আসল এলোভেরা জেল চেনার উপায় ও ব্যবহারের নিয়ম

• ত্বকের গঠন উন্নত করেঃ অ্যালোভেরা জেলের রয়েছে এনজাইম যেটা আমাদের ত্বকের গঠনকে করার পাশাপাশি উন্নত করতে ভূমিকা রাখে। এজন্য আপনি যদি রাতে এলোভেরা ব্যবহার করেন তাহলে কিন্তু এটা আপনার ত্বকের মৃত কোষ দূর করার পাশাপাশি নতুন কোষগুলোকে সতেজ রাখবে। তাই ত্বকের গঠন উন্নত করতে রাতে এলোভেরা ব্যবহার করতে পারেন।
• ত্বককে মশ্চারাইজ রাখেঃ অ্যালোভেরা জেলে আছে অনেক পরান প্রাণী যে কারণে এটা আপনার ত্বক হাইড্রেট রাখার পাশাপাশিষ ময়েশ্চারাইজ করতেও ভূমিকা রাখবে। তাতে যদি এলোভেরা জেল ব্যবহার করা হয় তাহলে আপনার ত্বক নরম ও কোমল থাকার পাশাপাশি কিন্তু গুড লুকিং দেখাবে।
• ত্বক প্রশমিত করেঃ বর্তমান সময়ে এলোভেরা নাইট ক্রিম পাওয়া যাচ্ছে যেগুলো রাতে ব্যবহার করা হয় তাহলে ত্বকের প্রশমিত করতে পারে। এজন্য রাতে যদি এলোভেরা জেল ব্যবহার করা হয় তাহলে তোকে জ্বালাপোড়া ভাব কম হবে এবং ত্বক প্রশমিত। করতে ভূমিকা রাখবে।
• বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেঃ রাতে এলোভেরা যদি ব্যবহার করা হয় তাহলে কিন্তু এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদেরকে ফিরে রেডিক্যাল এর হাত থেকে রক্ষা করবে। এজন্য রাতে যদি এটা ব্যবহার করা হয় তাহলে কিন্তু অকাল বাধ্যক্য রোধ করতে ভূমিকা রাখবে অ্যালোভেরা জেল।
• প্রদাহ কমায়ঃ অ্যালোভেরা জেলের রয়েছে ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য যে কারণে রাতে এলোভেরা জেল ব্যবহার করা হলে এটা আমাদের ত্বকের প্রদেহ কম করতে ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয় বরং এটা আমাদের তাকে কম করতে অনেক উপকারী। শুধু ত্বক নয় আরো অনেক সমস্যা দূর করতে রয়েছে এর দারুণ এক ভূমিকা।

• ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখেঃ বিশেষ করে শীতের সময় যখন আমাদের ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে থাকে তখন কিন্তু এই শুষ্ক ত্বক থেকে অনেকটা মুক্তি দিতে পারে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা হলে। কারণ এলোভেরা জেল আমাদের ত্বককে গভীরভাবে মশ্চারাইজ করার পাশাপাশি ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে ভূমিকা রাখে। এ কারণে ত্বকে ব্যবহার করা হলে আমাদের ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে।
• ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ নিয়মিতভাবে যদি আপনার ত্বকে এলোভেরা জেল ব্যবহার করেন তাহলে কিন্তু খুব সহজেই আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেক বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ত্বক থেকে মৃত কোষ গুলো অপসরন হবে এবং নতুন কোষের সৃষ্টি হবে। এজন্য আপনি যদি তকর উজ্জ্বল করতে চান তাহলে কিন্তু মুখে এলোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন।
• ব্রণের দাগ দূর করেঃ গবেষণায় দেখা যায় প্রায় বেশিরভাগ ছেলের এবং মেয়েদের একটা নির্দিষ্ট বয়সে কিন্তু ব্রণ হয়ে থাকে। সমস্যাও কিন্তু দূর করতে রয়েছে অ্যালোভেরা জেলের দারুন এক ভূমিকা। মুখের যত্নে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা হলে এটা মুখ থেকে ব্রণের সমস্যার দূর করবে এবং বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতে ভূমিকা রাখবে।
• বয়সের ছাপ এড়াতেঃ বয়সের ছাপ যদি এড়িয়ে চলতে চান তাহলে আপনি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা জেলে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ ভিটামিন চেয়েছে যে কারণে এটা মৃত কোষগুলোকে দূর করার পাশাপাশি কোষ সতেজ রাখে। এছাড়াও ত্বক টানটান রাখার মাধ্যমে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
• রোদে পোড়া দাগ দূর করেঃ বিভিন্ন কারণে আমরা যখন বাইরে বের হই তখন কিন্তু আমাদের ত্বকের একটা অংশ রোদে পুড়ে। এক সময় দেখা যায় তাকে এই বিশেষ অংশগুলো এক ধরনের কালো হয়ে গেছে যাকে বলা হয় রোদে পোড়া দাগ। অ্যালোভেরা জেল যদি মুখে ব্যবহার করা হয় তাহলে মুখ থেকে এই রোদে পোড়ার দাগ দূর হয়। প্রাকৃতিকভাবে ত্বক শীতল এবং নরম থাকে যে কারণে আপনারা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন মুখের যত্নে।

• অ্যালোভেরা ও হলুদের পেস্ট-
• ১টেবিল চামচ এলোভেরা জেল এর সঙ্গে যোগ করুন ১/২ চা চামচ হলুদের গোড়া এবং এগুলো সুন্দর করে একটা পেস্ট তৈরি করে হাত গোলা ও মুখে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
• এলোভেরাতে যে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণ রয়েছে এগুলো খুব সহজে আপনার ত্বককে ফর্সা করবে এবং হলুদের যে এন্টি সেপটিক বৈশিষ্ট্য আছে সেটা ত্বকের দাগ দূর করতে ভূমিকা রাখবে। সপ্তাহে ২-৩ বার এভাবে আপনি পেস্ট ব্যবহার করলে অনেক উপকারিতা পেয়ে যাবেন।
• এলোভেরা ও মধুর মাস্ক-
• ১ চা চামচ কাঁচা মধুর সঙ্গে ২ টেবিল চামচ এলোভেরা যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করুন। এবার এটা আপনার হাতে গলায় ও মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে 20 মিনিট। তারপরে কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো করে এগুলো ধুয়ে ফেলুন।
• অ্যালোভেরাতে যে মোরশচারাইজিং গুন রয়েছে এবং মধুর যে অ্যান্টি বাটটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকে এগুলো খুব সহজে আপনার ত্বক মসৃণ করবে এবং ত্বক ফর্সা করতে ভূমিকা রাখবে। প্রতি সপ্তাহে আপনি ৩ থেকে ৪ বার এই মাস্কটি ব্যবহার করবেন।
• অ্যালোভেরা ও লেবুর রসের মাস্ক-
• সম পরিমাণ এলোভেরা জেল এবং লেবুর রস মিশিয়ে ভালো করে একটা পেস্ট তৈরি করুন। তারপরে মিশ্রণটি আপনার মুখে হাতে এবং গলায় লাগিয়ে রাখবেন ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় পর্যন্ত। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এলোভেরা এবং লেবুর যে মশ্চারাইজিং এবং ভিটামিন সি গুনাগুন রয়েছে এগুলো খুব সহজেই আপনার ত্বক ফর্সা করবে। সাফল্য পেতে ২-৩ ব্যবহার করুন এই মাস্কটি।
• অ্যালোভেরা ও আলুর রসের মিশ্রণ-
• আলোর রস এবং অ্যালোভেরা জেল সমপরিমাণ মিশিয়ে নিন তারপর আপনার ত্বকে এগুলো ব্যবহার করুন। এলোভেরা মশ্চারাইজিং হিসেবে কাজ করবে এবং আলোর প্রাকৃতিক ব্লিচিং বৈশিষ্ট্য আপনার ত্বককে ফর্সা করার পাশাপাশি অনেক বেশি উজ্জ্বল করবে।
• অ্যালোভেরা ও দুধের প্যাক-
• ২ টেবিল চামচ এলোভেরা জেল এর সঙ্গে মিশিয়ে নিন ১ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ। এই প্যাকটি আপনার মুখে এবং গলায় লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দুধে থাকে লেক্টিক অ্যাসিড আপনার ত্বককে ফর্সা ও মসৃণ করবে এবং অ্যালোভেরার পুষ্টি এনে দিবে সর্বোচ্চ সাফল্য।

অ্যালোভেরা জেল চুলে ব্যবহারের নিয়ম

ত্বকের যত্নের পাশাপাশি আপনারা কিন্তু চুলে এলোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারবেন এতে কিন্তু অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু অনেকেই জানে না চুলে কিভাবে এলোভেরা জেল ব্যবহার করতে হয়। আসল এলোভেরা জেল চেনার উপায় সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনি জেনেছেন। চলুন এবার জেনে আসা যাক চুলের ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে।

• আপনারা কিন্তু মধুর সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল এবং সমপরিমাণ মধুর নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে আপনার হাতের তালুতে এই প্যাকটি নিয়ে চুলে মাসাজ করুন। তারপর ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে।
• অ্যালোভেরা জেল মাথাতে ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই ভালো করে শ্যাম্পু করে নেন যাতে আপনার মাথা পরিষ্কার থাকে।
• আপনার মাথার তালুতে এলোভেরা জেল এর সঙ্গে কিছু পরিমাণ নারকেল তেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে সেটা ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট মাথায় রেখে তারপর ভালো করে মাথা ধুয়ে ফেলুন

এলোভেরা জেল দিয়ে নাইট ক্রিম

আপনি যদি ভেবে থাকেন এলোভেরা  দিয়ে নাইট ক্রিম তৈরি করে সেটাও আপনার ত্বকের জন্য ব্যবহার করবেন তাহলে খুব সহজেই কিন্তু নিচের টিপস গুলো অনুসরণ করে নাইট ক্রিম তৈরি করে নিতে পারবেন খুব সহজেই। চরণে বিষয় সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনে আসি। 

এলোভেরা জেল দিয়ে যদি নাইট ক্রিম তৈরি করতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে একটা গাছ থেকে সদ্য অ্যালোভেরা পাতা সংগ্রহ করে নিতে হবে। এবারে পাতাটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। তারপর এখান থেকে আপনি ১০ চামচ অ্যালোভেরার জেল একটা বাটিতে রেখে তার সঙ্গে যুক্ত করুন ৫ চা চামচ খাঁটি মধু এবং ২ চা চামচ দুধ ।

এবার এগুলোকে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ভালো করে মেশানো হয়ে গেলে গুণগত মান ঠিক রাখার জন্য আপনি ফ্রিজে নরমাল টেম্পারেচারে রাখবেন। এভাবে যদি সঠিক উপায় তৈরি করতে পারেন তাহলে কিন্তু এক মাস পর্যন্ত এটা ব্যবহার করা যাবে। বেশ এভাবেই আপনি খুব সহজে এলোভেরা জেল দিয়ে নাইট ক্রিম তৈরি করতে পারবেন।

নিয়মিতভাবে সকালে কিংবা রাতে ঘুমানোর কিছু পরিমাণ এলোভেরা যে লাইট ক্রিম হিসেবে আপনি ব্যবহার করতে পারেন এতে অনেক উপকারিতা পেয়ে যাবেন। আশা করছি বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন। 

পতঞ্জলি এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম

ইতিমধ্যে আপনারা জেনেছেন আসল এলোভেরা জেল চেনার উপায়। অনেকে আমাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছেন কিভাবে পতঞ্জলি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করবেন। তাহলে বিস্তারিতভাবে জেনে আসা যাক পতঞ্জলি এলোভেরা জেল ব্যবহারের উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে। রাতের শোয়ার আগে নাইট ক্রিম এর সঙ্গে কিংবা।

আরো পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায়-A to Z 

শুধুমাত্র পতঞ্জলি এলোভেরা জেল যদি মুখে মেঘে ঘুমিয়ে পড়ুন তাহলে কিন্তু আপনার মুখের বলি রেখা দূর হবে খুব সহজেই। এছাড়া আপনি যদি চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে চান তাহলে কিন্তু কিছু পরিমাণ তোরা পাতলা করে গোল করে ভিজিয়ে এলোভেরা জেল লাগিয়ে আপনার চোখ বন্ধ করে চোখের নিচে এবং উপরে ভালো করে লাগিয়ে রাখুন।

এভাবে 15 মিনিটের মত লাগিয়ে রাখবেন দেখবেন চোখের নিচ থেকে কালো দাগ দূর হয়ে গেছে। রাতে কিন্তু শোওয়ার আগেও আপনি পতঞ্জলি জেল মেখে নিতে পারেন আপনার মুখে। মুখে দেওয়ার ১৫ মিনিট পর ভালো করে টিস্যু পেপার  দিয়ে মুখ মুছে নিতে হবে। আশা করছি বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন কিভাবে আপনি পতঞ্জলি এলোভেরা জেল ব্যবহার করবেন। 

পতঞ্জলি এলোভেরা জেল ব্যবহারের উপকারিতা

আপনি যদি না জেনে থাকেন পতঞ্জলি এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যাবে তাহলে চলুন পতঞ্জলি এলোভেরা জেল ব্যবহারের কি কি উপকারিতা রয়েছে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসা যাক। 

শুধু এলোভেরা মাখলে কি হয়

আপনারা যারা জানতে চেয়েছেন শুধু অ্যালোভেরা মাখলে কি হয় আর্টিকেলের এই অংশটি তাদের জন্যই। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে বিস্তারিত জেনে আসা যাক।

শেষ কথা