বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার ও দর্শনীয় স্থান
রাজশাহী জেলার সেরা ১০ টি দর্শনীয় স্থান জানতে চাপ দিনআজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত - বাগেরহাট জেলার
বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে। আপনি যদি বাগেরহাট জেলাতে ঘুরতে যেতে চান তাহলে অবশ্যই
আপনাকে এগুলো জানতে হবে। এছাড়া আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনি আরো জানতে পারবেন
বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কেও। তাও অবশ্যই আপনার অজানা এই তথ্যগুলো
জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
এমন অনেকে আছেন যারা বাগেরহাট জেলাতে গেলেও জানে না সেখানকার বিখ্যাত খাবার
কোনটা। আপনিও যদি এ সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে চলুন আর্টিকেলটি পরে বিস্তারিত
জেনে নিন বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার নিয়ে বিস্তারিত।
ভূমিকা
বাগেরহাট জেলাতে অনেক দর্শনীয় স্থান থাকার কারণে প্রচুর মানুষ বাগেরহাট জেলাতে
ভিড় করে। তাই আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন বাগেরহাট জেলার
দর্শনীয় স্থান এবং সেখানকার খাবার সম্পর্কে। এছাড়াও জানতে পেরে যাবেন সেখানকার
হোটেল ভাড়া সহ বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত। অবশ্য বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ
পর্যন্ত পড়ুন।
বাগেরহাট কোন নদীর তীরে অবস্থিত
বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে জানার আগে
চলুন প্রথমেই আমরা জেনে নেই বাগেরহাট কোন নদীর তীরে অবস্থিত। বাগেরহাট এই
জায়গাটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি ঐতিহ্যবাহী এবং প্রাচীন জেলা। চলুন তাহলে
বিস্তারিতভাবে জেনে আসা যাক বাগেরহাট এর অবস্থান সম্পর্কে।
বাগেরহাট জেলাটি মধুমতি নদীর তীরে অবস্থিত এবং বঙ্গোপসাগরে তীরবর্তী একটি অঞ্চলে
এর অবস্থান। বাগেরহাট জেলার সদরের যে ভৈরব নদী রয়েছে তার অধিকাংশের অবস্থিত এবং
এই শহরটি ভৈরবের দক্ষিণ প্রবাহের পশ্চিম অঞ্চল তীরে অবস্থিত। মধুমতি নদী কে
কেন্দ্র করে এই এলাকায় অনেক শিল্প বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল।
যেটা বর্তমানে আর লক্ষ্য করা যায় না। বর্তমান সময়ে এসে এই বাগেরহাট জেলাটি অনেক
বড় বড় অট্টালিকা এবং মসজিদ গড়ে উঠেছে। যে কারণে মসজিদের জন্য বাগেরহাট জেলাটি
অনেক খ্যাতি রয়েছে। পিরোজপুর এবং বরগুনা জেলার পশ্চিম অঞ্চলে যে খুলনা জেলা
রয়েছে তার মধুমতি নদীর তীরে অবস্থান হচ্ছে বাগেরহাট জেলার।
বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত
বাগেরহাট জেলাতে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। এজন্য আপনি যদি কখনো বাগেরহাট যেতে
চান তাহলে আপনার জানা উচিত বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত
খাবার। এগুলো যদি আপনি জেনে থাকেন তাহলে খুব সহজে বাগেরহাট উপভোগ করতে পারবেন।
চলুন তাহলে বিস্তারিতভাবে জেনে আসা যাক বাগেরহাট কি কারণে বিখ্যাত।
বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক জেলা মূলত বিখ্যাত হওয়ার কারণ এখানকার
চিংড়ি, সুপারি এবং বিখ্যাত ষাট গম্বুজ মসজিদের জন্য। এই বাগেরহাট জেলাতে আছে
অনেকগুলো দর্শনিয় স্থান রয়েছে যেগুলো প্রজেক্টরদের আকৃষ্ট করে দারুন ভাবে।
বাগেরহাট জেলাতে ষাট গম্বুজ মসজিদের পাশাপাশি আছে অনেক বড় বড় সব মসজিদ যেগুলো
প্রাচীন কালে থেকে বিখ্যাত।
এছাড়াও বাগেরহাট জেলার আছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুন্দরবন। বাগেরহাট জেলাতে যে
পরিমাণ চিংড়ি উৎপাদন করা হয় আর কোথাও পাওয়া যায় না। এখানকার চিংড়ি মাছের যে
স্বাধ রয়েছে সেটা অন্য কোন জেলাতে আপনি খুঁজে পাবেন না। পরিশেষে বলতে হয় যে
বাগেরহাট জেলা বিখ্যাত হওয়ার কারণ হচ্ছে এখানকার ষাট গম্বুজ মসজিদ এবং চিংড়ি
মাছ এবং সুপারির জন্য।
বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার
আপনি যদি কখনো বাগেরহাট জেলাতে যেতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বাগেরহাট
জেলাতে গিয়ে সেখানকার বিখ্যাত খাবার খেতে ভুলবেন না। কিন্তু আপনি যদি না জেনে
থাকেন কোন খাবারটি বাগেরহাট জেলার সবথেকে বিখ্যাত খাবার তাহলে আপনার মনে আফসোস
থেকে যাবে সেই বিখ্যাত খাবারটির স্বাদ নিতে না পারার।
এজন্য অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে বাগেরহাটের বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে। বাগেরহাট
জেলার যেমন বিখ্যাত অঞ্চল রয়েছে তেমনি বাগেরহাট জেলাতে আছে বিখ্যাত কিছু খাবার।
চলুন তাহলে জেনে আসা যাক বাগেরহাটের সেই বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে । বাগেরহাট জেলার
বিখ্যাত খাবারের কথা যখন আসে তখন সবার প্রথমে যে কথাটি বলতে হয় সেটা হচ্ছে
বাগেরহাট জেলার চুইঝাল।
এই চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংস অথবা খাসির মাংস সেখানকার বিখ্যাত এবং পুরো বাংলাদেশে
এর খ্যাতি আছে। বাগেরহাট জেলার সেই চুই ঝাল মসলাটি বাংলাদেশের খুব প্রচলিত একটি
মসলা। এই খাবারটি শুধু বাগেরহাট না বরং বাগেরহাটের আশপাশের জেলা অর্থাৎ খুলনা
বিভাগেও বেশ কয়েকটি জেলা লক্ষ্য করা যায়। এগুলোর পাশাপাশি বাগেরহাটের আরও
বিখ্যাত খাবার আছে সেগুলো হচ্ছে হাঁসের মাংস এবং সেমাই পিঠা। আমি আশা করছি
বিষয়গুলো আপনি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
বাগেরহাট হোটেল ভাড়া
বাগেরহাট জেলাতে যেহেতু অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেজন্য সেগুলোকে কেন্দ্র
করে সেখানে বেশ কয়েকটি হোটেল গড়ে উঠেছে। আপনি যদি কখনো বাগেরহাট জেলাতে যেতে
চান তাহলে অবশ্যই সেখানে থাকতে হলে আপনার হোটেলের দরকার হতে পারে। আর আপনি যদি
হোটেল ভাড়া আগে থেকে জেনে থাকেন তাহলে এটা আপনার জন্য অনেক সুবিধাজনক। চলুন
তাহলে জেনে আসা যাক বাগেরহাটের হোটেল ভাড়া সম্পর্কে
বাগেরহাট জেলায় আজম হোটেলে যদি আপনি রাত্রি যাপন করতে যা তাহলে সেখানে আপনাকে
ভাড়া দিতে হবে ৬২৮ টাকা। এখানকার সুবিধা হিসেবে আপনি পাবেন সুন্দর মানের একটি
উন্নত হোটেল। রয়েছে ফ্রি পার্কিং সার্ভিস এবং হাই স্পিড এর ওয়ারলেস অফ ফুল
স্পিড ইন্টারনেট ব্যবস্থা।
বাগেরহাট জেলার অন্যতম একটি হোটেল হচ্ছে নিউ হোটেল গ্লোরি। বাগেরহাট জেলার তে
যে হোটেল আছে তার ভেতরে একটি খুবই বিখ্যাত এবং সৌন্দর্যময় হোটেল হচ্ছে এটি।
অন্যান্য হোটেলের মত এ হোটেলে আপনি একই ধরনের সুবিধা পাবেন। তবে এখনকার সুযোগ
সুবিধা গুলো অন্য হোটেলে থেকে একটু বেশি। এখানে আপনি যদি রাত্রে যাপন করতে চান
তাহলে প্রতি রাতের জন্য আপনাকে টাকা দিতে হবো ১২২৪। অর্থাৎ এটি একটি বিলাসবহুল
হোটেল।
হোটোল আম্বাসসদর বাগেরহাটের আরেকটি সুন্দর এবং উন্নত মানের একটি হোটেল।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দিক দিয়ে হোটেলটি অনেক উন্নত এবং রয়েছে এসি এবং নন এসি
রুম। এছাড়াও আছে এয়ারকন্ডিশনের ব্যবস্থা যেখানে আপনি খুব আরামের সঙ্গে রাত
কাটাতে পারবেন। আপনি যদি এই হোটেলের রাত্রে যাপন করতে চান তাহলে প্রতি রাতের
জন্য আপনাকে ১০০৫ টাকা ব্যয় করতে হবে।
বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান
আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যে আমরা জেনে গেছি বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত
- বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার। আপনি যদি একজন ভ্রমণ প্রেমী মানুষ হয়ে থাকেন
আর বাগেরহাট জেলাতে যদি যেতে চান তাহলে আপনাকে জানতে হবে বাগেরহাট জেলার
দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে। তাই আপনার সুবিধার কথা চিন্তা করে আজকের আর্টিকেলের
এই পর্বে আলোচনা করেছি বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে।
তাহলে চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক বাগেরহাট জেলার দর্শনীয়
স্থানগুলো।
- ষাট গম্বুজ মসজিদ
- মংলা বন্দর
- সুন্দরবন
- খান জাহান আলী মাজার
- বাগেরহাট জাদুঘর
- অযোধ্যা মাঠ বা কোদলা মাঠ
- নয় গম্বুজ মসজিদ
- খাঞ্জেলি দিঘী
- চন্দ্রমহল ইকোপার্ক
- ছয় গম্বুজ মসজিদ
আপনি যদি বাগেরহাট জেলাতে যান তাহলে অবশ্যই উপরে বর্ণিত দর্শনীয় স্থানগুলোতে
ঘুরে আসতে পারেন। আমি আশা করছি এ দর্শনের স্থানগুলোতে গেলে আপনি নতুন ভাবে নিজেকে
আবিষ্কার করতে পারবেন। এ দর্শনীয় স্থানগুলোর অবস্থান এবং বর্ণনা সম্পর্কে যদি
জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের নিচের দিকে পড়তে থাকুন।
ষাট গম্বুজ মসজিদ
বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে যদি বলতে হয় তাহলে প্রথমেই চলে আসে
বাগেরহাট জেলার ষাট গম্বুজ মসজিদের কথা। বাগেরহাট শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার
দূরে এই মসজিদের অবস্থান। এই মসজিদটির নাম ৬০ গম্বুজ হলেও এখানকার গম্বুজ সংখ্যা
৭৭ টি। আপনি যদি এই মসজিদে যেতে যান তাহলে ২০ টাকা করে টিকিট কেটে ভেতরে যেতে
হবে।
এ মসজিদটি দেখতে অনেক সুন্দর এবং এ মসজিদের গায়ে কোন ধরনের শিলালিপি নেই। এজন্য
এই মসজিদে নির্মাণশাল এবং নির্মাতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য নিশ্চয়তার সাথে বলা সম্ভব
না। তবে সেখানে যে ধরনের স্থাপত্য শৈলী রয়েছে সেগুলো দেখে বিশেষজ্ঞরা ভেবেছেন যে
এটা খান জাহান আলী নির্মাণ করেছিলো।
আপনি যদি কখনো এই ষাট গম্বুজ মসজিদে গিয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন এখানকার পূর্ব দিকে
দেওয়ালে রয়েছে 11 টি বিরাট আকারের খেলনাযুক্ত দরজা। এছাড়াও দেখতে পাবেন এই
মসজিদের চারটি কোণে রয়েছে চারটি মিনার। যেগুলো গোলাকার হয়ে উপরের দিকে শুরু
হয়ে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে এই মসজিদের সৌন্দর্য আপনাকে খুব দারুণভাবে মুগ্ধ করে
তুলবে।
মংলা বন্দর
বাগেরহাট জেলাতে অবস্থিত এই মংলা বন্দরটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম একটি
বন্দর। বিশ্বে যতগুলো প্রধান বন্দর আছে প্রায় প্রত্যেকটি বন্দরের সঙ্গে রয়েছে
এই মঙ্গলা বন্দরের যোগাযোগ। খুলনা শহর থেকে এই বন্দর অবস্থান ৪৮ কিলোমিটার
দক্ষিণে। আপনি বাগেরহাট জেলার এ মংলা সমুদ্র বন্দর টা দেখবেন সেখানে বিভিন্ন
ধরনের বিভিন্ন বাইরের দেশের জাহাজ গুলো।
যেটা আপনার মনে নতুন এক অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করবে। এ বন্দরটি প্রায় 24 ঘন্টা থেকে
খোলা থাকে এবং এখানে ২২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা জাহাজ প্রবেশ করতে পারে। এই মংলা
বন্দরটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল ১৯৫০ সালের ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে। আপনি যদি এম
বন্ধরে গিয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন এখানে রয়েছে ১১ টি জেটি, পণ্যঝালায় এবং খালাস
করার জন্য আছে ৭ টি শেড এছাড়াও দেখতে পাবেন আটটি ওয়ারহাইজ। এছাড়াও আছে নদীর
গভীর প্রান্তে ১২ টি ভাসমান নোঙ্গরস্থান।
সুন্দরবন
আপনি নিশ্চয়ই জেনে গেছেন বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত
খাবার। এবার আসি দর্শনের স্থানগুলোতে। আপনি নিশ্চয়ই সুন্দরবন এর নাম শুনেছেন। আর
কেনই বা শুনবেন না কারণ সুন্দরবন শুধু আমাদের বাংলাদেশের না বরং এটা সারা পৃথিবীর
একটি প্রাকৃতিক বিস্ময়কর স্থান।
সুন্দরবন ভাগ পাওয়ার যে পাঁচটি জেলা আছে তার ভিতরে একটি হচ্ছে বাগেরহাট। এজন্য
অবশ্যই আপনি এই জায়গাতে ঘুরতে যেতে পারেন। এই সুন্দরবন গেলে আপনি দেখতে পাবেন
বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি। বিশ্বের বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা মিলবে
এখানে। এছাড়াও আপনি দেখতে পাবেন অনেক ধরনের পাখি, সাপ, কুমির, হরিণ, চিতা সহ
অনেক প্রজাতির প্রাণী।
খানজাহান আলী মাজার
বাগেরহাট জেলার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান হচ্ছে খানজাহান আলী মাজার। এটা মূলত
খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলাতে অবস্থিত। বাগেরহাট জেলাতে বিশিষ্ট ব্যক্তির যে
কয়জন আছে তার ভিতরে একজন হচ্ছে হযরত খান জাহান আলী (র.)। আপনি যদি এখানে গিয়ে
থাকেন তাহলে দেখবেন এখানকার সমাধি গুলোর স্থাপত্যগুলো দেখতে অনেকটা ষাট গম্বুজের
মতো।
এই সম্বন্ধের যে প্রাচীর আছে তার উচ্চতা ২৫ ফুট এবং এর সাথে আপনি দেখতে পাবেন
একটা গম্বুজ। দেশ-বিদেশের অনেক মানুষরা প্রতিদিন এখানে ভিড় জমায়। প্রতিবছর ২৫
অগ্রহায়ণে এখানে একটি করে ওরস অনুষ্ঠিত হয়। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
বাগেরহাট জাদুঘর
বলছিলাম বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর কথা। বাগেরহাট দর্শনীয় স্থানগুলো
সম্পর্কে কথা হবে আর বাগেরহাট জাদুঘর সেখানে জায়গা পাবে না তা কি হয়। তাইতো
বাগেরহাট জাদুঘর হচ্ছে বাগেরহাট জেলার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। প্রতিবছর
এখানে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে এই বাগেরহাট জাদুঘর দেখতে।
তাই আপনি যদি বাগেরহাট জেলাতে ভ্রমণ করতে চান তাহলে অবশ্যই বাগেরহাট জেলার এ
জাদুঘরে যেতে পারেন। বাগেরহাট শহরে যে প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে সেটার ঐতিহ্য
সংরক্ষণ এবং এটা সবার সামনে তুলে ধরতে ইউনেস্কো এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে
১৯৪৪ সালে ৫২০ বর্গমিটার এলাকা নিয়ে এই বাগেরহাট জাদুঘরটি নির্মিত করা হয়েছিল।
পরে জনসাধারণের জন্য ২০০১ সেপ্টেম্বর মাসে পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়।
অযোধ্যা মঠ বা কোদালা মঠ
অযোধ্যা মঠ বা কোদলা মঠ এর অবস্থান পুরাতন বাগেরহাটে রূপসা সড়কের বাজার
যাত্রাপুর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে প্রাচীন ভৈরব পূর্ব নদীর তীরের কোদালা
নামক গ্রামে। এ মঠের তলদেশটি নির্মিত হয়েছে বর্গাকারে। আপনি যদি কখনো এখানে
গিয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন মঠের উপরে ইটের তৈরি প্রাচীর রয়েছে। এই মাঠে যে ইট
গুলো ব্যবহার করা হয়েছে এগুলো পালিশ করা এবং বেশ উচ্চমানের।
ভূমি থেকে এই মঠ এর উচ্চতা প্রায় ৬৪ ফর ৬ ইঞ্চি এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের অলংকার
দেখতে পাবেন। পোড়ামাটির এই মতের অলংকার গুলো দেখতে অনেক সুন্দর যা আপনাকে আকৃষ্ট
করবে। যেন আপনি যদি বাগেরহাট জেলাতে ভ্রমণ করতে যান আর হাতে যদি সময় থাকে তাহলে
আপনি এই কোদালা মঠ ভ্রমণ করতে পারেন।
নয় গম্বুজ মসজিদ
নয় গম্বুজ মসজিদ এর অবস্থান বাগেরহাট জেলার জিন্দাপীর মসজিদের দক্ষিণ পাশে। ধারণ
করা হয় যে এই নয় গম্বুজ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৫ শতাব্দীতে। আপনি এই নয়
মসজিদ গম্বুজে গেলে দেখতে পাবেন এই মসজিদের চার কোণায় আছে চারটি মিনার সুউচ্চ
গোলাকার টাওয়ার। পুরো মসজিদের গায়ে আপনি দেখতে পাবেন পরামাটের কারো কাজ।
মসজিদের দেওয়াল গুলোতে আপনি দেখতে পাবেন বিশাল আকৃতির একটি গম্বুজ এবং এর চারপাশ
ধরে রয়েছে ৮ টি গম্বুজ। এই মসজিদের সামনের অংশের দরজা আছে মোট তিনটি। মসজিদের
মেহরাবের পশ্চিম দিকে দেয়ালে আপনি দেখতে পাবেন ফুলের নকশা করা টেরাকোটা। এজন্য
আপনি বাগেরহাট জেলার এই ঐতিহ্যবাহী নয় গম্বুজ মসজিদের যেতে পারেন। যা আপনাকে
নতুন এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী করে তুলবে।
খাঞ্জেলি দিঘী
বাগেরহাট জেলাতে যতগুলো দর্শনীয় স্থান আছে তার ভিতরে একটি অন্যতম হচ্ছে খাঞ্জেলি দিঘী। এই দিঘিটির অবস্থান হযরত খান জাহান আলি (র.) মাজারের দক্ষিণ পাশের প্রায় ২০ বিঘা জমি নিয়ে। এ দিঘির যে প্রধান ঘাট আছে এটা দেখতে অনেক সুন্দর এবং প্রশস্ত। এই দিঘির আরেকটি বিশেষ দিক হচ্ছে মহিলাদের জন্য রয়েছে আলাদা ঘাটের সুব্যবস্থা।
এ দেখিতে কালাপাহাড় এবং ধলা পাহাড় নামে বিশাল সাইজের দুটি কুমি ছাড়া হয়েছিল। এ দিঘির পানি গুলো অনেকটাই সুপেয়। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা রোগবালায় থেকে মুক্তি হওয়ার জন্য এই দিঘির পানি পান করে তো কেউ আবার দীঘিতে গোসল করে থাকে। আশা করছি উপরে বর্ণিত বিষয়গুলো আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
চন্দ্রমহল ইকোপার্ক
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলটি পরে নিশ্চয়ই আপনি জেনে গেছেন বাগেরহাট কিসের জন্য
বিখ্যাত - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার। চলুন আমরা এবার জেনে আসি বাগেরহাট জেলার
আরো একটি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে। চন্দ্রমহল নামক একটি ভবনকে কেন্দ্র করে মৃত
বাঘের হাতে এই চন্দ্রমহল ইকো পার্ক গড়ে উঠেছে। এই চন্দ্র মহলটি তৈরি করা হয়েছে
তাজমহলের আদলে।
মূলত ২০০২ সালে এই চন্দ্রমহল ইকোপার্ক কে প্রতিষ্ঠিত করেন সেলিম হুদা। এই চন্দ্র
মহলের যে সৌন্দর্য আছে সেটা দেখে যে কোন পর্যটকই বাধ্য হবেন মুগ্ধ হতে। বিশেষ করে
প্রখর রোদের আলো যখন এই মহলের উপরের অংশের সোনালী অংশ পড়ে তখন এটা দেখতে মনে হয়
যেন মহলটি নির্মিত করা হয়েছে দামি ধাতব কোন পদার্থ দিয়ে।
এই মহলে গেলে আপনি দেখতে পাবেন রাস্তার মাঝপথে আছে পুরো কাছে তৈরি উল্টো পাশের
বড় বড় মাছ। যে কারণে সুন্দরবনের লাখো পর্যটক এখানে দেখতে চন্দ্রমহলের এই
সৌন্দর্য। কারণ এ চন্দ্র মহলটি মূলত সুন্দরবন যাওয়ার পথে অবস্থিত। পর্যটকদের
আকর্ষণ করার জন্য এখানে বিভিন্ন ধরনের মৃত্তিকা শিল্প, বাস এবং বেতের শিল্প,
নানান প্রস্তর শিল্প, বিভিন্ন ধরনের মতে নির্মাণ করে রাখা হয়েছে।
এই ইকো পার্কের সব থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ, এছাড়াও আছে
অনেক পরিমাণে ফলোজ এবং বৃক্ষ। আপনি এই ইকো পার্কের মূল মহলে যদি গিয়ে থাকেন
তাহলে সেখানে দেখবেন এখানে রয়েছে অনেক বেশি-বিদেশে পুরাতন মুদ্রা, প্রাচীন আমলের
ঘড়ি, বিভিন্ন রঙের পাথর, সবথেকে ছোট গ্রামোফোন, যুদ্ধের অস্ত্র, বিভিন্ন ধরনের
ক্ষুদ্র প্রতঙ্গ, রুপার চায়ের পাত্র ইত্যাদি সব জিনিসপত্র।
এ চন্দ্র মহল ইকো পার্কটি খোলা হয় প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
তবে হ্যাঁ আপনি যদি এই চন্দ্রমহল ইকো পার্কে প্রবেশ করতে চান তাহলে অবশ্যই টিকিট
কেটে যেতে হবে এবং টিকিট মূল্য ৪০ টাকা। তাই আমি আপনাকে বলব আপনি যদি বাগেরহাটে
ঘুরতে যেতে চান তাহলে অবশ্যই এ দর্শনের স্থানে যেতে পারেন।
ছয় গম্বুজ মসজিদ
অনেকেই বলেন রেজা খোদা মসজিদ আবার অনেকেই বলেন ছয় গম্বুজ মসজিদ। তবে ছয় গম্বুজ
মসজিদ হিসেবেই পরিচিত বেশি রয়েছে বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত এই মসজিদটির। এ
মসজিদটির ছয়টি কলাম ছিল যেগুলো টিকে থাকতেও পাথরের কলমের সহায়তায়। চলুন তাহলে
ছয় গম্বুজ মসজিদ বিস্তারিত জেনে আসা যাক।
আপনি যদি বাগেরহাট জেলার এই ছয় গম্বুজ মসজিদের যেতে চান তাহলে ঢাকা হতে সরাসরি
বাগেরহাট যেতে পারবেন। এই মসজিদের পূর্ব দিকে এবং উত্তর দিকে যথাক্রমে তিনটি এবং
দুটি করে প্রবেশদ্বার ছিল যেগুলো খিলানের সাহায্যে তৈরি করা। আপনি যদি একটু
ভালোভাবে খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন মসজিদের চার কোণে আছে চারটি অষ্টভুজাকৃতির
বুরুজ। এখানে যেন বায়ু চলাচল করতে পারে এজন্য মোটা দেওয়ালের ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে
টেরাকোটার ছিদ্র জালি।
শেষ কিছু কথা
আজকের পুরো আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে জানিয়েছি বাগেরহাট নিয়ে বিস্তারিত। আপনি
যদি বাগেরহাট জেলাতে ভ্রমণ করতে চান তাহলে অবশ্যই স্থানগুলোতে যেতে পারেন যেগুলো
উপরে আলোচনা করা হয়েছে। আর হ্যাঁ, বাগেরহাট জেলায় গেলে সেখানকার চুইঝাল মসলার
স্বাদ নিতে ভুলবেন না। আর্টিকেলটি কোথাও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন।
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছিলাম বাগেরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত
- বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে
থাকেন বা আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। আর হ্যাঁ,
আপনি যদি এ সমস্ত তথ্যগুলো নিয়মিত পেতে চান তাহলে ভিজিট করুন আমাদের
এই www.multilebd.com ওয়েবসাইটে।
মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url