চিনি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-চিনি খেলে কি মোটা হয়
ব্ল্যাক কফি খাওয়ার ১০টি উপকারিতাচিনি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের
আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আজকের পুরো আর্টিকেল জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে চিনি
খাওয়ার ক্ষতিকর এবং উপকারী দিক সম্পর্কে। আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি
আরো জানতে পারবেন লাল চিনির উপকারিতা সম্পর্কেও। তাই অবশ্যই আপনার অজানা এই তথ্যগুলো
জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
চিনি আমরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি। কিন্তু অনেকেই জানে না চিনি খেলে কি হবে। তাই বিস্তারিত সব তথ্য জানতে এবং চিনি খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা-চিনি খেলে কি মোটা হয় বিষয়গুলো জানতে চলুন আমরা আর্টিকেলটি পড়ে আসি।
ভূমিকা
চিনি আমরা সকলেই খেয়ে থাকি। সকল ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরিতে চিনির
প্রয়োজন রয়েছে। অনেকেই রয়েছেন যারা চিনি খেয়ে থাকলেও জানেনা চিনি খাওয়ার
উপকারে এবং ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। এজন্য আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি
বিস্তারিতভাবে জেনে যাবেন চিনি খাওয়ার এসকল দিক সম্পর্কে।
আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন প্রতিদিন কতটুকু চিনি খাওয়া
উচিত সে বিষয়ে সম্পর্কেও। তাই অবশ্যই আপনার অজানা এই তথ্যগুলো জানতে
আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
চিনি খেলে কি ওজন বাড়ে?
যেকোনো ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার তরীতে চিনি ব্যবহার হয়। চিনি খেলে কি ওজন
বাড়ে কিনা এ বিষয়টি সম্পর্কে যদি না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলের শুরুতেই
জেনে নিন চিনি খেলে ওজন বাড়ে কিনা। আর আপনি যদি চিনি খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত
পড়ুন।
- চিনি খাওয়ার পরিমাণ যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালরি জমতে পারে। আর যে কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন ও বৃদ্ধি পাবে।
- আমরা যেকোনো ধরনের খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে এক ধরনের শক্তি পায় যাকে বলা হয় ক্যালোরি । শরীরে যদি প্রয়োজন থেকে বেশি ক্যালরি তৈরি হয় তাহলে অতিরিক্ত ক্যালরির কারণে শরীরের ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। যে কারণে চিনি খাওয়া হলো অতিরিক্ত ক্যালরি থেকে ওজন বৃদ্ধি হয়। শুধু তাই নয় বরং অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি খাওয়া থেকে শরীরের ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি হতে পারে টাইপ টু ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো সমস্যাও।
- অবশ্যই আপনার শরীরের ওজনের কথা মাথায় রেখে বেশি পরিমাণ চিনি না খেয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় খান। এতে করে আপনার স্বাস্থ্যের উপকার হবে এবং পৌঁছানো থাকবে নিয়ন্ত্রণে।
চিনি খেলে কি ঠান্ডা লাগে?
অনেকের মাথায় ধারণা যে চিনি খেলে শরীরে ঠান্ডা লাগে অনেকে আবার বলছেন চিনি
খাওয়া হলে ঠান্ডা লাগে না। এজন্য যুক্তি নির্ভর সঠিক প্রমাণ নিয়ে আপনাদের
সামনে উপস্থাপন করব চিনও খেলে ঠান্ডা লাগে কিনা সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিত। চলুন
তাহলে বিস্তারিত জেনে আসে যাক। প্রথমেই বলতে হয় যে বৈজ্ঞানিকভাবে চিনি খাওয়ার
সঙ্গে ঠান্ডা লাগার সরাসরি কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
সাধারণত ঠান্ডা লাগার কারণ হচ্ছে একটি ভাইরাস "যেটা রাইনোভাইরাস " নামে পরিচিত।
এটা সাধারণত সংক্রমণ করে শ্বাস জানতে। এখন আসি আসল কথায়। সাধারণত চিনি খাওয়া
হলে ঠান্ডা লাগে না কিন্তু চিনি যদি আপনি অপরোক্ক উপায়ে খান তাহলে এক্ষেত্রে
আপনার ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি বৃদ্ধি হতে পারে।
আপনি যখন অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি খাবেন তখন এটা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতাকে দুর্বল করে তুলতে পারে। আর যে কারণে শরীরের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার
বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা খুব কম হয় যে কারণে ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি বৃদ্ধি
হয়। তবে এ বিষয়টা শুধু সরাসরি অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি খাওয়ার ক্ষেত্রে
প্রযোজ্য।
আপনি যদি বেশি পরিমাণ চিনি না খেয়ে পরিমান মত খান তাহলে এক্ষেত্রে আপনার
ঠাণ্ডা লাগার কোন ঝুঁকি নেই। আমি আশা করছি এ বিষয়টা আপনি খুব ভালোভাবে বুঝতে
পেরেছেন।
চিনি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আজকের আর্টিকেলে আমাদের আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল চিনি খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা। চিনি এমন একটা উপাদান যেটা খাবারের ভিতরে মিশালে স্বাদ বৃদ্ধি
পায়। তবে হ্যাঁ এটাও মনে রাখতে হবে যে অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি খাওয়া হলে এটা
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে।
- চিনি খেলে মিলবে যে উপকার।
- দ্রুত শক্তি প্রদান করে
- ত্বকের টোন ঠিক রাখে
- বিষন্নতা দূর করে
- খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে
- এনার্জি বৃদ্ধিতে
দ্রুত শক্তি প্রদান করেঃ চিনি খাওয়া হলে এটা শরীরে গ্লুকোজ হিসেবে
শোষিত হয়ে থাকে। আর যেটা আমাদের শরীরের কোষগুলোর ভেতরে শক্তি সরবরাহ করে খুব
দ্রুত সময়ে। বিশেষ করে যখন আমরা ব্যায়াম করি বা মানসিক চাপ অনুভব করি তখন এটা
অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ত্বকের টোন ঠিক রাখেঃ চিনিতে আছে এক ধরনের গ্লাইকোলিড এসিড। যেটা
সাহায্য করে থাকে আমাদের শরীরের ত্বকের টোন ঠিক রাখতে। এজন্য আপনি যদি পরিমাণ
মতো চিনি খান তাহলে এটা আপনার ত্বকের টোন ঠিক রাখবে।
বিষন্নতা দূর করেঃ চিনি খাওয়া হলে এটা আপনার বিষন্নতা ভাব দূর করবে।
তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি খাওয়ানো হয়। যদি আপনি বেশি
মাপে চিনি খেয়ে ফেলেন তাহলে এটা আপনার শরীরে অনেক ক্ষতি করতে পারে।
খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করেঃ চিনি মিষ্টি জাতীয় হওয়ার কারণে এটা খাবারকে
আরো অনেক সুস্বাদু এবং মিষ্টি করে তুলে। যেটা আমাদের খাদ্য গ্রহণকে করে তুলতে
পারো অনেক আনন্দময়।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে পারেঃ কিছু গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে যে
চিনি খাওয়া হলে এটা মস্তিষ্কের কার্যকরিতা এবং মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি সহ
মনোযোগ উন্নত করতে পারে।
এনার্জি বৃদ্ধিতেঃ চিনি খাওয়া হলে এটা শরীরের ভিতরে এনার্জি বৃদ্ধি করে
তুলে। যে কারণে অনেকেই জিনিস শরবত বানিয়ে খেয়ে থাকে।
আমি আশা করছি আপনি বিস্তারিতভাবে জেনে গেছেন চিনি খাওয়ার উপকারি দিক সম্পর্কে।
কিন্তু তবুও উপকারী এই চিনির আছে কিছু ক্ষতিকর দিক। এজন্য আপনি যদি চিনে খেতে
পছন্দ করেন বা চিনি খেয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে জানতে হবে এই ক্ষতিকর দিকগুলো
সম্পর্কেও। এ বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের দিকে পড়ুন।
চিনি খাওয়ার অপকারিতা
বলছিলাম চিনি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি
চিনি খাওয়া হলে কি কি উপকারি দিক আছে সে বিষয়গুলো। এখন আমরা জেনে নিব চিনি
খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো। চলুন তাহলে বিস্তারিতভাবে জেনে আসা যাক।
- লিভারের ক্ষতিঃ আপনি যদি প্রতিদিন চিনি খেয়ে থাকেন আর সেটা যদি অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া হয় তাহলে এটা আপনার লিভারের চারপাশে তৈরি করতে পারে অতিরিক্ত চর্বির স্তর। যে কারণে আপনার লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যাবে।
- হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়েঃ বিশেষজ্ঞরা বলছেন বেশি মাত্রায় যদি অতিরিক পরিমাণে চিনি খাওয়া হয় তাহলে এটার রক্তের ভেতরে প্রবাহ পরিবর্তিত করে। আর যে কারণে হার্ট ফেল এমনকি হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা বা আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
- রক্ত চলাচলে বাধাঃ চিনি খাওয়া হলে এটা শরীরের ভেতরে রক্ত চলাচল করার জন্য যে ধমনী আছে সেই ধমনি দেয়ালের পুরুত্ব কে বৃদ্ধি করে তুলতে পারে। আর যে কারনে স্বাভাবিকভাবে রক্ত চলাচল করতে পারে না এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।
- ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়ঃ যারা ডায়াবেটিস রোগী আছেন তাদের ক্ষেত্রে চিনি খাওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চিনি খাওয়া হলে সাধারণত এটা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কে বৃদ্ধি করে।
- ওজন বৃদ্ধি করেঃ চিনি খাওয়া হলে এটা খুব সহজেই শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে তুলবে। কারণ চিনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি। এজন্য আপনি যদি ডায়েটে থাকেন বা ওজন কম করতে চান তাহলে অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি খাওয়া কি বিরত থাকবেন।
- শরীরে ফ্যাট জমতে শুরু করেঃ চিনি খাওয়া হলে এটা শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন -তলপেট, পায়ের পেশী,বুক হাত ইত্যাদি বিভিন্ন অংশে ফ্যাট জমাতে পারে। এজন্য শরীরে যদি অতিরিক্ত পরিমাণ ফ্যাট জমে তাহলে রোগ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
- স্মৃতিশক্তি কমে দেয়ঃ আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে বেশি করে চিনি খেয়ে ফেলেন তাহলে এটা আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা গুলোকে কম করে দিবে। শরীরে আলঝেইমারসের এর মত রোগ তৈরি করতে পারে চিনি।
প্রতিদিন কতটুকু চিনি খাওয়া উচিত
অনেকেই আমাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছেন প্রতিদিন কতটুকু চিনি খাওয়া
উচিত। আর্টিকেলটি পড়ে নিশ্চয়ই আপনি জেনে গেছেন চিনি খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা।চলুন তাহলে আজকের আর্টিকেলের এ পড়বে এসে যেনে আসা যাক প্রতিদিন
কতটুকু চিনি খাওয়া উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে একজন মানুষের ক্ষেত্রে ৫০ গ্রামের বেশি
চিনি খাওয়া একদমই ঠিক না। তাহলে সরলে মারাত্মক প্রমান ক্ষতি করে তুলতে পারে।
আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরে অনেক ধরনের রোগ
বাসা বাঁধতে পারে। যেমন- দাঁতের ক্ষয়, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি সব
সমস্যা।
বিশ্ব সংস্থা বলছেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মানুষের ক্ষেত্রে প্রতিদিন চিনি
খাওয়ার পরিমাণ হল ৩৭.৫ গ্রাম এবং একটা মহিলা মানুষের ক্ষেত্রে দৈনিক ২৫
গ্রাম চিনি খাওয়া যাবে। কেউ যদি এর থেকে বেশি মাত্রায় চিনি খেয়ে ফেলে
তাহলে শরীরে তিনশোদের মাত্র বৃদ্ধি করতে পারে। আশা করছি বিষয়গুলো আপনি বুঝতে
পেরেছেন।
চিনি খেলে কি মোটা হয়?
আপনি কি জানতে চান চিনি খেলে কি মোটা হয় ? তাহলে চলো আর্টিকেলের এই পড়বে এসে
আমরা জেনে আসি আপনার অজানা এই প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে। এই পর্বটি পড়লে আপনি
বিস্তারিত ভাবে জেনে যাবেন চিনি খেলে কি মোটা হয় কিনা। চলুন তাহলে শুরু করা
যাক। প্রথমে বলতে হয় চিনি খাওয়া হলে এটা সরাসরি ভাবে আপনার শরীর মোটা তৈরির
না করলেও এর প্রভাবে আপনার শরীরের ওজনের ঝুঁকি বৃদ্ধি হতে পারে।
কারণ
চিনিতে উপস্থিত আছে অনেক পরিমাণ ক্যালরি। আর আপনি যদি শরীরে প্রয়োজনে থেকে
বেশি মাত্রায় ক্যালরি গ্রহণ করে ফেলেন তাহলে সেটা আপনার শরীরের চর্বি
হিসেবে জমতে পারে। যে কারণে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। চিনি সাধারণত
রক্তের শর্করার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি করে। আর শরীরে যদি রক্তের মাত্রা
বৃদ্ধি হয় তাহলে ইনসুলিন নিঃসরণ করে।
আপনি যদি নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি খান তাহলে এটা আপনার শরীরের
ইন্সুরেন্স প্রতিরোধ করার ঝুঁকি কে বৃদ্ধি করবে। শরীরে যখন ইনসুলিন
প্রতিরোধ হবে তখন কার্যকর ভাবে গ্লুকোজ শোষণ হবে না। যে কারণে শরীরে চর্বির
পরিমাণ আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।
তবে মনে রাখবেন
কিছু খাবার বা ফল রয়েছে যেগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে চিহ্নে উপস্থিত থাকে এবং
ফাইবার সহ বিদ্যমান থাকে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। এ ধরনের খাবার গুলো আপনি যদি
সীমিত পরিমান খান তাহলে এটা আপনার শরীরে ওজনের ওপর তেমন একটা প্রভাব ফেলবে না।
সাধারণত মানুষের জীবনধারার শারীরিক কার্যকলাপ এবং অন্যান্য কিছু স্বাস্থ্যগত
অবস্থানের জন্য ওজনের প্রভাব পড়ে।
তাই চিনি খেলে মোটা হওয়া যাবে কিনা এটা মূলত নির্ভর করবে আপনি কি পরিমানে চিনি
খাচ্ছেন এবং আপনার খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার উপর। ব্যক্তিগতভাবে আমার পরামর্শ
থাকবে যে বেশি পরিমাণে চিনি না খেয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় খাওয়াই ভালো।
চিনি খেলে কি গ্যাস হয়?
বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলিতে,অথবা বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে। তাছাড়া
চায়ের সাথে চিনির তো সম্পর্ক সরাসরি। অনেকভাবেই চিনি খাওয়া হয়ে থাকে। এজন্য
অনেকের মাথায় প্রশ্ন আসে যে চিনি খেলে কি গ্যাস হয় কিনা। আপনিও যদি না জেনে
থাকেন চিনি খেলে গ্যাস হয় কিনা চলুন তাহলে এ প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে আসা যাক।
যখন আমরা অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি খেয়ে ফেলে তখন এই অতিরিক্ত চিনি আমাদের
পাকস্থলীতে প্রবেশ করে। যে কারণে আমাদের গ্যাস্ট্রিক এসিডের নিঃসরণকে উদ্দীপিত
করে তুলে। আর যে কারণে আমাদের শরিরে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক নিঃসরণ হয়। যে কারণে
পেট ব্যথা, গ্যাস্ট্রিক সহ অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়।
অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি খাওয়া হলে এটা আমাদের পাকস্থলীতে ফার্মেন্টেশন ঘটায়। যে
কারণে পেটে গ্যাস সৃষ্টি হয়। তাহলে নিশ্চয়ই আপনি বুঝে গেছেন যে চিনি খেলে কি
গ্যাস হয়।
লাল চিনির উপকারিতা
আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন
তাহলে নিশ্চয়ই আপনি চিনি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন। চিনি লাল এবং সাদা দুই ধরনের হয়ে থাকে। কেউ পছন্দ করেন লাল চিনি
খেতে তো কেউ আবার সাদা চিনি। চলুন জেনে এসে যাক লাল চীনের উপকারিতা।
- লাল চিনিতে উপস্থিত আছে অধিক মাত্রায় ক্যালসিয়াম যে কারণে লাল চিনি খাওয়া হলে এটা শরীরের হাড় কে শক্ত করে তুলে।
- লাল চিনি ভূমিকা রাখে দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও।
- আপনি যদি লাল চিনি খেয়ে থাকেন তাহলে এটা আপনার লিভার কে সুস্থ রাখতে হোমিওকা রাখবে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে লালচিনির রয়েছে দারুন ভূমিকা।
- আখের এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করে এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানগুলোর শরীর থেকে বের করে।
- লাল চিনি খাওয়া হলে এটা জন্ডিসের প্রকোপ কম করে।
- লাল চিনি খাওয়া হলে এটার শরীরে মিনারেল অর্থাৎ খনিজ পদার্থের চাহিদাকে পূরণ করতে পারে এবং মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহকেও স্বাভাবিক রাখে। যে কারণে এটা স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে ভূমিকা রাখে।
- আখের ভেতরে থাকা আ্যালকেলাইন ভূমিকা রাখে প্রপটিজ গ্যাস অম্বলের প্রকোপ কম করতে।
- শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে লালচিনির রয়েছে অনেক ভূমিকা।
চিনি বেশি খেলে কি হয়?
চিনি মিষ্টি জাতীয় খাবার হওয়ায় আমাদের সবার কাছে একটু বেশি পছন্দের
খাবার চিনি। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতেও চিনির অনেক
ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন বেশি চিনি খেলে শরীরে কি কি সমস্যা
হবে বা চিনি বেশি খেলে কি হয় ? যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলে আর্টিকেলটি
পড়ে জেনে নিন।
আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অতিরিক্ত চিনি খাওয়া হলে
এটা আপনার কিডনির ক্ষতি করতে পারে। চিনিতে রয়েছে অনেক পরিমাণ ক্যালোরি
কারণে চিনির পরিমাণ যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে এটা শরীরের ওজন খুব দ্রুত
বৃদ্ধি করে তুলবে। শুধু তাই নয় বরং চিনি যদি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয়
তাহলে এটা শরীরের ভেতরে অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে।
যেমন -রক্তে চলাচলে বাধা প্রদান করবে। কেউ যদি বেশি পরিমাণে চিনি খেয়ে
ফেলে তাহলে এটা তার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে। তা অবশ্যই স্বাস্থ্যের
কথা ভেবে বেশি পরিমাণ চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
আমাদের পরামর্শ
চিনি খাওয়া আমাদের জন্য বেশ উপকারী। কিন্তু তবুও অতিরিক্ত মাত্রই খাওয়া হলে
এটা শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য ব্যক্তিগতভাবে আমাদের পরামর্শ
থাকবে যে আপনি চিনির উপকারী দিকগুলো পাওয়ার জন্য অবশ্যই পরিণত খাবেন।
আর্টিকেলটি যদি কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে জানিয়েছি চিনি খাওয়ার উপকারিতা
ও অপকারিতা সম্পর্কে। আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা উপকৃত হয়ে থাকেন
তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার করে দেন। এ সমস্ত তথ্যগুলো পেতে ভিজিট করুন
আমাদের এই www.multiplebd.com ওয়েবসাইটে।
মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url