গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ- ভাইরাস জ্বর হলে করণীয় জানতে চাপ দিনআপনি যদি গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না সম্পর্কের জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আর্টিকেলের ভেতরে আলোচিত হয়েছে গর্ভবতী মায়ের খাওয়ার সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত। আর্টিকেলটি পড়লে আরো জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত।
multiplebd-গর্ভবতী- মায়ে-র নিষিদ্ধ- খাবার- তালিকা - গর্ভাবস্থায়- কি- কি -ফল -খাওয়া- উচিত -না
তাই অবশ্যই বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আর জেনে নিন আপনার অজানা গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না এ সকল তথ্যগুলো।

ভূমিকা

গর্ভবতী অবস্থায় একজন গর্ভবতী মাকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়। এ সময় খাবার তালিকাতে অনেক কিছু যোগ করতে হয় এবং বিরত থাকতে হয়। যে বিষয়গুলোর সম্পর্কে আর্টিকেলের ভেতরে পুরো আলোচনা রয়েছে। তাই অবশ্য বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। এছাড়াও আর্টিকেলটি পড়লে আপনি গর্ভবতী অবস্থায় খাবার নিয়ে আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না

আজকের আর্টিকেলে আমাদের আলোচনার বিষয় ছিল গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না। গর্ভাবস্থায় নারীদেরকে সব বিষয়ে সচেতন থাকতে হয়। কারণ সচেতনতার অভাবের ফলে একটু এমন তেমন হলেই গর্ভপাতসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অনেকে জানেন না গর্ভপাত অবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না।
অনেকে আবার এই ফলগুলো খেয়ে ফেলে যা তার জন্য ক্ষতিকর। তাহলে চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নিন গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না।
  • পেঁপেঃ পেঁপে অনেক উপকারী এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল হওয়ার পরেও এটা গর্ভবতী অবস্থায় এগিয়ে চলাই ভালো। এর কারণ হচ্ছে পেঁপেতে উপস্থিত থাকে ল্যাটেক্স নামক উপাদান। এজন্য গর্ভবতী অবস্থায় যদি পেঁপে খাওয়া হয় তাহলে এটা শরীরের তাপমাত্রা কি আরো বেশি বৃদ্ধি করবে এবং বিভিন্ন ক্ষতি করবে যেমন - রক্তপাত কিংবা গর্ভপাত ও ঘটাতে পারে। এছাড়াও বোনের বিকাশের ক্ষেত্রেও বাধাগ্রস্ত করে।
  • তেঁতুলঃ অনেকে রয়েছে যারা গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে টক তেঁতুল খেয়ে থাকে। কিন্তু তেঁতুল খাওয়া হলে গর্ভাবস্থায় তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ কারণ হচ্ছে তেতুলে আছে অনেক পরিমাণ ভিটামিন সি। এজন্য গর্ভাবস্থায় এটা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
  • আনারসঃ আনারস আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হলেও গর্ভাবস্থায় এটা একদমই ঠিক না। এর কারণ হচ্ছে আনারস খাওয়া হলে তা জরার ভিতর তীব্র সংকোচন তৈরি করতে পারে। আর যার ফলে গর্ভবত হতে পারে। এছাড়াও অকাল প্রশ্নভর সম্ভাবনা থাকে। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় আনারস খাবেন না।
  • কামরাঙ্গাঃ অনেকের রয়েছেন যারা অনেক পরিমাণ কামরাঙ্গা খেতে পছন্দ করেন। অনেকের কাছে এটা আবার প্রিয় একটি ফল। কিন্তু গর্ভাবস্থায় যদি কামরাঙ্গ খাওয়া হয় তাহলে এটা সৃষ্টি করতে পারে গর্ভপাতের মতো ঘটনা গুলো। এজন্য গর্ভবতী অবস্থায় আপনি কামরাঙ্গা খাবেন না।
  • খেজুরঃ আমাদের শরীরের জন্য খেজুর অনেক পুষ্টিকর ফল হওয়ার পরেও গর্ভাবস্থায় এটা নিষিদ্ধ একটি ফল। এর কারণ হচ্ছে খেজুর খাওয়া হলে তার শরীর উত্তপ্ত করে এবং পথ ফেলতে পারে জরাযুতেও। এছাড়াও ক্ষতি করতে পারে ভ্রুণেরও। এজন্য অবশ্যই গর্ভবতী অবস্থায় বেশি পরিমাণ খেজুর না খাওয়াই ভালো।
  • তরমুজঃ গরমকাল শুরু হলে যেন প্রতিটি ঘরে ঘরে তরমুজ খাওয়া শুরু হয়ে যায়। কিন্তু তরমুজ খাওয়া হলে এটা শরীরের আর্দ্রতাকে ঠিক রাখার পাশাপাশি শরীর থেকে বের করে দেয় বিষাক্ত পদার্থ। অনেক সময় শরীর থেকে এসব টক্সিন ধ্বংস করতে গিয়ে বোনের অনেক ক্ষতি করে দেয়। এজন্য আপনি বিরত থাকুুন তরমুজ খাওয়া থেকে।
  • হিমায়িত ফলঃ গর্ভাবস্থায় হিমায়িত ফল খাওয়া ঠিক হবে না। এর কারণ হচ্ছে এ ফল খাওয়া হলে তা আপনার পেটে শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এজন্য আপনি এই ফল না খেয়ে মৌসুমী ফল খান। যেটা পেটের সন্তান এবং গর্ভবতী মা দুজনের জন্যই ভালো।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত

অনেকেই জানেন না গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত। গর্ভবতী অবস্থায় যে বিষয়গুলো আপনার জানা উচিত। তাইতো আর্টিকেলের এ অংশে আপনাদের সুবিধার্থে আমরা জানাবো গর্ভবতী অবস্থায় আপনি কি কি ফল খেতে পারেন। আপনি যদি এ সকল বিষয়গুলো না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটি পড়ে বিস্তারিত জেনে নিন।

  • আপেলঃ গর্ভবতী অবস্থায় প্রত্যেকদিন অন্তত পক্ষে একটি আপেল খাওয়া হলে এটা অনেক ভালো। গর্ভবতী অবস্থায় আপেল খাওয়া হলে তা হিমোগ্লোবিনের শূন্যতাকে পূরণ করার মাধ্যমে রোধ করে অ্যামিনোকে। এছাড়াও গর্ভের বাচ্চার এলার্জি এবং এজমা হওয়ার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়।
  • পেয়ারাঃ অনেক পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু পেয়ারা ফলের দামও কম হওয়ার কারণে খুব সহজেই আমরা এটা পেয়ে যাই। গর্ভবতী অবস্থায় পেয়ারা খাওয়া উচিত। এর কারণ হচ্ছে পেয়ারাতে থাকা অবদানগুলো গর্ভবতী অবস্থায় জন্য খুবই কার্যকরী। কথায় আছে একটি পেয়ারা খাওয়া হলে তা চারটি আপেল এবং চারটি কমলার পুষ্টিগুণের সমান। এছাড়াও পেয়ারা খাওয়া হলে গর্ভাবস্থায় তার কষ্টকাঠিন্য রোগ রোধ করতে ভূমিকা রাখে।
  • কমলাঃ ব্রণের মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ড গঠন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল হচ্ছে কমলা। কারণ এর ভেতরে থাকা উপাদানগুলো এসবের ক্ষেত্রে কার্যকারিতা ভূমিকা রাখে। এছাড়াও কত মিনিট পরিমাণ ফাইবার এবং ফলিক এসিডের অন্যতম একটি উৎস হচ্ছে কমলা।
  • কলাঃ গর্ভবতী অবস্থায় আপনি প্রত্যেকদিন অন্তত ১ টা করে কলা খায়। এর কারণ হচ্ছে কলাতে থাকে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম। ইলেক্ট্রোলাইট এর ভারসাম্যকে ঠিক রাখার জন্য কলার ভূমিকা অনেক। এছাড়াও গর্ভবতী অবস্থায় কলা খাওয়া হলে তা শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো বেশি বৃদ্ধি করে।
  • কিউইঃ গর্ভবতী অবস্থায় আপনি যদি ফল খেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি খেতে পারেন কিউই ফল। কারণ এই ফলে উপস্থিত রয়েছে অনেক পরিমাণ ফ্যালিক এসিড, ফাইবার, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা হার্টের জন্য খুবই ভালো। এছাড়াও এই ফল খাওয়া হলে তার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রকে কম করে এবং গর্ভবতী কালীন সময়ে ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অন্যন্য এক ভূমিকা রাখে।

গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

আপনি নিশ্চয়ই জানতে চাচ্ছেন গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না। আর্টিকেলটি পরে আমরা তো জানলাম যে গর্ব অবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা। চলুন তাহলে আমরা এবার জেনে আসি গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা। গর্ভকালীন সময়ে যে খাবারগুলো খাওয়া একদমই ঠিক না। আর সেগুলো হচ্ছে।

  • পনির বা চিজঃ আপনি নিশ্চয়ই বার্গার খেতে পছন্দ করেন। আর এবারের ভিতরে যদি চিজ বেশি করে না থাকে তাহলে নিশ্চয়ই এটা আপনার ভালো লাগেনা। কিন্তু গর্ভবতী অবস্থায় যদি এই পনির বা চিজ বেশি করে খাওয়া হয় তাহলে এটা আপনার জন্য খুবই বিপদজন। এর কারণ হচ্ছে কে যেভাবে তৈরি করা হয় অর্থাৎ সম্পূর্ণ কাঁচা দুধ থেকে। একটা গর্ভবতী মা এবং পেটের সন্তানের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
  • কাঁচা ডিমঃ অনেকেই বলেন যে কাঁচা ডিম খাওয়া হলে এটা গর্ভবতী অবস্থায় খুবই ভালো। কিন্তু এ ধারণাটি একদমই ভুল। এর কারণ হচ্ছে গর্ভাবস্থায় যদি কাঁচা ডিম খাওয়া হয় তাহলে এমন এক ধরনের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যা গর্ভকালীন অবস্থায় হতে পারে। এজন্য গর্ভবতী অবস্থায় আপনাকে বিরত থাকতে হবে কাঁচা ডিম খাওয়া থেকে।
  • চা ও কফিঃ যারা গর্ভবতী অবস্থায় অধিক পরিমাণে চা ও কফি খেয়ে থাকে অনেক সময় এটা সরাসরি গর্ভবতী মায়ের প্লাসেন্টা তে যাওয়ার মাধ্যমে শিশুর হৃৎপিণ্ডে প্রভাব ফেলতে পারে
  • কলিজাঃ কলিজা অথবা কলিজা তৈরি খাবার গুলোতে অনেক ভিটামিন উপস্থিত থাকে। কিন্তু এই অতিরিক্ত পরিমাণ ভিটামিন গর্ভবতী অবস্থায় প্রথম দিকে একদমই বিপদজনক। এজন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কতটুকু ভিটামিন আপনার জন্য গ্রহণযোগ্য ঠিক ততটাই খান। খেয়াল রাখতে হবে এ সময় আপনার খাওয়া প্রত্যেকটা খাবারই কিন্তু প্রভাব ফেলবে আপনার পেটের সন্তানের উপর।
  • কাঁচা অথবা অর্ধ সিদ্ধ মাছঃ গর্ভবতী মায়ের জন্য অবশ্যই প্রত্যেকটা খাবারের সচেতন থাকা উচিত। গর্ভবতী অবস্থায় যদি কাঁচা কিংবা অদ্ধা সিদ্ধ মাছ খাওয়া হয় তাহলে এখানে থাকা উপস্থিত ক্ষতিকর যে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা আমরা খালি চোখে দেখতে না পাওয়ার কারণে এ সকল ব্যাকটেরিয়া অথবা জীবাণু মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে গর্ভবতী অবস্থায়। এর পাশাপাশি ভ্রুণের ও ক্ষতি হতে পারে। এজন্য অবশ্যই গর্ভকালীন সময়ে কাঁচা বা অর্ধ সিদ্ধ মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • মদ্যপান কিংবা অন্যান্য নেশাঃ যেকোনো সময়ের জন্যই মদ্যপান অনেক খারাপ একটা অভ্যাস। বর্তমানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরা আসক্ত হচ্ছে মধ্যপানে। কিন্তু আপনি যদি গর্ভবতী অবস্থায় মদ্যপান করে থাকেন কিংবা ধূমপান করেন তাহলে এটা অবশ্যই আপনার গর্ভে থাকা বাচ্চার উপর মারাত্মক ভাবে পথ ফেলবে। ভ্রনের বিকাশ ঘটতেও এর রয়েছে ব্যাপক বাধা। এমনকি সম্ভাবনা থাকে শিশুর প্রতিবন্ধী হওয়ার।

গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না

প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে এতক্ষণ তো আপনি নিশ্চয়ই জেনে গেছেন গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না।অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না। যে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবশ্যই আপনার জানা উচিত। কারণ আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন আর নিষিদ্ধ এসকল খাওয়ার যদি খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য তা ক্ষতিকর।

multiplebd-গর্ভবতী- মায়ে-র নিষিদ্ধ- খাবার- তালিকা - গর্ভাবস্থায়- কি- কি -ফল -খাওয়া- উচিত -না
  • কিং ম্যাকরেলঃ কিং ম্যাকরেল মাছের নাম শুনে হয়তো বা আপনি অবাক হচ্ছেন। আসলে অবাক হওয়ারই কথা কারণ এটা হচ্ছে একটি সামুদ্রিক প্রজাতির মাছ। এই মাছের ভেতরে আয়রনের যে পরিমাণ সেটা অনেক বেশি পরিমাণে রয়েছে। এছাড়াও ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ সহ পঠিত রয়েছে বেশি পরিমাণ। এই মাছের ভেতরে মিথাইল মার্কারি নামক যে পদার্থ রয়েছে এটা রক্তের ভেতরে নেশার মাধ্যমে তৈরি করতে পারে বিভিন্ন জটিলতা। এছাড়াও হরমোন খরনেও বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য গর্ভবতী অবস্থায় এ মাছ খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন ।
  • টাইল ফিশঃ গর্ভাবস্থায় নিষিদ্ধ যে মাছগুলো রয়েছে তার ভিতরে একটি হচ্ছে টাইল ফিশ। এর ভেতরে থাকা উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর না হলেও গর্ভবতী অবস্থার সময় এটা অনেক ক্ষতিকর। কারন টাইল ফিশ মাছে রয়েছে মিথাইল মার্কারি নামক এক ধরনের ক্ষতিকর উপাদান। যেটা স্নায়ুতন্ত্র এমনকি শ্বসনতন্ত্রের ও ক্ষতি করতে পারে।
  • হিমায়িত মাছঃ বর্তমানে খুব সহজে প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে হিমায়িত মাছ খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। বর্তমানে অনেক সামুদ্রিক মাছ গুলো পাওয়া যাচ্ছে হিমায়িত অবস্থায় যেমন - চিংড়ি, ইলিশ সহ অনেক রকম সামুদ্রিক মাছ। এই মাছগুলো যদি গর্ভাবস্থায় খাওয়া হয় তাহলে এগুলো শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ মাছগুলো হিমায়িত করতে গিয়ে যদি বেশি পরিমাণ হিমায়িত হয়ে যায় তাহলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। যা গর্ভবতী অবস্থায় তৈরি করতে পারে বিভিন্ন জটিলতার। এজন্য আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এ সময়ে এরিয়ে চলবেন হিমায়িত মাছ।
  • সাশিমিঃ সামুদ্রিক মাছগুলোর ভেতরে পুষ্টিগুণে অনন্য একটি মাস হচ্ছে সাশিমি। কিন্তু গর্ভবতী অবস্থায় এটা খাওয়া একদমই ঠিক না এর কারণ হচ্ছে এর ভিতরে থাকা খনিজ উপাদান গুলো গর্ভকালীন সময়ে মানিয়ে নেয়ার সম্ভব হয় না। এজন্য গর্ভবতী অবস্থায় এটা তৈরি করতে পারে শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা।

গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা

অনেকেই জানতে চেয়েছেন গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা সম্পর্কে। এজন্য আর্টিকেলের এই অংশে আলোচিত হয়েছে গর্ভবতী মায়ের প্রত্যেক দিনের এসব খাবার তালিকা সম্পর্কে। আর্টিকেলটি পড়ে নিশ্চয়ই আপনি জেনে গেছেন গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না।

চলুন তাহলে এবার আমরা প্রত্যেক দিনের খাবার তাহলে কি সম্পর্কে জেনে আসি। সকালে যখন ঘুম থেকে উঠবেন ঘুম থেকে উঠার পর সঙ্গে সঙ্গে এক গ্লাস পানি খেয়ে ফেলুন। আপনার যদি খিদে পায় তাহলে এক্ষেত্রে কিছু ড্রাই ফুড খেতে পারেন যেগুলো গর্ভবতী অবস্থায় খাওয়া যায়। আশা করছি এগুলো আপনি জানতে পেরেছেন আর্টিকেলটি পড়ে। তাই আমি আর বললাম না এই খাবারগুলো সম্পর্কে। সকালে যখন নাস্তা করবেন নাস্তা তে তাজা ফল রাখুন।

তবে কামরাঙ্গা, তেতুল, তরমুজ প্রভৃতি যে নিষিদ্ধ খাবার রয়েছে গর্ভাবস্থায় এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সকালের নাস্তা খুব দেরী না করে সকাল ৯ টার ভেতর শেষ করুন। নাস্তার করার পর যদি আপনার খিদে পায় তাহলে এক্ষেত্রে আপনি স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন। দুপুরে যখন খাবেন তখন অবশ্যই ১ টা থেকে দুপুর ২ টার ভিতরে সেরে ফেলুন।

খাবার তালিকাতে আপনি প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি এবং ডাল রাখতে পারেন। এগুলো আপনার জন্য প্রচুর উপকারী হবে। সন্ধ্যাবেলাতে আপনি কিছু খেয়ে নিতে পারেন। রাতের খাবার রাত ৯ টা থেকে ১০ টার ভিতরে, খাওয়া ভালো। এক্ষেত্রে আপনার মেনু হতে পারে গর্ভাবস্থায় যে খাবারগুলো খাওয়া দরকার। আপনি দুপুরের মতোই মেনু বানিয়ে খেতে পারেন।

খুব বেশি পরিমাণ না খেয়ে রাতে হারতে খাওয়াই ভালো। তাহলে এটা আপনার খাবার হজম করতে সুবিধা করবে এবং শরীর ভালো থাকবে। আশা করছি আপনি বিস্তারিতভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন।

গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি 

গর্ভবতী অবস্থায় খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের সচেতনতা পালন করতে হয়। কারণ এটা আপনার শরীর এবং গর্ভের সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে। অনেকেই জানতে চেয়েছেন গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি ? যে বিষয়টা সম্পর্কে অবশ্যই জানা উচিত। চলুন তাহলে আপনি এবার এ বিষয়ে সম্পর্কে জেনে নিন।

আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় আপনি শসা খেতে পারবেন। এটা আপনার শরীরের জন্য ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া ঠিক হবে না এতে করে আপনার বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতে পারে। এজন্য অবশ্যই পরিমাণমতো খান।

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না 

আপনি কি জানেন গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না ? যদি না জেনে থাকেন তাহলে চিন্তার একদমই কারণ নেই। কারণ আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে আমরা আজকের আর্টিকেলের এ পর্বে আলোচনা করব গর্ভবতী অবস্থায় আপনি কি কি সবজি খেতে পারবেন না। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে আসা যাক।
  • সজিনাঃ সজিনা অন্যতম একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি হলেও গর্ভাবস্থায় এটা খাওয়া ঠিক না। এর কারণ হচ্ছে সজিনাতে থাকা আলফা সিস্টারেল নামের যে উপাদান রয়েছে তা সৃষ্টি করতে পারে গর্ভপাতের মত দুর্ঘটনাও। এজন্য আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি সজিনা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • করলাঃ করলাতে উপস্থিত আছে মারোডিসিন,গ্লাইকোলাইসিস,নাম ও ক্ষতিকর কিছু পদার্থ। যেগুলো গর্ব কারীন সময়ে খাওয়া হলে গর্ভবতী মা এবং পেটের সন্তানের জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি করে। এজন্য আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই সময়ে আপনার এবং আপনার পেটের সন্তানের সুস্থতার কথা ভেবে করলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • আ্যলোভেরাঃ অনেকেই রয়েছে যারা পেট পরিষ্কার করতে প্রতিনিয়ত অ্যালোভেরা জুস খেয়ে থাকে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় যদি আ্যলোভেরা খাওয়া হয় তাহলে এটা তৈরি করতে পারে গর্ভপাত। এজন্য গর্ভবতী অবস্থায় এটা থেকে বিরত থাকুন।
  • পেঁপেঃ গর্ভবতী অবস্থাতে মুখরুচির জন্য অনেকেই পেঁপে খেয়ে থাকে। কিন্তু পেতে উপস্থিত থাকে এক ধরনের ল্যাট্রেক নামক উপাদান যা গর্বে থাকা সন্তানের ক্ষতি করে দিতে পারে। এজন্য গর্ভবতী অবস্থায় কাঁচা কিংবা আধা পাকা পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

গর্ভাবস্থায় টক খাওয়া যাবে কি? 

গর্ভবতী অবস্থায় টক খেতে মন চাই। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে যে টক খাওয়া যাবে কি গর্ভবতী অবস্থায়। যে বিষয়টা সম্পর্কে অবশ্যই আপনার জানা উচিত গর্ভাবস্থায় টক খাওয়া যাবে কি। তাহলে চলুন এবারে বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন। আর এতক্ষণ তো আমরা জানলামই গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না।
multiplebd-গর্ভবতী- মায়ে-র নিষিদ্ধ- খাবার- তালিকা - গর্ভাবস্থায়- কি- কি -ফল -খাওয়া- উচিত -না
গর্ভবতী অবস্থায় আপনি টক খেতে পারেন তবে এটা পরিমাণ মতো খেতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণ যদি খাওয়া হয় তাহলে এটা আপনার জন্য ক্ষতি হতে পারে। আপনি কমলালেবু টমেটো মালটা ইত্যাদি ফলগুলো খেতে পারেন এক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না। তবে এক্ষেত্রে আনারস খাওয়া একদমই ঠিক হবে না। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকাকে যে খাবারগুলো রাখতে হয় এটা অনেকেরই অজানা। যা এখন আপনি জানতে পারবেন আর্টিকেলটি পড়ে। চলো তাহলে এবার জানা যাক। গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে প্রথম এক মাসে প্রোটিন প্রয়োজন হয় প্রত্যেকদিন ৭০-১০০ গ্রাম। এজন্য খাবার তালিকাতে প্রোটিনযুক্ত খাবার রকম যেমন - মাছ, মাংস, ডাল, ইত্যাদি। প্রথম এক মাসের খাবার তালিকা তে অবশ্যই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গুলো রাখা উচিত। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

গর্ভবতী অবস্থায় প্রথম মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকাকে যোগ করুন ক্যালসিয়াম সমিত খাবার। কারণ এ সময় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্য গর্ভবতী সময়ে এই সময়ে এসে খাবার তালিকাতে যোগ করুন ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন -পালং শাক, ডুমুর, বাঁধাকপি, ইত্যাদি সকল খাবার গুলো। শরীরের যখন ক্যালসিয়াম গুলো বৃদ্ধি পাবে তখন আপনার শরীরের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হতে পারে এজন্য। প্রত্যেকদিন সকালে অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য গায়ে রোদ লাগান।

৪ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

অনেকেই প্রশ্ন করেছেন ৪ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সম্পর্কে। তাই এখন আমরা এই সম্পর্কে জানব। গর্ভবতী অবস্থায় ৪ তম মাসে এসে খাবার তালিকা একটু অন্যরকম হবে। এর কারণ হচ্ছে গর্ভে সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথে মেয়েদের শরীরে কমতে থাকে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। এজন্য এ সময়ে এসে আপনাকে আইরন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন চার মাসের গর্ভবতী মায়ের খবর তালিকা তে যোগ করতে হবে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। যেমন - ডিম,মুরগির মাংস, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।

৫ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য পাঁচ মাসে পদার্পণ করা মনে হলো তিনি বাচ্চা প্রসব করার জন্য এগিয়ে এসেছে। এজন্য এই সময়ে খাবার তালিকা আরও জোরদার করা লাগবে। এজন্য উপরে বর্ণিত এ সকল ফল এবং সবজিগুলো নিয়মিত খাওয়া উচিত। আপনার শরীরে যদি ক্যালসিয়াম কিভাবে প্রোটিনের ঘাটতি থাকে তাহলে অবশ্যই এই খাবারগুলো খেতে হবে। 

৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

সন্তান গর্ভধারণের যখন ৮ মাস হয়ে যায় তখন এটা একদম শেষ পর্যায়ে চলে আসে সন্তান প্রস্রাবের জন্য। এ সময়ে এসে শরীরে অনেক রকম সমস্যা হয় যেমন - অনিদ্রা, বুক ধরফর, পেটের বাচ্চা যদি নড়াচড়া করে তাহলে মনে হয় যে খুব সহজেই হাফসিয়ে যাচ্ছি এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য জটিল হকার ধারণ করতে পারে। তাই এ সময়ে এসে অবশ্যই খাবার তালিকাতে যোগ করুন ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক এর মন্তব্য

আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে নিশ্চয় এতক্ষণ জেনে গেছেন গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা - গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত না। গর্ভকালীন সময়ে অবশ্যই নিষিদ্ধ খাবারগুলো থেকে বিরত থাকুন। যা উপরে আলোচনা করা হয়েছে। এই সময়ে বেশি বেশি পানি খান এবং শাকসবজি খাবার খান। তাতে আপনার জন্যই ভালো হবে।

প্রিয় পাঠক, আজকে আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে কিংবা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর হ্যাঁ এই ওয়েবসাইটটি বেশি বেশি শেয়ার করে দিয়ে এসব কোন তথ্য সেবা অন্য সবাইকেও পেতে সাহায্য করুন। এসকল তথ্য সেবা পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের এই www.multiplebd.com ওয়েবসাইটটি। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url