শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি জানুন

তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা  কিআজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? শসা সকলেই খেয়ে থাকি। কেউ খালি পেটে কিংবা কেউ সালাত করে। কিন্তু অনেকেই জানেনা শসার উপকার ও অপকার সম্পর্কে। আপনিও যদি শসা খাওয়ার এসব উপকার সম্পর্কে না জানেন তাহলে চিন্তার কোনই কারণ নেই। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আপনি পেয়ে যাবেন শসার এসব উপকার সম্পর্কে।
শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম সহ অনেক উপকারী উপাদান। শসা আমরা সালাত হিসেবে খেয়ে থাকি। এর রয়েছে অনেক উপকার কিন্তু কিছু অপকারও রয়েছে যা আমরা আপনাকে আজকের এই আর্টিকেলে জানাবো। আমরা আপনাকে আরো জানাবো,সকালে খালি পেটে শসা খেলে কি হয় এ সম্পর্কেও। তাই অবশ্যই পুরো বিষয়গুলো জানতে হলে পোস্টটি সম্পন্ন পড়ুন।

ভূমিকা 

কখনো সালাত তো কখনো আবার ভাত-তরকারির সাথে। একাধিকভাবে আমরা শসা খেয়ে থাকি। রূপচর্চা থেকে শুরু করে শরীর ফিট রাখা সহ বিভিন্ন কাজে শসার ব্যবহার অনেক। শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ক্যালসিয়াম সহ অনেক উপকারি কিছু উপাদান। কিন্তু শসা খাওয়ার যেমন উপকার রয়েছে তেমন কিছু অপকারও রয়েছে।

যার ফলে অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে আপনি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। শসার এসব উপকার অপকার সম্পর্কে। তাহলে আর দেরি কিসের। চলুন জেনে নিন শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ শশা নিয়ে বিস্তারিত বিষয় সমূহ -

শসা খাওয়ার উপকারিতা

আচ্ছা প্রত্যেক দিনই তো শসা খেয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন শসার উপকারিতা কি? যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলুন যেনে নিন-

আরও পড়ুনঃ টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও  উপকারিতা কি জানুন 

  • হজমে সহায়তাঃ হজমের সহায়তা করতে যতগুলো সবজি ও ফল  রয়েছে তার মধ্যে শসা অন্যতম। শসা তে থাকা ভিটামিন ও খাদ্য আঁশ হজম করতে সাহায্য করে। 
  • হাড় মজবুত করেঃ হাড় মজবুত করতে ভিটামিন এ এর অবদান অনেক। শসাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে আর যে কারণে শসা খাওয়া হলে হাড়ের ক্ষয় ঝুঁকি কমে এবং হার মজবুত হয়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ শসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং যার ফলে শরীর সুস্থ থাকে। 
  • মানসিক চাপ কমায়ঃ শসা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।কারণ শসাতে ভিটামিন বি ওয়ান  ভিটামিন বি ৭ সহ বিভিন্ন ভিটামিন উপাদান রয়েছে। যা চাপ কমাতে সাহায্যকারি।
  • ত্বক উজ্জ্বল করেঃ শসাতে থাকা ভিটামিন ও জিংক ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন বিভিন্ন ক্রিম এর বদলে নিয়মিত শসা খেয়ে তা উজ্জ্বল করতে পারেন। এছাড়াও শসাতে থাকা উপাদান ত্বক কমল রাখে। 
  • হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায়ঃ আমাদের শরীরের জন্য হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা থাকা জরুরি। শসাতে আছে হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী পুষ্টি ও বিভিন্ন ফসফরাস যা হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই প্রত্যেকদিন বেশি বেশি শসা খাওয়া উচিত। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন। শসা খাওয়ার ফলে মিলতে পারে এর সমাধান। শসা খাওয়ার ফলে শসাতে থাকা উপাদানগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করাতে সাহায্য করে । 
  • ডায়াবেটিকস কমাতে সাহায্য করেঃ মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার বদলে শসা খাওয়া যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শসার উপকারিতা অনেক। তাই ডায়াবেটিকস কমাতে শসা খাওয়া যায়। 
  • মাড়ির জন্য ভালোঃ দাঁত ও মাড়ি ভালো থাকলে তবেই সুস্বাস্থ্যবান হওয়া যায়। আমাদের মুখে পি এইচ ও এসিডের ভারসাম্য ঠিক রাখতে শসা সাহায্য করে।গবেষণার দেখা গেছে প্রতিনিয়ত শসা খাওয়ার ফলে দাঁতের রোগ থেকে  মুক্তি পাওয়া যায় ও মাড়ির জন্য ভালো। 
  • ব্যাথা থেকে মুক্ত করেঃ ব্যথা থেকে মুক্ত পেতে শসার উপকার অনেক। শসার সাথে যদি গাজর রস করে খাওয়া যায় তাহলে সেটা আমাদের দেহের ইউরিক এসিড কমায় যার ফলে মুক্তি পাওয়া যাবে তা থেকে। 

শসা খাওয়ার অপকারিতা

প্রত্যেকটা জিনিসেরই ভালো দিকের পাশাপাশি কিছু খারাপ দিক থাকে । ঠিক তেমনি শসা খাওয়ার অপকারিতাও রয়েছে । তা অবশ্যই আপনার জানা দরকার শসা খাওয়ার অপকারিতা। তো চলুন এবার যেনে আসুন শসা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে -

  • পেটের সমস্যা দূর করার জন্য শসার উপকারিতা অনেক থাকলেও পরিমাপের বাইরে গিয়ে যদি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে সেটা পেটের সমস্যা আরও বৃদ্ধি করতে পারে। তাই বেশি পরিমাণ শসা খাওয়া ঠিক না। 
  • শসা খেলে হজমের সমস্যার সমাধান হয় কিন্তু যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে হিতে  বিপরীত হতে পারে। 
  • রাতের বেলায় যদি অতিরিক্ত পরিমাণে শসা খাওয়া হয় তাহলে সেটা গ্যাস্টিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • শসা পানি জাতীয় ফল হওয়ার কারণে যদি বেশি করে শসা খাওয়া হয় তাহলে বেশি বেশি প্রস্রাবের চাপ  আসতে পারে যেটা সমস্যার কারণ হতে পারে। 
  • রাতের বেলায় যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্রিজের ঠান্ডা শসা খাওয়া হয় তাহলে অসুখ-বিসুখ সৃষ্টি হতে পারে। 
  • ওজন কমাতে বেশি বেশি যদি শসা খাওয়া হয় অর্থাৎ এক মাস যাবত যদি সবসময় শসা খাওয়া হয় তাহলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন বিপত্তি। 

সকালে খালি পেটে শসা খেলে কি হয়

শসা খাবার উপকারিতা ও অপকারিতা কি তা তো জানলেন। কিন্তু আপনি কি জানেন সকালে খালি পেটে শসা খেলে কি হয় ? অনেকেই আবার প্রতিনিয়ত সকালে খালি পেটে শসা খেলেও জানেনা এর উপকার ও  অপকার সম্বন্ধে। তো চলুন এবার জানা যাক সকালে খালি পেটে শসা খেলে কি হয় সম্পর্কে-
  • সকালে খালি পেটে শসা খেলে বিভিন্ন উপকার পাওয়া যায়।
  • সকালের নাস্তার কাজে শসা ব্যবহার করা যায় এবং উপকারও অনেক । 
  • শসাতে থাকে প্রচুর পরিমাণ পানি। তাই সকালে যদি খালি পেটে শসা খাওয়া হয় তাহলে সেটা আমাদের সারারাতের উপবাসের পর শরীর কে হাইটেক  করতে সাহায্য করে। 
  • শসাতে বিভিন্ন  ধরনের ভিটামিন ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম থাকায় সকালে খালি পেটে শসা খাওয়া হলে দিন শুরু করা যায় এসব পুষ্টিগুলো দিয়ে। 
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে সকালে যদি খালি পেটে শসা খাওয়া হয়।
  •  ছাড়াও গ্যাসের সমস্যা ভালো হয়। 

শসা খাওয়ার সঠিক সময়

শসা খায় না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আপনিও তো সালাত কিংবা খালি মুখে সাথে শসা খাচ্ছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন শসা খাওয়ার সঠিক সময় কি?যদি না যদি থাকেন তাহলে এখনি জেনে নিন শসা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে। তো চলুন এবার জেনে নিন -

শসা বেশি করে রাতের বেলায় খাওয়া ঠিক না। তাই শসা খাবেন দিনের বেলাতে। এই ক্ষেত্রে সালাতের সঙ্গে কিংবা খালি মুখে সকাল বিকাল দুপুরে শসা খাওয়া যায়। শসা না ছিলে যদি খোসা সহ খাওয়া যায় তাহলে এটার উপকারিতা অনেক। তাই চেষ্টা করবেন দিনের বেলাতে এভাবে খাবার। তাই শসার সঠিক উপকারিতা পাওয়ার জন্য অবশ্যই রাতে বেশি শসা না খেয়ে দিনের বেলাতে খেতে পারেন।

শসা খাওয়ার নিয়ম

শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ শসা খাওয়ার সঠিক সময় তো জানলেন। তাহলে চলুন এবার জানুন শসা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে-

শসা খাওয়ার জন্য কিছু নিয়ম মেনে শসা খেলে পরিপূর্ণ তৃপ্তি সহকারে শসা খাওয়া যায়। শশা দিয়ে যদি রায়তা বানানো যায় তাহলে সেটা খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এর জন্য সর্বপ্রথম শশাকে গ্রেটার করে নিতে হবে। এর সাথে একটুখানি জিরা গুড়া তার সাথে লবণ ধনেপাতা ও গোলমরিচ গুঁড়া দিয়ে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে গেলো রায়তা।

শসাকে সালাত হিসাবেও খেতে পারেন। শসা কে ছোট ছোট করে কেটে তার সাথে একটুখানি লবণ মরিচের গুড়া দিয়ে মাখিয়ে নিলে,এবং আপনার তৃপ্তির জন্য আরও যেগুলো দিয়ে খান সেগুলো দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিলে এটা তৃপ্তি সহকারে খাওয়া যায়। খেয়াল রাখতে হবে যখনই শসা খাওয়া হয় সেটা অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভবতী মা-বোনদের জন্য অবশ্যই জানা দরকার গর্ভাবস্থায় শসা  খাওয়া যায় কিনা এবং গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়ার উপকারিতা কি। তো চলুন জেনে নিন এ প্রশ্নের উত্তর গুলো- 
  • গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে।
  • শসাতে ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম আয়রন ভিটামিন বি ভিটামিন সি সব বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। তাই তো শসাতে বিদ্যমান উপাদান গুলো গর্ব অবস্থায় পেটের ভিতরে ভ্রণকে  সুস্থ রাখে এবং বিকাশে সহায়তা করে।
  • গর্ভাবস্থায় সবসময় মন ভালো থাকতে হবে এবং চিন্তাবিহীন কোনরকম মানসিক চাপ ছাড়া থাকতে হয়। তাই গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়ার ফলে সেটা মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।কারণ শসাতে রয়েছে ভিটামিন বি ছয় ভিটামিন বি নয় উপাদান।
  • শসা তে এক ধরনের পটাশিয়াম এর মত ইলেকট্রোলাইট রয়েছে। তাই গর্ভাবস্থায় যদি শসা খাওয়া যায় তাহলে সেটা রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • তাই বলা যায় গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যায় তবে  বেশি করে খাওয়া ঠিক না। 

শসা খেলে কি মেদ কমে

অনেকেই জানতে চান শসা খেলে কি মেদ কমে।যে প্রশ্নের উত্তরগুলো অনেকেরই জানা নেই। তো চলুন জেনে নিন অজানা এই প্রশ্নের উত্তরগুলো -
  • শসাতে থাকে প্রচুর পরিমাণ পানি। এছাড়া রয়েছে কিছু পরিমাণ আশ। তাই শসা খাওয়ার পর দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধা নিবারণ করা যায় না। তাই নিয়মিত শসা খেলে পেটের মেদ কম হয়।
  • ডায়েট এর জন্য শসা অনেক উপকারী এর ফলে মেদ কমে।
  • শসা খাওয়ার ফলে শরীরে কোলেস্টরেলের মাত্রা থাকে নিয়ন্ত্রণে। ফলে মেদ কমাতে উপকার হয়।
  • শসাতে রয়েছে একধরনের ডায়েটারি ফাইবার। তাই শসা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের কোল্ড ড্রিংস চিপস খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়। আর শরীরের চর্বি কমতে সাহায্য করে।
  • তাই সর্বোপরি বলা যায় শসা খাওয়ার ফলে মেদ কমে।

লেখকের শেষ কথা 

শসা খাওয়ার কিছু অপকারি দিক থাকলেও উপকারী দিক বেশি। কিন্তু যখনই শসা খাবেন শসা খাওয়ার আগে অবশ্যই সেটা ভালোভাবে ধুয়ে নিন। শসা কেনার সময়ের সাথে ও টাটকা কিনুন। আজকের এই পোস্টে শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ সকলে খালি পেটে শসা খেলে কি হয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেন।আশা করছি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।
 
পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার করে দিন। এবং আপনার একটি শেয়ারের মাধ্যমে এসব তথ্য সেবা পাবার সুযোগ করে দিন আপনার বন্ধু কিংবা আশপাশের মানুষদেরও। আর অবশ্যই নিয়মিত ভিজিড করুন আমাদের এই WWW.multiplebd.com ওয়েবসাইটটি। এতক্ষণ ধৈর্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url