যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানুন

মুখের দুর্গন্ধ  হওয়ার কারণ ও উপায়আপনি কি যক্ষা কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে এ পোস্টটি আপনার জন্যই। কারণ এ পোস্টে আমরা আপনাকে জানাবো যক্ষা কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়। বর্তমান সময়ে যতপ্রকার সংক্রামক রোগ এবং সংক্রামক ব্যাধিগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই অবশ্যই আপনার যক্ষা সম্পর্কে জানা দরকার। তাহলে চলুন এবার জেনে নিন বিস্তারিত -
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি ১৫- ২০ সেকেন্ডে বিশ্বে একজন যক্ষা রোগী মারা যায়।এ থেকে বোঝা যায় যক্ষা রোগ কতটা ভয়ঙ্কর। তাই অবশ্যই আপনারা জানতে হবে যক্ষা প্রতিরোধের এ বিষয় সম্পর্কে। যা আমরা আপনাকে জানাবো এই পোস্টে।শুধু কি তাই? এ পোস্টে আমরা আপনাকে আরো জানাবো যক্ষা রোগ নির্ণয় পদ্ধতি সম্পর্কেও । বিস্তারিত জানতে অবশ্যই পোস্টটি পুড়োটা পড়ুন।

ভূুমিকা

যতগুলো সংক্রামক ব্যাধি রয়েছে তার মধ্যে যক্ষার ভয়াবহতা ও প্রভাব অত্যন্ত বেশি। যক্ষা সাধারণত বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়। দারিদ্,  পুষ্টিহীনতা  ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ যক্ষা রোগ বিস্বস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা এর আগে বেশি আক্রান্ত হয়। 

যক্ষা রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় 

যক্ষা একটি সংক্রামক ব্যাধি যা সাধারণত ফুসফুসে আক্রান্ত  করে। প্রায় অনেকেই একে ক্ষয়রোগ  বা টিবি বলে থাকে।তাহলে চলুন এবার জেনে নিন রক্ষা প্রতিরোধ করার জন্য যে ব্যবস্থাগুলো গ্রহন করতে হবে -
  • নিয়মিতভাবে সঠিক মাত্রায় নির্দিষ্টভাবে ওষুধ খেলে যক্ষাণ সম্পূর্ণভাবে ভালো হয়ে যায়। 
  • যক্ষা রোগীকে সঠিকভাবে শনাক্ত করে আশপাশের নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রেরণ করা উচিত। 
  • শিশুদের জন্মের পর অবশ্যই শিশুকে বিসিজি  টিকা প্রদান করতে হবে। 
  • প্রত্যেকটি শিশুর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন শিশুর জ্বর এবং কাশি দীর্ঘস্থায়ী হয় কিনা। 
  • যক্ষা রোগ থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই সকল ধরনের ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। 
  • যেহেতু যক্ষা একটি সংক্রামক ব্যাধি। এর জীবন ও যক্ষা রোগির কফের মাধ্যমে বের হয়ে আসে এবং বাতাসের মাধ্যমে অন্য লোকের ফুসফুসে প্রবেশ করার মাধ্যমে রোগ সৃষ্টি করে  সৃষ্টি করে। তাই অবশ্যই যতদূর সম্ভব  যক্ষা আক্রান্ত রোগীর থেকে দূরে থাকতে হবে। 
  • যক্ষা রোগের চিকিৎসা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং এটা অনেক ব্যয়বহুল। দেশের প্রায় সব সরকারি ও হাসপাতালে যক্ষা রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। তাই অবশ্যই যক্ষা রোগীকে তার ওষুধের কোন সম্পন্ন করতে হবে এবং এটা অনেক জরুরী। 
  • আপনার আশপাশে মানুষ কিংবা পড়ার সাথীদেরকেও যাদের মধ্যে যক্ষা রয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে হবে যেন সে পুনরায় আক্রান্ত না হয। 
  • যক্ষা প্রতিরোধের জন্য অবশ্যই ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক ও সংস্কৃতিক ভূমিকা পালন করতে হবে । 

যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি

যক্ষা রোগ প্রতিরোধ করতে হলে তার আগে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে যক্ষা রোগ কিভাবে নির্ণয় করবেন। কারণ যক্ষা রোগ নির্ণয় করতে পারলে তখনই আপনি যক্ষা প্রতিরোধ করতে পারবেন। কারণ আপনার যক্ষা হয়েছে কিনা এটা না জানলে যক্ষা প্রতিরোধ করা সম্ভব না। যক্ষা রোগ নির্ণয় করবেন চিকিৎসকরা। শুধু রোগের লক্ষণ থেকেই অনেক অভিজ্ঞ চিকিৎসক রোগ নির্ণয় করতে পারেন।

তবে এক্ষেত্রে ফুসফুসের জগত যদি হয় তাহলে অবশ্যই রোগীকে তার কফ পরীক্ষা করে নিতে হবে। রোগীর কফে যদি যক্ষার জীবাণু পাওয়া যায় তাহলে সেটা নির্ণয় করা সঠিক হয়। এছাড়া চিকিৎসকরা টিউবারকুলিন টেস্ট ও বুকের এক্সরে পরীক্ষা দাও যখন নির্ণয় করা যেতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে যক্ষা নির্ণয়ের পদ্ধতি হচ্ছে কোন সংক্রামক যক্ষা রোগির সংস্পর্শে থাকার ইতিহাস, টিউবারকুলিন টেজ যদি পজিটিভ হয় তাহলে এক্ষেত্রে বোঝা যায় যে শিশুর যক্ষা হয়নি।

যক্ষা রোগের জন্য চিকিৎসা ও চিকিৎসার সূচনা 

যক্ষা  যেহেতু  একই ভয়াবহ রোগ তাই অবশ্যই এ রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে অতি দ্রুত যক্ষা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাহলে এবার জেনে আসি যক্ষা  রোগের জন্য চিকিৎসা ও চিৎকার সূচনা সম্পর্কে -

চিকিৎসার সূচনাঃ যক্ষা রোগ নির্ণয় করবেন  একজন ডক্টর।যক্ষা রোগ নির্ণয় করার পর চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে রোগীর পরীক্ষার রিপোর্টের রেকর্ড রক্ষা করতে হবে  ও যেসব রোগির কবে যক্ষার জীবনো পাওয়া যায় তাদেরকে চিহ্নিত করে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা দিতে হবে। 

যক্ষা রোগের চিকিৎসাঃ যক্ষা এমন একটি রোগ যেটি মানবদেহে যেকোনো অংশে হতে পারে। ফুসফুস ছাড়া অন্যান্য অঙ্গে যক্ষার চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকটা জটিল। যক্ষা প্রতিরোধের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দুটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। প্রথমটি হচ্ছে ডটক ও দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে স্টপ পদ্ধতিতে একস্ট্রা  পালমনোরি   এবং  নেগেটিভ স্মিয়ার রোগের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

যক্ষা রোগ প্রতিরোধে ব্যবহার্য ওষুধ 

যক্ষা রোগ প্রতিরোধ ও যক্ষা রোগের নির্ণয় পদ্ধতি সহ যক্ষা রোগ বিষয়ে অনেক কিছুই তো জানলেন। তো চলুন এবার জানা যাক যক্ষা প্রতিরোধে ব্যবহার্য ওষুধ নিয়ে-
  • আইসোনিয়াজিড
  • রিফামপিসিন
  • পাইরিজিমাইড ইথানবিউটল 
  • থায়োসিটাজন
  • স্ট্রেপটোমাইসিন
  • রিফামপিসিন ও স্ট্রেপটোমাইসিন  সহ সবগুলো ওষুধ  যক্ষা  রোগ প্রতিরোধের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

যক্ষা রোগের চিকিৎসার সময়কাল ও যক্ষা রোগীর জন্য  সর্তকতা 

শুধু কি যক্ষা প্রতিরোধের উপায় ও যক্ষা রোগ  নির্ণয়ের পদ্ধতি জানলেই হবে। অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে যক্ষা রোগের চিকিৎসা সময়কাল সম্পর্কে। তো চলুন এবার জানাযাক যক্ষা রোগের চিকিৎসার সময়কাল সম্পর্কে -

যক্ষা রোগের চিকিৎসার সময়কালঃ 
বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে যক্ষা রোগ প্রতিরোধের জন্য আগের মত সময় প্রয়োজন হয় না । উপযুক্ত ও আধুনিক চিকিৎসার দ্বারা যক্ষা রোগ  এখন সম্পূর্ণ সেরে যাচ্ছে। যক্ষা রোগকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৮ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত চিকিৎসা নেওয়ার দরকার। এখন তো যক্ষা রোগের জন্য প্রয়োজনীয়  ওষুধ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে সবাইকে দেওয়া হয়। 

যাক রোগীর জন্য সতর্কতাঃ যক্ষা আক্রান্ত রোগীকে অবশ্যই আছি ও কাশির সময় মুখের রুমাল ব্যবহার করতে হবে।বিশেষ করে হাঁচির র সময়ে মুখে রুমাল দিয়ে নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে নিতে হবে । যেখানে সেখানে কফ ও থুথু ফেলার থেকে একদম বিরক্ত থাকতে হবে। পারলে তা একটি জায়গায় রেখে পরবর্তীতে পুড়ুিয়ে ফেলা ভালো। সকল ধরনের ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। যক্ষা আক্রান্ত রোগের কাছে অবশ্যই শিশুদেরকে কোলে কিংবা নাক মুখের কাছে নেওয়া যাবে না।

বাড়িতে কারো যক্ষা হলে করণীয় দিকগুলো

যক্ষা রোগ প্রতিরোধের জন্য অবশ্যই বাড়িতে বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এখন আপনাদেরকে জানাবো বাড়িতে কারো যখন করোনা দিকগুলো সম্পর্কে -
  • সম্ভব হলে বাড়ির সবাইকে ভালোভাবে পরীক্ষা করিয়ে দেখে নিতে হবে যে যক্ষা হয়েছে কিনা। 
  • অবশ্যই বাড়ির যারা শিশু রয়েছে তাদেরকে বি সি জি  টিকা দিতে হবে। 
  • যে ব্যক্তির যক্ষা হয়েছে তাকে অবশ্যই শিশুর থেকে আলাদা জায়গায় রাখতে হবে এবং আলাদা জায়গায় খেতে ও সুতে দিতে হবে। 
  • যক্ষা রোগীর থালা বাসন প্লেট গ্লাস ইত্যাদি আলাদা করে রাখতে হবে ও আলাদা করে খেতে দিতে হবে। 
  • যক্ষা রোগীর হাঁচি ও  কাশির সময়  সময় অবশ্যই মুখে রুমাল দিতে হবে এবং যেখানে সেখানে কফ থুথু  ফেলা চলবে না। 

আমাদের পরামর্শঃ 

যক্ষা যেহেতু একটি ভয়াবহ রোগ তাই অবশ্যই যক্ষা রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। হাঁচি ও কাশির সময় অবশ্যই মুখে মার্কস বা রুমাল ব্যবহার করবেন। যেখানে সেখানে কত ফেলা থেকে বিরত থাকবেন। সর্বোপরি সবসময় স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলবেন।
প্রিয় পাঠক,এতক্ষণ তো যক্ষা রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি ও প্রতিরোধের উপায় সহ যক্ষা রোগ হলে করণীয় বিষয়সহ যক্ষা রোগের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানলেন। আশা করছি বিস্তারিত বিষয়সমূহ ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন ।
আর হ্যাঁ , নিয়মিত এ সকল তথ্যসহ পেতে অবশ্যই ভিজিড করুন আমাদের এই WWW.multiplebd.com ওয়েবসাইটটি। আর এ সকল তথ্য সেবা আপনার বন্ধু কিং আশপাশের মানুষদের পৌঁছে দিতে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। আপনার একটি শেয়ারের মাধ্যমে সুযোগ করে দিন অন্য মানুষদের এ সকল তথ্য সেবা পেতে। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url