চুইঝালের ১৫ টি উপকারিতা খাওয়া এবং সংরক্ষণের নিয়ম জানুন

কাঁচা রসুন খেলে উপকারিতা কি জানতে এখানে চাপ দিনআজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো চুইঝালের ১৫ টি উপকারিতা খাওয়া এবং সংরক্ষণের নিয়ম। চুই ঝাল একটি মসলা জাতীয় খাবার হওয়ায় আপনিও হয়তো রান্নার কাজে এটি ব্যবহার করেন। তাছাড়া এটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।  কিন্তু আপনি যদি না জেনে থাকেন চুইঝালের এসব উপকারের দিক গুলো তাহলে আর্টিকেলটি পড়ে বিস্তারিত জেনে নিন।
multiplebd-চুইঝালের -১৫ -টি  -উপকারিতা- খাওয়া এ-বং- সংরক্ষণের -নিয়ম
এছাড়াও আর্টিকেলটি পরে আপনি আরো জানতে পারবেন চুইঝাল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও। তাই অবশ্যই চুইঝালের ১৫ টি উপকারিতা এবং চুইঝাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

ভূমিকা 

মাংস রান্নার ক্ষেত্রে চুইঝাল এত জনপ্রিয় যে বর্তমানে প্রায় সবাই এটি ব্যবহার করছে। কিন্তু অনেকেই জানে না কি কি উপকার পাওয়া যাবে চুই ঝাল থেকে। আপনি যদি এ সকল উপকারী দিক না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি পড়ে বিস্তারিত জেনে নিন। এছাড়াও আজকের আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জেনে যাবেন চুইঝাল কিভাবে সংরক্ষণ করবেন সে বিষয়ে সম্পর্কেও। বিস্তারিত জানুন আর্টিকেলে।

চুইঝালের ১৫ টি  উপকারিতা

চুইঝাল কথাটি নিশ্চয়ই আপনি শুনেছেন। প্রায় আমাদের সকলেরই জানা যে চুইঝাল একটি মসলা জাতীয় খাবার। চেনা জানা রয়েছে অনেক পুষ্টি গুনাগুন এবং উপকারিতা আমাদের অনেকেরই অজানা। চুইঝালের রয়েছে এমন কিছু উপকারিতা যেগুলো জানলে আপনিও অবাক হবেন। চুইঝালের এসব উপকারী দিক সম্পর্কে যদি আপনি জানতে চান ।


তাহলে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। বর্তমান সময়ে এসে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে যে অঞ্চলগুলো রয়েছে অর্থাৎ, বাঘেরহাট যশোর নড়াইল খুলনা সাতক্ষীরা ইত্যাদি অঞ্চলগুলোতে এগুলো একটি জনপ্রিয় মসলা হয়ে পরিচিত পেয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলের রয়েছে চুইঝালের বেশ জনপ্রিয়তা।

বিভিন্ন ধরনের মাংসের সাথে চইঝালের কান্ড ব্যবহার করে মসলা হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে এবার আমরা জেনে আসি চুইঝালের ১৫ টি উপকারিতা সম্পর্কে।

চুই ঝালের উপকারী দিকগুলো
  • সর্দি দূর করে
  • মুখে রুচি বাড়ায়
  • রক্তস্বল্পতা দূর করে
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে
  • প্রস্রব পরবর্তী ব্যাথা উপশমের
  • ডায়রিয়া দূর করে
  • গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধানে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
  • পাকস্থলীর সমস্যার দূরীকরণে
  • ব্যথা দূর করে
  • হৃদ রোগ প্রতিরোধে
  • কফ কাশি হাঁপানি দূর করে
  • মানসিক প্রশান্তিতে
  • ঘুমের ওষুধ হিসেবে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
চুইঝলের রয়েছে এসব উপকারি দিক। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো চলুন আমরা এগুলো সম্পর্কে এবার বিস্তারিত ভাবে জেনে আসি।

সর্দি দূর করে 

খুব সহজেই যদি আপনার সর্দি লাগা বা ঠান্ডা লাগার প্রবণতা থেকে থাকে তাহলে আপনার এই সমস্যার সমাধান করতে জাদুকরের ভূমিকা রাখবে চুই ঝাল। অল্প খানিকটা চুইঝাল এবং এর সঙ্গে আধা পিসে খেয়ে নিলেই আপনার সর্দি সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

মুখে রুচি বাড়ায় 

চুইঝাল একটি মসলা জাতীয় খাবার হওয়ায় এটা খাবারের রুচি বৃদ্ধি করবে। আর যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই আপনার খাবারের রুচি বৃদ্ধি পাবে এবং ক্ষুধামন্দ দূর করতে রাখবে এক কার্যকারী ভূমিকা।

রক্তস্বল্পতা দূর করে 

শরীরে যখন রক্তস্বল্পতা হয় তখন আমাদের শরীরে এটা বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি করে । আমাদের শরীরে যখন হিমোগ্লোবিন জনিত সমস্যা সৃষ্টি হয় তখন রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। আপনিও যদি এই রক্তস্বল্পতা সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত চুই ঝাল খেলে দূর হতে পারে আপনার রক্তস্বল্পতা সমস্যা। এছাড়াও শরীরে শক্তির যোগান দিবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে 

চুইঝালের ভেতরে উপস্থিত আছে অধিক পরিমাণে আইসোফ্লাভোন এবং আ্যালকালয়েড নামক একধরনের ফাইটো কেমিক্যাল। যেগুলো আমাদের শরীরে কাজ করে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে এবং ভূমিকা রাখে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে।

প্রস্রব পরবর্তী ব্যাথা উপশমের 

সদ্য প্রসূতি হয়েছে এমন মেয়েদের ক্ষেত্রেও রয়েছে এক দারুন ভূমিকা। এ সময়ে যদি তুই ঝাল খাওয়া হয় তাহলে এটা শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। তবে হ্যাঁ অধিক পরিমাণ না খাওয়াই ভালো হবে।

ডায়রিয়া দূর করে 

বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সুইচ হলে যে সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে এগুলো ডায়রিয়ার সমস্যা দূর করতে সাহায্যকারি। এছাড়াও পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রয়েছে চুইঝালের ভূমিকা।

গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধানে 

চুইঝালে যে সকল উপাদান উপস্থিত রয়েছে এগুলো পাকস্থলীর সমস্যা দূর করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধান করতে ভূমিকা রাখে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে 

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাটি বেশ জটিল। আমাদের দেশের অনেক মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। নিয়মিত যদি চুই ঝাল খাওয়া হয় তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করবে এই চুইঝাল।

পাকস্থলীর সমস্যার দূরীকরণে 

বিভিন্ন গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন যে পাকস্থলীতে অন্তের প্রদাহ দূর করতে চুইঝাল বেশ উপকারী।

ব্যথা দূর করে 

বিভিন্ন সময় অনেক কারণে আমাদের শরীরে নানা ধরনের ব্যথার সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ সকল ব্যাথা দূর করার মাধ্যমে শরীরকে ভালো এবং সুস্থ ও সতেজ রাখতে চুইঝাল সাহায্য করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধে 

আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্র কম করার মাধ্যমে হার্ট সুস্থ রাখতে চুলের রয়েছে সাহায্য করে ভূমিকা। এর পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকেও অনেকটা কম হয়

কফ কাশি হাঁপানি দূর করে 

নিয়মিত যদি চুই ঝাল খাওয়া হয় তাহলে এটা পুরনো কাশি সহ হাঁপানি এবং কফ সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে।

মানসিক প্রশান্তিতে 

চুইঝালের যতগুলো উপকারে দিক রয়েছে তার ভেতরে একটি হচ্ছে প্রত্যেকদিন যদি নিয়ম করে চুই ঝাল খাওয়া হয় তাহলে এটা আমাদের শরীরের স্নায়বিক উত্তেজনা সহ দূর করে মানসিক অস্থিরতা।

ঘুমের ওষুধ হিসেবে 

নিয়মিতভাবে যদি তুই ঝাল খাওয়া হয় তাহলে এটা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতা দূর করার মাধ্যমে স্বাভাবিক ঘুম নিয়ে আসে যে কারণে ঘুমের ওষুধ হিসেবে এটা দারুন এক ভূমিকা রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে 

আমাদের শরীরের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া জনিত যে সকল রোগ রয়েছে এগুলো প্রতিরোধ করতে চুইঝাল সাহায্য করে।

চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংস রান্নার রেসিপি

তুই ঝাল দিয়ে যদি গরুর মাংস রান্না করে খাওয়া হয় তাহলে এটার অনেক স্বাদ পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে চুই ঝাল দিয়ে গরুর মাংস রান্না করা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু অনেকেই জানে না কিভাবে চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংস রান্না করতে হয়। তাই আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের শেখাবো চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংস রান্না করার রেসিপি সম্পর্কে।
multiplebd-চুইঝালের -১৫ -টি  -উপকারিতা- খাওয়া এ-বং- সংরক্ষণের -নিয়ম
প্রয়োজনীয় উপকরণ 
  • চুইঝাল
  • মাংস
  • আদা ও রসুন বাটা
  • তেল
  • তেজপাত
  • এক কাপ পেঁয়াজ
  • হলুদ
  • জিরা
  • দারচিনি
  • এলাচ
  • মরিচের গুঁড়া
  • লবণ
  • টক দই
যেভাবে চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংস রান্না করবেন  


প্রথমে আপনার পছন্দ অনুযায়ী মাংসগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে সেগুলো ধুয়ে ফেলুন। এবার এগুলোর সঙ্গে টক দই এবং লবণ মিশিয়ে রাখুন কিছু সময়। এবার আপনি চুলাতে রান্নার জন্য হাঁড়ি বসিয়ে তেল গরম করে নিন। তেল যদি পর্যাপ্ত মাপে গরম হয়ে যায় তাহলে পেঁয়াজ ভেজে নিন। পেয়াজ যদি ভাজা হয়ে যায় তাহলে পর্যায়ক্রমে সব মসলাগুলো ভালোভাবে দিয়ে কষিয়ে ফেলুন।

এবার মাংস এবং চুইঝাল  ঢেলে আরো কয়েকবার কষিয়ে নিন। চুইঝাল দিয়ে মাংস রান্না করার স্বাদ নির্ভর করে কষানোর উপরেই। কষানো যদি হয়ে যায় তাহলে এবার আপনি সেখানে কিছু পরিমাণ পানি দিয়ে দিন। চুলাতে তাপমাত্রা মিডিয়াম পর্যায়ে রাখুন। পানি শুকিয়ে মাংসের উপর ঝোল গাঢ় হয়ে উপরে উঠে আসলে এবার সেখানে আপনি ভাজা জিরা গুড়া এবং গরম মসলা দিয়ে দিন।

এগুলো কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নামিয়ে ফেলুন। ব্যাচ তৈরি হয়ে গেল মজাদার চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংসের রেসিপি। এভাবে আপনি আপনার বাসাতে তৈরি করে নিতে পারবেন চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংস। 

চুইঝাল খাওয়ার নিয়ম 

চুইঝাল আমাদের শরীরের জন্য অনেক পুষ্টিকারি দিক হলেও অনেকেই জানেনা চুইঝাল খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। আপনি যদি সঠিক নিয়মে চুই ঝাল খেতে পারেন তাহলে  চুইঝালের ১৫ টি  উপকারিতা পেয়ে যাবেন খুব সহজেই। চলুন তাহলে এবার জেনে আসা যাক চুইঝাল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। চুই ঝাল যেহেতু একটি মসলা জাতীয় খাবার ।

এজন্য এগুলো সাধারণত রান্নার কাজেই বেশি ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে গরু এবং হাঁসের মাংসে সাথে ব্যবহারের জন্য এটা অনেক বিখ্যাত। এর পাশাপাশি বড় মাছ ডাল এবং খিচুড়ি সহ যে কোন ধরনের ভারী পাকের ক্ষেত্রে তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া হয় চুইঝাল। চুই ঝাল খেতে অনেকটাই আঠালো এবং ঝাঁঝালো স্বাদ এর মত। চুইঝাল খাওয়ার সময়ে ডাটার মতো চিবিয়েও খাওয়া হয়। 

চুইঝাল সংরক্ষণের নিয়ম 

আর্টিকেলটি পড়ে আমরা তো জানলাম চুইঝালের ১৫ টি উপকারিতা সম্পর্কে। অনেকেই জানেনা কিভাবে চুইঝাল সংরক্ষণ করতে হয়। তাই আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আপনাদের জানিয়ে দিব কিভাবে আপনি চুইঝাল সংরক্ষণ করবেন। চলুন তাহলে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসা যাক। চুইঝাল লতা জাতীয় গাছ হওয়ার কারণে ।

এর শিকড় এবং কাণ্ড সবকিছুই মসলা হিসেবে খাওয়া হয়। চুই ঝাল ডিপ ফ্রিজের সংরক্ষণ করতে পারবেন এছাড়াও চটের বস্তা দিয়েও সংরক্ষণ করতে পারবেন। তুই ঝাল ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য প্রথমেই এর তাল বা কল গুলো ছোট ছোট করে কেটে সেগুলো পলিথিনের মোড়ে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।

এছাড়াও আপনি চাইলে এগুলোকে চটের বস্তা তে মুড়িয়ে মাঝে মাঝে এখানে পানির ছিটা দিয়ে অনেকদিন ধরে সংরক্ষণ করতে পারবেন। এছাড়াও অনেকে রয়েছে যারা কিনা এগুলোকে কেটে ওয়াটারপ্রুফ বক্সে ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয়। তবে চুইঝাল কাটার পর তাড়াতাড়ি যদি রান্নায় ব্যবহার করা হয় তাহলে এর সঠিক স্বাদ পাওয়া যায়।

চুইঝাল গাছ চেনার উপায়

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাকে জানিয়েছি চুইঝালের ১৫ টি উপকারিতা। আমি আশা করছি নিশ্চয়ই আপনি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে গেছেন। অনেককেই রয়েছেন যারা চুইঝাল গাছ ঠিক মতো চেনে না। আপনিও যদি চুই ঝাল গাছ না চিনে থাকেন তাহলে চিন্তার কোনই কারণ নেই। কারণ এখন আমরা আপনাকে জানিয়ে দিব চুইঝাল গাছ চেনার উপায়।

চুইঝাল হচ্ছে একটি লতা জাতীয় গাছ। যার পাতা থেকে শুরু করে কান্ড পর্যন্ত সবকিছুই ব্যবহার করা হয় মসলা হিসেবে। চুইঝালের পাতা দেখতে অনেকটাই পান পাতার মত হয়ে থাকে। এই পাতাগুলো দেখতে অনেকটাই লম্বা আকৃতির এবং পুরু হয়ে থাকে। চুইগাছের চারার সাথে অনেকগুলো গিরা থাকে। গাছ রোপন করার পর বৃষ্টি হলে সেখান থেকে বড় বড় শিকড় বের হতে থাকে।

চুইঝাল এর দাম

চুইঝাল খুব জনপ্রিয় এবং মাংসের স্বাদ বৃদ্ধি করতে চুইঝঝাল একটি অন্যতম জনপ্রিয় মসলা হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমা অঞ্চলের মানুষের কাছে এটা বেশ জনপ্রিয়। তবে এখন বর্তমানে এটা সারাদেশেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চুইঝাল বিক্রির প্রধান সময় হচ্ছে কোরবানির ঈদ।

তবে সংরক্ষণ করে রাখার মাধ্যমে এখন এটা মানুষ সারা বছরই ব্যবহার করছে। বছরের সাধারণ সময় গুলোতে চুইঝাল বিক্রি হয়ে থাকে প্রতি কেজিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে। তবে আকার ভেদে বর্তমান সময়গুলোতে চুই ঝাল প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকাতে।

চুই ঝালের পুষ্টি উপাদান

আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আমরা তো জানলাম চুইঝাল খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যাবে। অনেকেই আমাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছেন যে চুইঝালের পুষ্টি উপাদান কি কি। তাই আমরা ভেবেছি যে আজকে আর্টিকেলের এই অংশে এসে আপনাদের সুবিধার্থে জানিয়ে দিব চুইঝালের ভেতরে কি কি পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় ।

চুই ঝালের পুষ্টি উপাদান গুলো অনেক বেশি যা আমাদের শরীরে বেশ উপকার করে। প্রতি ১০০ গ্রাম চুইঝাল এর ভেতরে পাওয়া যায় প্রায়-
  • ক্যালোরি ২০ গ্রাম
  • ভিটামিন সি ৫০-১০০ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম রয়েছে ৮০ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম এর পরিমাণ ৩০০ মিলিগ্রামের ও বেশি
  • আয়রন রয়েছে ১.৫-২ মিলিগ্রাম
  • চর্বি নগণ্য
  • প্রোটিনের পরিমাণ রয়েছে ১ গ্রামের বেশি
  • এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমান আ্যালকালয়েড
  • গ্লুকোজ
  • সিজামিন
  • ফ্রুক্টোজ
  • মিউসিলেজ
  • গয়লাকোসাইডস
  • আইসোফ্লাভোন
  • চুই ঝালের শেকোড়ে পাওয়া যায় ১৩.১৫ পিপারিন

চুইঝালের এর অপকারিতা

তক্ষণ তো জানলেন চুইঝালের ১৫ টি উপকারিতা। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক চুইঝালের অপকারী দিকগুলো। প্রথমেই বলে রাখি আপনি জেনে অনেক খুশি হবেন যে চুইঝালের তেমন কোন অপকারী দিক নেই। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খুব বেশি না খাওয়াই ভালো। চুইঝাল যেহেতু মসলা হিসেবে তরকারির সঙ্গে ব্যবহার করা হয় ।

তাই খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত স্বাদ বৃদ্ধি করতে বেশি মাত্রায় যেন না দেওয়া হয়। তাহলে এর স্বাদ বেস্বাদ হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও দেখা দিতে পারে শারীরিক কিছু জটিলতাও। সর্বোপরি বলা যায় চুইঝাল একটি মসলা জাতীয় খাবার যার তরকারির সাথে ব্যবহার করা হয় যে কারণে এর তেমন কোন ক্ষতি নেই। তবে খুব বেশি পরিমাণে অতিরিক্ত করে না খাওয়াই ভালো।

চুইঝাল গাছ লাগানোর পদ্ধতি

অনেকেই আমাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছেন যে চুইঝাল গাছ কিভাবে লাগাতে হয় বা চুইঝাল গাছ লাগানোর পদ্ধতি কি। চলুন তাহলে এবার এই সম্পর্কে জেনে আসা যাক। চুইঝাল  লাগানোর একদম সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে শিখর সহ গিট কেটে লাগানো। এভাবে লাগালে খুব সহজে গাছ থেকে ছাড়া বের হয় এবং বড় হয়ে ওঠে।
multiplebd-চুইঝালের -১৫ -টি  -উপকারিতা- খাওয়া এ-বং- সংরক্ষণের -নিয়ম
তবে যেহেতু চুইঝাল একটি ফুল এবং ফল জাতীয় তাই বীজ থেকেও চারা হয়ে থাকে। তবে আপনি যদি চুইঝাল গাছ লাগাতে চান তাহলে এক্ষেত্রে সিকরসহ গিট লাগালে ভালো ফলাফল পাবেন। আপনি যদি আম এবং সুপারি অর্থাৎ কার্ড জাতীয় গাছের আশপাশে লাগাতে চান তাহলে সে গাছগুলো থেকে আপনাকে ১২ থেকে ১৫ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে।

গাছ লাগানোর সময় কিছুটা গর্ত করে সেখানে চুই গাছের কাটিং লাগিয়ে ফেলুন। তুই গাছ লাগানোর পূর্বে প্রথমে গর্ত করে সে গর্তের ভেতরে কিছু পরিমাণে গোবর বজ্য দিন। এবং এগুলোর সঙ্গে সার হিসেবে যোগ করুন ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টিএসপি সার ৫০ গ্রাম পটাশ যে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশে সেখানে সাত দিন রেখে দেন।

সাত দিন হয়ে গেলে এবার সেখানে কাজ লাগিয়ে ফেলুন। চুই গাছের গোড়াতে যদি পানি জমি থাকে তাহলে গাছ পচে যায় এজন্য চুই গাছ উঁচু স্থানে লাগালে ভালো হয়।

খুলনার চুইঝালের মাংসের সুখ্যাতি

এখন আমরা আপনাদের জানাবো খুলনার চুইঝালের মাংসের সুখ্যাতি সম্পর্কে। স্বাদে এবং গন্ধে চুইঝাল একটি জনপ্রিয় মসলা যে কারণে চুইঝাল কথাটি শুনলেই জিভে পানি চলে আসবে। এজন্যই তো গরুর মাংসর সাথে চুই ঝাল মিশে রান্না করলে এর স্বাদ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর সেটা যদি হয়ে থাকে খুলনার চুইঝাল তাহলে তো আর কোন কথায় থাকলো না।

কারণ খুলনার চুইঝালের খ্যাতি রয়েছে পুরো দেশ জুড়ে। তাইতো খুলনায় যদি কেউ একবার গিয়ে থাকে তাহলে চুইঝাল রেসিপি স্বাদ নেওয়ার জন্য যেন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। খুলনায় চুই ঝালের জনপ্রিয়তার কারণে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে চুইনগর জিরো পয়েন্ট সহ নগরীর এর বিভিন্ন স্থান। আর যেগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক হোটেল রেস্টুরেন্ট।

খুলনার জিরোপয়েন্টের যে কামরুলের হোটেল রয়েছে সেখানকার বিক্রেতা ঢাকা পোস্ট কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে হোটেলটি খুব জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত হয়ে উঠেছে চুই ঝাল দিয়ে গরুর মাংসের তরকারির জন্য। মূলত অধিক মানুষ এই হোটেলে এসে থাকে এই খাবারটির জন্যই। যে হোটেলে প্রত্যেকদিন বিক্রয় করা হয়ে থাকে ২ মন মাংস।

যেটা রান্না করার জন্য প্রয়োজন হয় ১৫ থেকে ২০ কেজি চুই ঝাল। আর এই চুইঝালের মাংসকে কেন্দ্র করে আশপাশে গড়ে উঠেছে আরো ৪০টির মত হোটেল । সবকিছু মিলিয়ে খুলনার চুইঝালের মাংসের সুখ্যাতি পুরো দেশজুড়ে।

শেষ কিছু কথা

প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানিয়েছি চুইঝালের ১৫ টি উপকারিতা খাওয়া এবং সংরক্ষণের নিয়ম সহ বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি করে শেয়ার করে দিন। কারণ আপনাদের এ সকল উৎসাহ গুলো আমাদেরকে মোটিভেট করে এ সকল তথ্য সেবা গুলো আপনাদের সামনে উপস্থিত করতে।

কোথাও যদি বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে কমেন্ট করুন। আর হ্যাঁ, এ সকল তথ্য সেবা গুলো পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের এই www.multiplebd.com ওয়েবসাইটে। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সকালে সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url