মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম - মিষ্টি কুমড়ার বীজের ১৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
ভূমিকা
মিষ্টি কুমড়ার বীজ কি
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খেলে কি হয়
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
মিষ্টি কুমড়ার বীজের ১৫ টি উপকারিতা
- ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণেঃ বর্তমানে প্রায় অধিকাংশ মানুষই আক্রান্ত হয় টাইপ টু ডায়াবেটিসে। ডায়াবেটিসের এই সমস্যার সমাধানের জন্য মিষ্টি কুমড়ার বিষ দারুন এক ভূমিকা পালন করতে পারে। এর কারণ হলো মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে অধিক পরিমাণ ফাইবার। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম আছে মিষ্টি কুমড়ার বীজে আর যে কারণে তা সাহায্য করে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতেও।
- ওজন কমতে সাহায্য করেঃ আপনি কি অতিরিক্ত ওজন নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন। তাহলে আজকে থেকে মিষ্টি কুমড়ার বিষ খাওয়া শুরু করে দিন। কারণ মিষ্টি কুমড়ার ভিজে পর্যাপ্ত মাপে ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে যা সাহায্য করে ওজন কমাতে। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার ভিজে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট আয়রন বিটা কেরাটিন ক্যালসিয়াম সহজে উপাদান গুলো রয়েছে তার শরীরের জন্য বেশ উপকারী এবং ওজন কমাতে সাহায্যকরে।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ মিষ্টি কুমড়ার বীজের অন্যতম ও উপকারিতা হচ্ছে এটা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কারণ মিষ্টি কুমড়া ব্রিজে যে উপাদান গুলো রয়েছে তার সাহায্য করে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণের জন্য। মিষ্টি কুমড়ার বীজের ভেতরে রয়েছে এক ধরনের নাইট্রিক অক্সাইড এবং অ্যামাইনো এসিড। বিভিন্ন গবেষকদের মধ্যে এই নাইট্রিক এস স্নায়ুকে শীতল করার মাধ্যমে তার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা রাখে। তাই অবশ্য উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনি খাদ্য তালিকাতে যোগ করতে পারেন মিষ্টি কুমড়ার বীজ।
- অনিদ্রা দূর করেঃ আমাদের শরীলকে সুস্থ রাখতে অবশ্যই আমাদের পর্যাপ্ত ঘুমের কোন অবকাশ নেই। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেকেই অনিদ্র সমস্যায় ভুগছেন। এই সমস্যার সমাধান করার জন্য অন্যান্য এক ভূমিকা রাখতে পারে মিষ্টি কুমড়ার বীজ। কারণ মিষ্টি কুমড়া এই দেশ সাহায্য করে ছেরোটোনিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক উপাদানকে তৈরিতে। আর যা আমাদের স্নায়ুত তন্ত্রের চাপ কে কমানোর মাধ্যমে ভূমিকা রাখে অনিদ্রা সমস্যা দূর করতে। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার বীজ প্রকৃতিকভাবে টিপট্রফ্যান নামক এক ধরনের অ্যামাইনো এসিডের উৎসব। গবেষণায় পাওয়া গেছে যে,এই উপাদানটি আমাদের ঘুমের উন্নতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
- মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতেও মিষ্টি কুমড়ার বীজে জুড়ি মেলা ভার। মিষ্টি কুমড়ার ব্রীজের ভেতরে যে ট্রিপটোফ্যান ও টাইরেছি নামক জে এমাইনো এসিড থাকে তা অনেক ভূমিকা রাখে। এই উপাদানগুলো ডোপামিন ও ছেরোটোনিন এর পূর্বসূরী । যেগুলো আমাদের বিভিন্ন মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা রাখে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ মিষ্টি কুমড়ার ভিজে যে ওমাগা থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকে তা আমাদের হৃদযন্তকে ভালো রাখে। এছাড়া রক্তের ভেতর থেকে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমায় এবং ট্রাইগ্লিসাইড এর পরিমাণ কমাতে ও ভূমিকা রাখে। নিয়মিত মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার ফলে তা অনেকটাই ঝুঁকি কমায় হৃদরোগের।
- চুল ভাল রাখেঃ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন, সালফার ও জিংসহ ইত্যাদি সব উপাদান রয়েছে মিষ্টি কুমড়ার বীজে। যেগুলো চুলকে উজ্জ্বল করতে এবং সাহায্য করে ঘন করার জন্য। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার বীজের ভেতরে যে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে তা উন্নত করে চুলের গঠন এবং চুল রাখে মজবুত ও ঝলমলে। আপনিও যদি আপনার চুলে এসব উপকারীর দিক পেতে চান তাহলে আজকে থেকে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খেতে পারেন।
- পুরুষদের জন্য উপকারীঃ বিশেষজ্ঞদের মতে শুক্রানু বৃদ্ধি করতে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বেশ উপকারী। কারণ মিষ্টি কুমড়ার বীজ থেকে জিংক মিলে আর যা শুক্রানুর গুণগত মানকে ভালো রাখে। এছাড়াও পুরুষদের স্বাস্থ্যকরি হরমোন প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং শক্তিশালী করে প্রোস্টেট গ্রন্থিকে। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার বিয়ের সাহায্য করে পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যকে বজায় রাখতে।
- হাড় ভালো রাখেঃ হারে স্বাস্থ্যকে ভালো রাখার জন্য মিষ্টি কুমড়ার বীজের রয়েছে বিশেষ এক ভূমিকা। মিষ্টি কুমড়ার ভিজে উপস্থিত থাকে প্রচুর পরিমাণ জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম। যেগুলো সাহায্য করে হার ভালো রাখতে। তাহলে বুঝতে পারছেন মিষ্টি কুমড়ার বীজের উপকারিতা কত।
- ত্বক ভালো রাখেঃ মিষ্টি কুমড়ার বীজে ক্যারোটিনয়েড ও ভিটামিন ই পাওয়া যায়। যার সাহায্য করে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতাকে এবং উদ্দীপিত করতে ভূমিকা রাখে কোলেজেনকে। এছাড়াও ত্বকের ভেতরের যে মৃত কোষ থাকে সেগুলো দূর করতে এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে মিষ্টি কুমড়ার ভিজে থাকা আলফা হাইড্রোক্সি এসিড।
- প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ মিষ্টি কুমড়া বীজের ভিতরে উপস্থিত আছে ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জিংক। যেগুলো আমাদের শরীরের ভিতরে ইমিউনিটি কে ভারতে ভূমিকা রাখে। তার এই ইমিউনিটি পরিমাণ ঠিক পরিমাণ থাকলে তা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ আপনারা যারা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছেন তারা মিষ্টি কুমড়ার বীজ খেতে পারেন। কারণ এর ভেতরের রয়েছে ফাইবার যা ভূমিকা রাখে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে।
- বেশি জ্বালাপোড়া কমাতেঃ আমাদের শরীরে হঠাৎ করেই বিভিন্ন সময় জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয়। এ জ্বালাপোড়া কমাতেও ভূমিকা রাখে মিষ্টি কুমড়ার বীজ। এছাড়াও বাত ব্যথা কম করতেও রয়েছে এর অনন্য এক ভূমিকা।
- প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ মিষ্টি কুমড়ার বীজের ভেতরে আছে জিংক। আর যে কারণে এটা প্রজনন ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সাহায্য করে সুস্থ সবল শিশু জন্ম দিতে। নিবারণ করে বিভিন্ন ধরনের রোগ।
- প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ জিংক এর অন্যতম একটি উৎস হল মিষ্টি কুমড়ার বীজ। গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রোস্টেটের সমস্যা দূর করাতে মিষ্টি কুমড়ার ব্রীজ ভূমিকা রাখে। এই ভিজে রয়েছে এক ধরনের ডাইহাইড্রো এন্ড্রোসটেনেডিয়ন নামক উপাদান। যা ব্যাপক সাহায্য করে শরীরে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে।
মিষ্টি কুমড়ার বীজের অপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ার বীজর যেমন উপকারিতা আছে তেমন কিছু অপকারিতা রয়েছে। যে বিষয়গুলো আপনার জানা দরকার। এতক্ষণ তো আমরা জানলাম মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারী দিক সম্পর্কে। চলুন তাহলে আমরা এবার জেনে আসি মিষ্টি কুমড়া বীজের অপকারিতা গুলো মিষ্টি কুমড়ার বীজের অপকারিতা গুলো।
আরো পড়ুনঃ টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও উপকারিতা কি জানুন
- যারা হাইপারটেনশন আক্রান্ত মানুষ তাদের জন্য মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়া একদমই ঠিক হবে না।
- অনেকে রয়েছেন যারা মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়া হলে এলার্জি সমস্যা হতে পারে। তাদের জন্য এগুলো না খাওয়াই ভালো।
- কেউ যদি বেশি পরিমাণে মিষ্টি কুমড়ার বিষ খেয়ে ফেলে তাহলে পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা পেটে ব্যথা, পেট ফোলা, পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাও হতে পারে।
- মিষ্টি কুমড়ার বীজ ওজন কমাতে সাহায্য করে হলেও কেউ যদি অতিরিক্ত পরিমাণ খেয়ে ফেলে তাহলে তাই হিতে আরো বিপরীত হতে পারে।
- গর্ভবতী মহিলা এবং স্তন্যদানকারি মহিলার জন্য একদমই উচিত না মিষ্টি কুমড়ার বিজ খাওয়া।
- কেউ যদি কেলারে জুতো ডায়েটে থাকে তাহলে এক্ষেত্রে মিষ্টি কুমড়ার বীজ সীমিত পরিমাণ ব্যবহার না করলে খেলার এর পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে ডায়েটে উপকার হয় না।
- যাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্র কম থাকে তারা যদি বেশি পরিমাণ খেয়ে ফেলে তাহলে সমস্যা হতে পারে। আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারী দিকগুলো ।
মিষ্টি কুমড়ার বীজের পুষ্টিগুণ
আচ্ছা আপনি কি জানেন মিষ্টি কুমড়ার বীজের পুষ্টিগুণ গুলো ? মিষ্টি কুমড়ার ব্রিজের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে চিন্তার কারনে কারন এখন আমরা জানবো মিষ্টি কুমড়ার বীজের পুষ্টিগুণ। এতক্ষণ তো জানলেন ই মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম - মিষ্টি কুমড়ার বীজের ১৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা। চলুন এবার পুষ্টিকোণ জেনে এসে যাক।
নিচে মিষ্টি কুমড়ার ব্রীজের পুষ্টিগুণ গুলো তুলে ধরা হলো।
- মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে ক্যালসিয়াম।
- আয়রনের ভালো উৎস মিষ্টি কুমড়ার বীজ।
- রয়েছে প্রচুর পরিমাণ জিংক।
- প্রোটিনের অন্যতম একটি উৎস মিষ্টি কুমড়ার বীজ।
- মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে আ্যন্টিঅক্সিডেন্ট।
- ফাইবারের উপস্থিতি আছে মিষ্টি কুমড়ার বীজে।
- ম্যাগনেসিয়াম থাকে মিষ্টি কুমড়ার বীজে।
- আমাদের শরীরের জন্য উপকারী ফসফরাস আছে মিষ্টি কুমড়ার বীজে।
- ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড উপস্থিত মিষ্টি কুমড়ার বীজে।
- মিষ্টি কুমড়ার ভিজে থাকে বিটা ক্যারোটিন।
- এছাড়াও রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল। আশা করছি আপনি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
মিষ্টি কুমড়ার বীজের দাম
চাল কুমড়ার বীজের উপকারিতা
- চালকুমড়ার পাকা বীজের শাঁস ভালো করে পিষে নিয়ে ঘি দিয়ে লাড্ডু করে খাওয়া হয় তাহলে শরীরে অনেক উপকার মিলে। অনেক এনার্জি পাওয়া যায় ও দূবলতা ।
- চালকুমড়ার বীজ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস্ট্রিক রোগ নিরাময় করতে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করে।
- চালকুমড়ার বীজ ভূমিকা রাকে কৃমিনাশ করতে।
- চালকুমড়ার বীজ থেকে পাওয়া তেল পিত্তনাশক । এ ছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে চালকুমড়ার বীজের ।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ ভাজির পদ্ধতি
এতক্ষণ আমরা জানলাম মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার উপকারিতা খাওয়ার নিওমসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত । তাই আজকের আর্টিকেলের এ পর্বে আমরা জানব মিষ্টি কুমড়ার ভাজির পদ্ধতি সম্পর্কে । তাহলে আর দেরি কিসের , চলুন এবার আমরা বিস্তারিতভাবে যেনে আসি ।
- প্রথমে আমাদের বীজ নিতে হবে ।
- এরপর এই বীজগুলোকে ভালোভাবে রোদে শুকাতে হবে ।
- শুকানো হলে তারপর একটি পাত্রে করে হালকা তাপে চুলাই বসাতে হবে । সামান্য পরিমানে ২-৪ ফোঁটা তেল দিয়ে করই গরম করতে হবে ।
- গরম হয়ে গেলে এবার আমরা বীজ গুলকে ভালোভাবে ঢেলে দিব ।
- একটা চমচ দিয়ে এবার আমরা সেগুলকে নেড়ে নিব । দেখবেন একটা সময় পর পটপট আওয়াজ হয়ে ফাটতে থাকবে । এভাবে আমরা ভালোভাবে ভেজে নিব উলটাপালটা করে ।
- ঠিকভাবে ভাজা হয়ে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন । এর ফলে টা আরো মচমচে হয় । এবার এটা খেয়ে দেখুন কত স্বাদ । আশা করছি বুজতে পেরেছেন মিষ্টি কুমড়ার বীজ ভাজির পদ্ধতি ।
মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url