কোয়েল পাখির ডিমের ১২টি কার্যকারী উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন
কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি ও ডিম পাড়ার লক্ষণ জানতে চাপদিনআপনি কি কোয়েল পাখির ডিমের ১২টি কার্যকারী উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে
চাচ্ছেন ? তাহলে আজকে আর্টিকেলটি হতে যাচ্ছে আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি
যদি কোয়েল পাখির ডিম খান তাহলে এটা আপনার স্বাস্থ্য উপকার করবে। তাইতো উপকারী
দিকগুলো সম্পর্কে আর্টিকেল বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া আর্টিকেল পড়ে
আপনারা জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা।
অনেকেই জানেনা কোয়েল পাখির ডিম খেলে কি কি উপকার পাওয়া যাবে। আপনিও যদি না জেনে
থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি পড়ে জেনে নিন। চলুন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আমরা
বিস্তারিত জেনে আসি ।
ভূমিকা
কোয়েল পাখির ডিম অনেকের কাছে খুব পরিচিত একটি নাম। কোয়েল পাখির ডিমের অনেক
উপকারী দিক থাকার জন্য এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিস্তারিতভাবে
জেনে যাবেন অল্প কি ডিম খেলে কি কি উপকার রয়েছ এবং অপকারী দিকগুলো সম্পর্কে। এর
পাশাপাশি আর্টিকেলটি পড়লে আপনি আরো জেনে যাবেন কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে
আছে কিনা সে বিষয়গুলো। তাই অবশ্য আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য
আজকে আর্টিকেলে আমরা জানবো কোয়েল পাখির ডিমের ১২টি কার্যকারী উপকারিতা ও
অপকারিতা।আপনি যদি কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে
আর্টিকেলের শুরুতে জেনে নিন কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। তাহলে বিস্তারিত
জেনে আসা যাক সাধারণত কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য জাত অনুসারে বিভিন্ন ধরনের হয়ে
থাকে।
কোয়েল পাখির অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটা আকারে দেখতে ছোট হয় এজন্য এতে
দেখতে বেশ দারুন লাগে। বাদামি রঙের রং দেখতে পাওয়া যায় কোয়েল পাখির গায়ে।
কোয়েল পাখি এমন একটা পাখি যেটা খুব কম বয়সে ডিম দিয়ে থাকে। ৬-৭ সপ্তাহের ভিতরে
কোয়েল পাখির ডিম দেওয়া শুরু করে দেয়। একবার যদি কোয়েল পাখির ডিম দিতে শুরু
করে ।
তাহলে এটা অনেকদিন পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। অনেকেই আবার কোয়েল পাখি বাণিজ্যিকভাবে
বাজারজাত করার জন্য পালন করে থাকে যেখান থেকে বেশি পরিমাণ মাংস উৎপন্ন করা হয়।
কোয়েল পাখি থেকে যে মাংস পাওয়া যায় এটাতে ফ্যাটের পরিমাণ তুলনামূলক কম রয়েছে।
এজন্য উচ্চ রক্তচাপ ব্যক্তিদের জন্য কোয়েল পাখির মাংস অনেক উপকারী।
সাধারণত একটি পূর্ণাঙ্গ কোয়েল পাখির ওজন হয়ে থাকে ১৫০- ২০০ গ্রাম পর্যন্ত। আপনি
জেনে অবাক হবেন যে কোয়েল পাখির অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কোয়েল পাখির ডিম
থেকে বাচ্চা ফুটানো যাবে মাত্র ১৬ থেকে ১৮ দিন সময়ের ভিতর। এজন্য বাচ্চা পটাতে
সময় কমলাকার কারণে খুব অল্প সময়ের ভেতরেই কোয়েল পাখি আপনি বাণিজ্যিকভাবেও
বাজার করতে পারবেন। আর যেখান থেকে খুব সহজে অল্প সময়ে আপনি অনেক মুনাফা অর্জন
করতে পারবেন।
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করছিলাম কোয়েল পাখির ডিমের ১২টি কার্যকারী উপকারিতা
ও অপকারিতা সম্পর্কে। কোয়েল পাখির ডিমের রয়েছে অনেক উপকারী দিক। কোয়েলের ডিম
আকারে ছোট হলেও এর রয়েছে অনেক গুনাগুন যা আপনার শরীরের জন্য উপকারী। চলুন তাহলে
এবার বিস্তারিত হবে জেনে আসা যাক উপকারী দিকগুলো সম্পর্কে।
- হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করে
- ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করে
- কিডনি ভালো রাখে
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- চুল পড়া রোধ করে
- চোখের জ্যোতি ভালো রাখে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিত
- হাঁপানি শিথিল করে
- শক্তিবর্ধক
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে
- এলার্জিজনিত রোগ প্রতিরোধ করে
হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করেঃ এমন অনেকে রয়েছেন যারা হাটের
সমস্যায় ভুগছেন। হাট যাও তো আমাদের শরীরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশতাই
অবশ্যই আমাদের হাটের যত্ন নিতে হবে। আপনি যদি প্রতিদিন 2 থেকে তিনটি করে কোয়েল
পাখির ডিম সেদ্ধ করে খেতে পারেন তাহলে এটা আপনার হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ
করবে। কোয়েল পাখির ডিমে থাকা পটাশিয়াম খুব সহজে হার্টের কার্যক্ষমতা কে বৃদ্ধি
করবে এবং হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে।
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করেঃ আমরা সকলেই চাই আমাদের ত্বক যেন সুন্দর
এবং মসৃণ থাকে। আপনি যদি প্রতিদিন না কোয়েল পাখি ডিম খেতে পারেন তাহলে এটা
আপনার ত্বকে উজ্জ্বল এবং মসৃণ করে তুলবে। কারণ কোয়েল পাখির ডিমের রয়েছে অনেক
পরিমাণে ভিটামিন বি 6 ও ভিটামিন।
কিডনি ভালো রাখেঃ ছোট্ট এই কোয়েল পাখির ডিমের যতগুলো উপকারে দিক রয়েছে
তার ভিতরে অন্যতম একটি দিক হচ্ছে এটা কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করবে। কোয়েল
পাখির ডিমে যে পুষ্টিগুণ গুলো রয়েছে এগুলো খুব সহজেই আমাদের হার্টের
স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি কিডনির উন্নতিতে ও ভূমিকা রাখবে।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ আপনি যদি আপনার ওজন কম করতে চান তাহলে কোয়েল
পাখির ডিম খেতে পারেন। কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া হলে এটা আপনার ওজন হ্রাস করবে।
কোয়েল পাখির ডিমে যে যৌগ পুষ্টি উপাদান সমূহ রয়েছে এগুলো খুব সহজেই আপনার
শরীরের অতিরিক্ত ওজন কম করে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসবে।
চুল পড়া রোধ করেঃ আপনি কি চুল পড়া সমস্যায় ভুগছেন ? এ সমস্যা থেকে
মুক্তি পেতে চান? বাজার থেকে হয়তো আপনি অনেক নামিদামি হেয়ার প্রোডাক্ট
ব্যবহার করে আপনার চুল পড়া কমাতে পারছেন না। তাহলে চিন্তার কারণ নেই। আজকে
থেকে আপনি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া শুরু করুন। প্রত্যেকদিন যদি আপনি দুই থেকে
তিনটি করে কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন তাহলে এটা আপনার শরীরের উচ্চমাত্রায়
প্রোটিন যোগ করবে। এবং আপনার চুল পড়া রোধ করা পাশাপাশি চলকে করে তুলবে মজবুত।
চোখের জ্যোতি ভালো রাখেঃ বয়সের সাথে সাথে চোখের জ্যোতি কম বেশি হয়ে
থাকে। আপনার কাছে কি কাছের অথবা দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হয়। তাহলে এক মিনিট
প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখি ডিম সিদ্ধ করে খেতে পারেন। কোয়েল পাখির
ডিমে থাকা পরিপূর্ণ পুষ্টি উপাদান গুলো আপনার শরীরে ভিটামিন এ যোগ করবে। এভাবে
সাহায্য করবে আর চোখের জ্যোতি ভালো রাখতে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে প্রতিরোধ
ক্ষমতা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের সাথে যুদ্ধ করে আমাদের শরীর সুস্থ
রাখতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য শরীরে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাহলে
খুব সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং শরীর দুর্বল হয়।
এজন্য আপনি যদি প্রতিদিন কোয়েল পাখির ২ থেকে টি করে ডিম সিদ্ধ অথবা হাফ বোল
করে খেতে পারেন তাহলে এটা আপনার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে বৃদ্ধি করবে। কারণ
কোয়েল পাখি ডিমের রয়েছে অনেক পরিমাণ পুষ্টি উপাদান।
মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিতঃ আমাদের শরীরের সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে মস্তিষ্ক। আর এই মস্তিষ্কের কার্যকলাপ গুলো এবং
সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য আমাদের শরীরে ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন বি১,
থাইমেন এবং ভিটামিন বি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোয়েল পাখির ডিম থেকে
আপনি খুব সহজেই ভিটামিন বি ১২ এবং প্রয়োজনের উপাদান গুলো খুব সহজে পেয়ে যাবেন
যেটা আপনার স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিত করবে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য
ভালো রাখবে।
হাঁপানি শিথিল করেঃ বিভিন্ন গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন যে কোয়েল পাখির
ডিম খাওয়া হলে এটা হাঁপানির তীব্রতার কম করবে এবং অস্থিরতা গুলো দূর করতে
সাহায্য করবে। এছাড়াও কোয়েল পাখির ডিম আপনি বৃদ্ধ কাজ করে থাকে।
শক্তিবর্ধকঃ কোয়েল পাখির ডিম শক্তির অন্যতম একটি উৎস। কোয়েল পাখির ডিম
আছে অধিক পরিমাণ আয়োজন এবং প্রোটিন যেটা আমাদের শরীরে এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি
করে। এছাড়াও কোয়েল পাখি ডিম খাওয়া হলে এটা এমাইনো এসিড প্রোফাইল তৈরি করতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রত্যেকদিন যদি নিয়মিতভাবে দুই থেকে তিনটি করে কয়
প্রকার ডিম সিদ্ধ করে খাওয়া হয় তাহলে আপনার শরীরে অনেক শক্তি যোগ হবে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ এমন অনেকেই রয়েছে যাদের শরীরে কোলেস্টরেল
সমস্যা রয়েছে। আপনিও যদি কোলেস্টেরল সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনি কোয়েল
পাখির ডিম খেতে পারেন। কারণ কোয়েল পাখি ডিম খাওয়া হলে এটা শরীর থেকে খারাপ
কোলেস্টেরল গুলোকে কম করে। কোয়েল পাখির ডিমের ভিতরে কোলেস্টেরল পরিমাণ থাকে
১.৪% যেটা ভালো কোলেস্টেরল তৈরি করতে সাহায্য করবে।
এলার্জিজনিত রোগ প্রতিরোধ করেঃ বর্তমান সময়ে এসে পরিবেশ দূষণ হওয়ার
কারণে অনেকেই খুব সহজেই অ্যালার্জি রোগে ভুগছে। একইভাবে আপনিও যদি
অ্যালার্জিজনিত সমস্যা শিকার হন তাহলে প্রতিদিন আপনি কোয়েল পাখির ডিম খেতে
পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া হলে এলার্জি প্রতিরোধ
করতে সাহায্য করবে কারণ কোয়েল পাখির ডিমের রয়েছে এলার্জি প্রতিরোধকারী
উপাদান।
কোয়েল পাখির ডিমের অপকারিতা
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারী দিকের পাশাপাশি রয়েছে কিছু ক্ষতিকর দিক। আজকের
আর্টিকেলে আমরা আপনাকে জানাচ্ছিলাম কোয়েল পাখির ডিমের ১২টি কার্যকারী
উপকারিতা ও অপকারিতা। আপনি নিশ্চয় জেনে গেছেন উপকারের দিকগুলো। চলুন তাহলে
বিস্তারিত ভাবে জেনে আসা যায় কপাটি দিকগুলো সম্পর্কে।
- কোয়েল পাখির ডিমের রয়েছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন এজন্য অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া হলে এটা শরীরে হাই প্রেসার এর মত সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া শরীরের জন্য খাওয়া হলেও মাত্রাধিক কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া হলে এটা শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। যেমন - হঠাৎ করে ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় লাল লাল ফুসকড়ির মত হতে পারে।
- অনেকের ক্ষেত্রেই আবার কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া হলে শরীরে উচ্চ রক্তচাপ যন্ত্র সমস্যা ও সৃষ্টি করতে পারে।
- বিভিন্ন সময় আবার হজম শক্তিতেও সমস্যা তৈরি করতে পারে। এজন্য অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া ঠিক হবে না।
- কোয়েল পাখির ডিম যদি পুড়ে মাপের বেশি খাওয়া হয় তাহলে এটা আপনার পেটে ব্যথা তৈরি করবে এছাড়াও পেট খারাপ করতে পারে।
- কোয়েল পাখির ডিম ছোট সাইজ হলেও এর পুষ্টিগুণ অনেক হওয়ার জন্য অতিরিক্ত পরিমাণ যদি ডিম খাওয়া হয় তাহলে এটা আপনার মাথা গরম করে তুলবে। অতিরিক্ত ঘাম এবং সেই সঙ্গে পানি শূন্যতা হতে পারে।
- অনেক সময় আবার অনেকেই কাঁচা অবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেয়ে ফেলে। কিন্তু এই কাঁচা ডিমের ভেতরে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। যেটা আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- অতিরিক্ত মাত্রায় যদি আপনি কোয়েল পাখির ডিম খেয়ে ফেলেন তাহলে এটা আপনারা হার্টের রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে।
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
অনেকে জানতে চেয়েছেন গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে কি উপকার পাওয়া
যাবে। গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মা এবং পেটে থাকা সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য
বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন হয়। গর্ভকালীন সময়ে এই পুষ্টি
চাহিদা পূরণ করতে কোয়েল পাখির ডিম অতুলনীয়। চলুন তাহলে বিস্তারিত ভাবে জেনে
আসা যাক গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে।
- কোয়েল পাখির ডিমে অনেক পরিমানে ক্যালরি থাকার কারণে এটা গর্ভাবস্থায় শরীরে পুষ্টির যোগান দিবে।
- গর্ভকালীন সময়ে যে পরিমাণ এমাইনো এসিড এবং মিনারেলসহ ভিটামিন প্রয়োজন হয় তার সবগুলোই পেয়ে যাবেন কোয়েল পাখির ডিমের ভিতরে।
- বিশেষজ্ঞরা বলেন গর্ভাবস্থায় যদি কোয়েল পাখি ডিম সিদ্ধ করে খাওয়া হয় তাহলে এটা গর্বে থাকা শেষের মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
- গর্ভবতী সময় শরীরে অনেক ক্যালরি প্রয়োজন হয়। আপনার শরীরে এই ক্যালোরের চাহিদা পূরণ করতে কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারে।
- অন্যান্য ডিমের চেয়ে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে কোয়েল পাখির ডিমের ভেতরে। এজন্য গর্ভকালীন সময়ে আপনি এটা খেলে অনেক উপকার পাবেন।
- বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোয়েল পাখির ডিমের ভেতরে উপস্থিত আছে অনেক পরিমাণ পটাশিয়াম যেটা গর্ভকালীন সময়ে উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করার মাধ্যমে মা এবং শিশুকে ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে।
আমি আশা করছি আপনি খুব ভালোভাবে বুঝে গেছেন গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা গুলো। তবে হ্যাঁ গর্ভকালীন সময়ে যেহেতু সব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয় এজন্য খুব বেশি পরিমাণ খাওয়া ঠিক হবে না। গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম বেশি করে না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন।
কোয়েল পাখি দিনে কয়টি ডিম দেয়
অনেকেই আমাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছেন যে কোয়েল পাখি দিনে কয়টি
ডিম দেয়। যারা কোয়েল পাখি পালন করেন না তাদের মনে এই প্রশ্নটা জাগা
স্বাভাবিক। আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণ জেনে গেছেন কোয়েল পাখির ডিমের ১২টি
কার্যকারী উপকারিতা ও অপকারিতা। চলুন তাহলে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন কোয়েল
পাখির দিনে কয়টি করে ডিম দেয়।
সাধারণত কোয়েল পাখি দিনে ১ টি করে ডিম দিয়ে থাকে। তবে হ্যাঁ, কোয়েল
পাখির ডিম দিতে 24 ঘন্টা সময় দরকার হয় না অর্থাৎ কোয়েল পাখি ২৪ ঘণ্টা
পরপর সময়ের ডিম দেয় না বরং তার আগেই দিয়ে থাকে। একটি কোয়েল পাখি যদি
ডিম দেওয়া শুরু করে তাহলে ১৮ ঘণ্টা পরপর ডিম দিয়ে থাকে এবং ১ টি করে ডিম
দেয়।
কোয়েল পাখি যদি একবার ডিম দেওয়া শুরু করে তাহলে ৬-৭ দিন সময় পর্যন্ত ডিম
দিয়ে থাকে। তারপর কিছুদিন রেস্টে চলে যায়। এ সময়ে তারা দুই দিনে অথবা তিন
দিনে ১ টি করে ডিম দিয়ে থাকে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে
আপনারা যারা স্বাস্থ্য বিষয়ে একটু বেশি সচেতন কোয়েল পাখির ডিম খাবার পরবে
তাদের মাথায় প্রশ্ন জাগতে পারে যে কোয়েল পাখির ডিমের অ্যালার্জি আছে
কিনা। তাই আজকের আর্টিকেলের এই অংশে এসে আমরা জানবো কোয়েল পাখির ডিম খেলে
এলার্জি হবে কিনা সে বিষয়ে সম্পর্কে। প্রথমেই বলে রাখি যে গবেষণায় দেখা
গেছে যে -
কোয়েল পাখির ডিমের ভেতরে কোন ধরনের এলার্জি থাকে না। আপনি যদি নিশ্চিত হতে
চান যে কোয়েল পাখির ডিম অ্যালার্জি রয়েছে কিনা তাহলে আপনি প্রথমে একটি
কোয়েল পাখির ডিম খেয়ে দেখতে পারেন। কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পরে যদি
আপনার শরীরে এলার্জির সমস্যা তৈরি হয় তাহলে বুঝে নিবেন যে আপনার জন্য
কোয়েল পাখির ডিমের ভেতরে এলার্জি রয়েছে।
আর যদি সমস্যা না হয় তাহলে নিশ্চিন্তে আপনি প্রত্যেকদিন কোয়েল পাখির ডিম
খেতে পারেন। এতে বোঝা যাবে যে আপনার শরীরে কোয়েল পাখির ডিমের কোন এলার্জি
নেই। আমি অনেকেই আছেন যারা কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পর এলার্জির লক্ষণ
গুলো বুঝতে পারে না। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য কোয়েল পাখি ডিমের এলার্জির
লক্ষণ গুলো জানাচ্ছি যেমন -
ব্রণ জাতীয় লাল লাল রেশ, শরীরে বিভিন্ন ধরনের চুলকানি, টক লাল হয়ে ওঠা,
ফুসকুড়ি বের হওয়া ইত্যাদি। কোয়েল পাখির ডেমে রয়েছে অনেক ভিটামিন এবং
প্রোটিন যেটা আপনার শরীরে অনেক পুষ্টিযোগান দিবে। কোয়েল পাখির ডিমের ভিতরে
সাধারণত এলার্জি জাতীয় কোন সমস্যা থাকে না। সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে আপনি
নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে আর কোয়েল পাখির টিমে আপনার এলার্জি রয়েছে
কিনা।
কোয়েল পাখির মাংসের উপকারিতা
শুধু কোয়েল পাখির ডিম না বরং কোয়েল পাখির মাংসের রয়েছে অনেক উপকারিতা।
আপনি যদি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পাশাপাশি কোয়েল পাখির মাংস খাওয়ার কথা
ভেবে থাকেন তাহলে আপনি একদম ঠিক ভাবছেন। কোয়েল পাখির মাংসের উপকারিতা যত
পাওয়া যায় এজন্য অনেকে বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল পাখি পালন করছে মাংস উৎপাদন
করে বাজার করার জন্য।
কোয়েল পাখির মাংসের উপকারিতা
যারা হৃদরোগে আক্রান্ত তাদের জন্য কোয়েল পাখির মাংস অনেক উপকারী। এজন্য আপনি যদি হৃদরোগে আক্রান্ত হন তাহলে কোয়েল পাখির মাংস আপনার জন্য উপকারী ভূমিকা রাখবে কারণ কোয়েল পাখির মাংসের ফ্যাট এর পরিমাণ খুবই কম।হাঁস কিংবা অন্যান্য মুরগির মাংসের থেকে কোয়েল পাখির মাংস অনেক বেশি নরম এজন্য যেটা আপনি খুব সহজেই খেতে পারবেন এবং দ্রুত হজম করবে।
কোয়েল পাখির মাংসের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে যে কারণে এটা আমাদের দেহের ক্ষমতা কেউ বৃদ্ধি করবে। এজন্য আপনি কোয়েল পাখির মাংস খেলে আপনার দেহে সুস্থ সবল থাকবে।
যদি আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে কোয়েল পাখির মাংস খেলে এটা আপনার জন্য হবে খুবই উপযোগী।
বিশেষ করে বলছেন কোয়েল পাখির মাংস খাওয়া হলে এটা শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে কাজ করবে।
কোয়েল পাখি মাংসের অন্যতম একটি উপকারিতা হচ্ছে অন্যান্য মানুষের তুলনাতে এ পাখির দাম খুব কম যে জন্য আর্থিকভাবে অসহায় মানুষরাও খুব সহজে এটা খেতে পারবে ।
কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া উচিত
প্রিয় পাঠক, আপনি যদি আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই
আপনি জেনে গেছেন কোয়েল পাখির ডিমের ১২টি কার্যকারী উপকারিতা ও অপকারিতা। তবে
হ্যাঁ কোয়েল পাখির ডিম থেকে যদি আপনি সর্বোচ্চ উপকারিতা গুলো পেতে চান তাহলে
অবশ্যই আপনাকে পরিমাণ মতো খেতে হবে।
তাই আমরা এখন আপনাকে জানিয়ে দেবো প্রতিদিন আপনি কয়টা করে কয় পাখি ডিম খেতে
পারবেন। গবেষকরা বলছেন কোয়েল পাখির ডিম সবসময় সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত। কারণ
কোয়েল পাখির ডিম যদি ভাজি করে খাওয়া হয় তাহলে এটার পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন গুলো
নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য আপনি ডিম হাফ বয়েল করে খেলে বেশি পুষ্টি পাবেন।
প্রতিদিন আপনি ২ থেকে ৩ টি কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারবেন। যেটা আপনার স্বাস্থ্যের
জন্য হতে পারে সঠিক পরিমাণ। কোয়েল পাখির ডিম দেখতে আকারে ছোট হলো মুরগির ডিমের
থেকে এর প্রোটিনের পরিমাণ বেশি রয়েছে ৭ থেকে ৮ গুণ। এজন্য উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ
এই কোয়েল পাখির ডিম যদি আপনি বেশি পরিমাণ খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরের সমস্যা
দেখা দিবে। এজন্য চেষ্টা করেন প্রতিদিন সিদ্ধ করে দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির
ডিম খাওয়ার।
কোয়েল পাখি কত বছর বাঁচে
কোয়েল পাখির আমার করার পূর্বে অনেকের মনে কষ্ট হয় যে কোয়েল পাখি কত বছর
বাঁচে। তাই আমরা এখন আপনাকে জানিয়ে দেবো কোয়েল পাখি কতদিন বাঁচবে সে বিষয়ে
সম্পর্কে। কোয়েল পাখির সাধারণত খোলামেলা জায়গা বেশি পছন্দ করে। কোয়েল পাখির
জায়গা যদি ছোট হয় তাহলে তারা সেখানে থাকতে অস্বস্তি বোধ করে।
এজন্য আপনি যদি কোয়েল পাখি দীর্ঘদিন যাবৎ বাঁচিয়ে রাখতে চান তাহলে বড়
জায়গায় পালন করবেন। কোন অসুখ-বিসুখ যদি না হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে আল্লাহর
রহমতে কোয়েল পাখি সাধারণত ৫ বছর বাঁচে। কোন কোন ক্ষেত্রে আবার এরা ২-৩ বছর
বাঁচে। আপনি যদি দীর্ঘদিন যাবৎ কয়েল পাখি টিকে রাখতে চান তাহলে ভালোভাবে এর
চিকিৎসা নিতে হবে এবং পরিচর্যা করতে হবে। আশা করছি আপনি বিস্তারিতভাবে বুঝে
গেছেন।
আমাদের পরামর্শ
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া হলে নিঃসন্দেহে এটা আপনার জন্য উপকার বয়ে আনবে। তবে
হ্যাঁ অতিরিক্ত পরিমাণ না খাওয়াই ভালো হবে। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে এটা
স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে । সারাদিনে দুই থেকে তিনটি কোয়েল
পাখির ডিম খেতে পারেন। আর্টিকেলটি যদি কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে আমাকে
কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
প্রিয় পাঠক, আজকে আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছিলাম কোয়েল পাখির ডিমের ১২টি
কার্যকারী উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো
লেগে থাকে কিংবা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। আর
হ্যাঁ সমস্ত তথ্যগুলো নিয়মিত পেতে ভিজিট করুন আমাদের
এই www.multiplebd.com ওয়েবসাইটে।
মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url