নিয়মিত কলা খেলে উপকারিতা কি - গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি

পেয়ারার  ১০ টি  উপকারিতা  অপকারিতা জানুনআজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব নিয়মিত কলা খেলে উপকারিতা কি এ বিষয় সম্পর্কে। আপনি যদি না জেনে থাকেন কলা খাওয়ার এসব উপকারি দিক সম্পর্কে তাহলে আজকের পোস্টটি হতে যাচ্ছে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ । কলাতে রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী কিছু উপাদান।
কলা ফল অনেক সুস্বাদু এবং এটা প্রায় সবাই খেয়ে থাকে । কলাতে এমন কিছু উপকারের দিকে রয়েছে যেগুলো জানলে যারা কলা খায় না তারাও কলা শুরু করে দিবে। কলার এসব উপকারি করে দিক আমরা আজকের পোস্টে জানাবো। এই পোস্টে আমরা আপনাকে আরো জানাবো দিনে কতটুকু কলা খাওয়া উচিত ? এবং কলা খেলে কি ক্ষতি হয় সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত। তাই অবশ্য এসব বিষয়ে জানতে হলে পোস্টটি সম্পন্ন পরুন।

ভূমিকা 

শুধু আমাদের বাংলাদেশে না। দেশের বাইরে কালার রয়েছে অনেক চাহিদা। সকালের নাস্তা কিংবা বিকেলের হালকা খাবার। কলার ব্যবহার অনন্যা। কলাতে এমন উপকারের দিক রয়েছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের বাংলাদেশে অনেক প্রজাতির কলা পাওয়া যায় ছোট বা বড় কলা খায় প্রায় সকলেই।
কিন্তু অনেকেই জানে না কলার এসব উপকারের দিক সম্পর্কে। কিন্তু উপকারের পাশাপাশি কালার এমন কিছু অপকারিতা রয়েছে যেগুলোর থেকে আমাদের সাবধান থাকা দরকার। নিয়মিত কলা খেলে উপকারিতা কি ও ক্ষতিক সম্পর্কে যা আমাদের পোস্টে রয়েছে বিস্তারিত ভাবে।

দিনে কতটুকু কলা খাওয়া উচিত?

কলা খাওয়ার উপকার সম্পর্কে জানতে হলে তার আগে জানা দরকার দিনে কতটুকু কলা খাওয়া উচিত? অনেকে জানে না এর সঠিক নিয়ম। তাই এখন আমরা এ বিষয় নিয়ে আপনাকে জানাবো। আসলে কলা খাওয়ার জন্য নির্ধারিত কোন নিয়ম নেই। তবে নিজের শরীরের অবস্থা বুঝে কলার খাওয়ার পরিমাণ কম বেশি করা যায়।
ছোট আকারের কলা গুলো অনেক পরিমানে খাওয়া যায়। কিন্তু বড় সাইজের কলা যদি বেশি খাওয়া হয় সেটা শরীরে ক্ষতি করতে পারে। দিনে দুই তিনটা কলা খাওয়ার ফলে শরীরে কোন ক্ষতি হবে না। কলা রয়েছে অনেক উপকারিতা। যেগুলো হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

নিয়মিত কলা খেলে উপকারিতা কি

কলা খায় না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু অনেকেই জানেনা কলা খাওয়ার এসব উপকার সম্পর্কে। আপনিও যদি না জেনে থাকেন তাহলে চিন্তার কারণ নেই।তাহলে চলুন এবার জেনে নিন নিয়মিত কলা খেলে উপকারিতা কি সম্পর্কে-

  • কলাতে রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান।যেমন পটাশিয়াম ভিটামিন সি ক্যালরি সহ অনেক উপাদান। তাই নিয়মিত কলা খেলে একসাথে পেয়ে যাবেন শরীরের জন্য এ সকল উপাদান। 
  • যারা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছেন তারা কলা খেতে পারেন।কারণ কলাতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে এছাড়াও হজমের জন্যও ভালো।
  • কলাতে থাকে পটাশিয়াম। এ কারণে কলা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্যকারী। 
  • ভিটামিন সি রয়েছে কলাতে। যে কারণে ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্যকারী। 
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ফলগুলো খেতে হয় তার ভেতরের করা অন্যতম। 
  • প্রতিদিন যদি কলা খাওয়া হয় তাহলে সেটা আমাদের রক্তচাপ ও নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • শরীরের ত্বক এবং মাথার চুল ভালো রাখতেও করার রয়েছে অনেক ভূমিকা।
  • স্বল্প সময় অনেক এনার্জি পেতে কলা খাওয়ার বিকল্প নেই। নিয়মিত কলা খেলে পেতে পারেন অনেক উপকার 
  • মানসিক চাপ কমাতে রয়েছে কলার অনেক ভূমিকা 

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি

অনেকেই জানতে চান গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি ? গর্ভবতীদের জন্য এ বিষয়টা জানার খুবই জরুরী। তা চলুন এবার জানুন এসব বিষয় সম্পর্কে। কলাতে অনেক উপকারী গুন থাকায় গর্ভাবস্থায় কলা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় । কিন্তু শরীরে যদি কিছু জটিলতা থাকে তো এক্ষেত্রে গর্ভবতী মেয়েদের কলা খেতে নিষেধ করা হয়।

একজন গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে শরীরে ফাইবারের চাহিদা থাকে অনেক পরিমান। তাই গর্ভ অবস্থায় কলা যদি খাওয়া হয় এক্ষেত্রে গর্ভবতী সহ পেটে থাকা শিশুর জন্য উপকারি।তাই গর্ব অবস্থায় কলা খাওয়া যায়। কিন্তু অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। এর জন্য অনেক ক্ষেত্রে কলা খাওয়ার ফলে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে গর্ভাবস্থায় এটা কম পরিমাণ খাওয়া উচিত।

প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে কী ঘটে

কলা প্রায় সবাই খেয়ে থাকে। কিন্তু তবুও অনেকেই জানে না প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে কী ঘটে।যে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা উচিত। তাহলে আর দেরি কিসের। চলুন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে এবার জেনে আসা যাক।
  • অধিক শক্তিঃ কলা এমন একটি ফল যেটাতে ভিটামিন মিনারেলসহ রয়েছে ফাইবারের মতো উপাদান। এছাড়াও রয়েছে পটাশিয়াম। তাই কেউ যদি নিয়মিত প্রতিদিন কলা খায় তাহলে তার শরীরে মিলবে আরো বেশি অধিক শক্তি। 
  • ওজন কমায়ঃ যারা স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন কমানোর উপায় খুজছেন তারা নিয়মিত কলা খেতে পারেন। কারণ নিয়মিত যদি কলা খায় তাহলে। কারণ কলাতে থালা  উপাদানগুলো ওজন কমাতে উপকারী। যারা অধিক স্বাস্থ্যবান এবং ওজন কমাতে চায় তারা এ পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন।
  • শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করেঃ শরীরে ব্লাড সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক মাপে রাখতে অনন্য উপাদান রাখে কলা। তাই  নিয়মিত কলা খাওয়া হলে শরীরে ভারসাম্যতা ঠিক থাকে। 
  • শরীরের জন্য পুষ্টিঃ নিয়মিত প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে পুষ্টিমান স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। কারণ কলাতে থাকা লৌহ জাতীয় পুষ্টি হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে শরীরে লোহার ঘাটতি পূরণ হয় ও শরীরের জন্য পুষ্টি পাওয়া যায়। 
  • ফাইবার ঘাটতি কমেঃ কলা ফাইবারযুক্ত ফল। এজন্য যদি নিয়মিত কলা খাওয়া হয় তাহলে এটা শরীরের ফাইবারের ঘাটতি কম করে।

কলা খেলে কি ক্ষতি হয়

শুধু উপকার না বরং কলার কিছু অপকার রয়েছে। কিন্তু অনেকেই জানে না কলা খেলে কি ক্ষতি হয়। আপনিও যদি না জেনে থাকেন তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই । কারণ এখন আলোচনা করব কলা খেলে কি ক্ষতি হয় সম্পর্কে।
  • অতিরিক্ত পরিমানে যদি কলা খাওয়া হয়ে যায় তাহলে সেটা হতে পারে ক্লান্তির কারণ। 
  • বিভিন্ন সময় দেখা যায় কলা খাওয়ার ফলে এলার্জি সমস্যা তৈরি হয়। 
  • এমন অনেকে রয়েছে যারা বাজার থেকে কলা কিনে খায়। কিন্তু এসব কলাতে থাকে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক যেগুলো মেডিসিন দিয়ে কলা পাকানো হয়। পারলে সেটা পেট ব্যথার কারণ হতে পারে। 
  • ডায়াবেটিস সমস্যা যাদের রয়েছে তারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কলা খেয়ে ফেলে তাহলে সেটা হতে পারে ডায়াবেটিসের জন্য সমস্যার কারণ। 
  • দাঁতের ও ক্ষয় হতে পারে অতিরিক্ত কলা খাওয়া হলে। 
  • ঠান্ডা লাগা অবস্থায় যদি কলা খাওয়া হয় তাহলে ঠান্ডার পরিমাণ আরো বেড়ে যায় এবং শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। 
  • কলা ওজন কমাতে সাহায্যকারী হলেও যদি অতিরিক্ত পরিমাণ  খাওয়া যায় তাহলে এটা আরো ওজন বেশি বাড়ায়। 
  • বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে যদি কলা খাওয়া হয় তাহলে সেটা ঘুমের জন্য সমস্যার কারণ হয়। 

পাকা কলা খাওয়ার নিয়ম

এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আলোচনা করলাম নিয়মিত কলা খেলে উপকারিতা কি প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে কী ঘটে সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত। তাহলে চলুন এবার জেনে আসা যাক পাকা কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। কারণ অনেকে জানেনা পাকা কলা খাওয়ার নিয়ম কি। যা জানতে পারবেন এই পোস্টে। পাকা কলা খাওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত কলা যেন পচন মুক্ত হয়।

কলা অনেক পুষ্টি যুক্ত ফল হয় সব সময় খাওয়া যায় তবে সর্দি অবস্থায় বেশি বেশি খাওয়া যাবেনা। সকালবেলা নাস্তার সাথে কলা খেতে পারেন। দিনে যদি ভালো ভাবে ঘুম বেশি পরিমানে পারতে চান তাহলে রাতে কলা খাওয়া যেতে পারে।বিকেল কিংবা সন্ধ্যা কলা খেতে পারেন কিছু পরিমানে।

গর্ভাবস্থায় কলা খেলে উপকার কি

গর্ভাবস্থায় কলা খেলে উপকার কি এ বিষয়টা অনেকেরই অজানা। আবার অনেকে মনে করেন গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যায় কিনা। গর্ভাবস্থায় যদি কলা খাওয়া হয় তাহলে মিলতে পারে অনেক উপকার। তাহলে চলুন এবার জেনে নিন সেগুলো সম্পর্কে।
  • হিমোগ্লোবিন উন্নত রাখতেঃ কলাতে রয়েছে আয়রন। আর যে কারণে গর্ভাবস্থায় যদি কলা খাওয়া যায় তাহলে সেটা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। 
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ গর্ভাবস্থায় এ সমস্যাটা প্রায় দেখা যায় যে রক্তচাপ উঠানামা করছে। কলা খাওয়ার ফলে এই সমস্যা এড়ানো যায় অনেকটা। কারণ কলাতে থাকা পটাশিয়াম প্রভাব রাখে রক্তচাপের মাত্রা ঠিক রাখতে। 
  • শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশঃ গর্ভাবস্থায় শুধু গর্ভবতী না পেটে থাকা সন্তানেরও খেয়াল রাখতে হয়। এই অবস্থায় যদি কলা খাওয়া যায় তাহলে সেটা শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশেও সহায়তা করে। কলেজে থাকা ভিটামিন বি ৬ ও আইরন ভূমিকা রাখে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বিকাশ করতে। 
  • বমি ভাব দূর করেঃ ভিটামিন বি ৬ এর অন্যতম উৎস কলা। গর্ভবতী অবস্থায় যদি কলা খাওয়া যায় তাহলে সেটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অসুস্থতা দূরের পাশাপাশি সাহায্য রাখে বমি বমি ভাব দূর করাতে। 
  • অ্যানিমিয়া প্রতিরোধঃ রক্ত যদি হিমোগ্লোবের মাত্র কম হয় তাহলে সেটা সমস্যার কারণ হয়। দেখা দেয় রক্তস্বল্পতা এবং সৃষ্টি করে অ্যানিমিয়ার মত রোগ। তাই গর্ভাবস্থায় যদি কলা খাওয়া যায় তাহলে সেটা ভূমিকা রাখে রক্তস্বল্পতা সমস্যা থেকে। 
  • শিশুর হাড় বিকাশঃ গর্ভকালীন সময়ে শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থায় যদি কলা খাওয়া যায় তাহলে সেটা গর্ভবতী মা এবং পেটে থাকা সন্তানের হাড়ের বিকাশে  সাহায্য করে। 
  • বুক জ্বালা কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই গর্ভ অবস্থায় কলা খাওয়া হলে কলাতে  বিদ্যমান প্রাকৃতিক আ্যান্টাসিড ভূমিকা রাখে বুক জ্বালা কমাতে। 
  • স্বাস্থ্যকর ত্বক ধরে রাখেঃ ভিটামিন সি রয়েছে কলাতে। এছাড়াও রয়েছে আ্যন্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি ভূমিকা রাখে দেহের আয়রন শোষণে। কলা হাড় কে বৃদ্ধি করে তোলে এবং টিস্যু গুলো মেরামত করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া হলে সেটা স্বাস্থ্যকর ত্বক ধরে রাখতেও সাহায্য করে। 

লেখকের মন্তব্য 

কলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে কিন্তু তবুও কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত,কারণ কলার ও রয়েছে কিছু অপকারী দিক ও রয়েছে । এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা নিয়মিত কলা খেলে উপকারিতা কি,দিনে কতটুকু কলা খাওয়া উচিত? গর্ভাবস্থায় কলা খেলে উপকার কি বিষয় নিয়ে অনেক কিছু আলোচনা করেছি।

আশা করছি আজকের এই পোস্টে আপনি অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন। পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি শেয়ার করে দিন এবং সুযোগ করে দিন আপনার বন্ধু কিংবা আশপাশের মানুষদের সকল তথ্যসহ পেতে। আর এ সকল তথ্য সেবা নিয়মিত পেতে ভিজিড করুন আমাদের এই WWW.multiplebd.com ওয়েবসাইটটি। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url