্চয়ই আপনি বিস্তারিতভাবে জেনে গেছেন মাশরুম বীজ তৈরির পদ্ধতি। আশা করছি বিষয়গুলো আপনি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তবুও যদি কথা বুঝতে আপনার অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আপনি চাইলে আমাদেরকে কমেন্ট করেও জানাতে পারেন। মাশরুম চাষ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যাতে করে এখানে খুব বেশি পরিমাণে আলো বাতাস না ঢুকতে পারে।

প্রিয় পাঠক, আজকে আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন বা আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। আর এ ধরনের তথ্য সেবা গুলো যদি আপনি পেতে চান তাহলে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের এই www.multiplebd.com ওয়েবসাইটে। আপনি চাইলে বুকমার্ক করে রাখার মাধ্যমে আর্টিকেলটি সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url