পেঁপের উপকারিতা অপকারিতা কি ? পেঁপের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন

আম খাওয়ার উপকারিতা ও  পুষ্টিগুণ কিআপনি কি পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা কি ? পেঁপের পুষ্টিগুণ জানতে চাচ্ছেন? তাহলে পোস্টটি আপনার জন্যই। এই পোস্টে  আমরা আপনাকে জানাবো পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা কি ? পেঁপের পুষ্টিগুণ নিয়ে বিস্তারিত। পেঁপে গ্রাম বাংলার অন্যতম এক জনপ্রিয় ফল। পেঁপের রয়েছে অনেক গুনাগুন ও পুষ্টি প্রদান। তাহলে চলুন যেনে নিন পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি ?
পেঁপে খায় না এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে। কিন্তু পেঁপের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন আবার কিছু অপকারিতা রয়েছে। যেগুলো অবশ্যই আপনার জানা দরকার। তাই এ পোস্টে আমরা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি। শুধু কি তাই, এ পোস্টে আমরা আপনাকে আরো জানাবো সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে কি হয় নিয়ে বিস্তারিত,তাহলে চলুন শুরু করা যাক-

ভূমিকাঃ 

ভিটামিন এ সমীদ্ধ অন্যতম এক জনপ্রিয় ফল হচ্ছে পাকা পেঁপে। পেঁপে আমরা অনেক ভাবেই খেয়ে থাকি। ফল হিসেবেও পেঁপে অনেক জনপ্রিয়। পাকা পেঁপে খেতেও অনেক সুস্বাদু । কিন্তু অনেকেই জানে না পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি। খালি পেটে পেঁপে খেলে কি হয় ? ও পেঁপের পুষ্টিগুণ কি। সেগুলো আপনার জানা দরকার। তাহলে চলুন বিস্তারিত জানা যাক-

কাঁচা পেঁপে খেলে কি ওজন কমে  

ফল সাধারণত ওজন কমাতে সাহায্য করে। তার মধ্যে অন্যতম পেঁপে । ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁচা পেঁপে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পেঁপেতে সাধারণত আঁশের পরিমাণ বেশি থাকে ও ক্যালারির পরিমাণ কম থাকে। ফলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। পেঁপেতে পাপাইন উংসেচক ওজন কমাতে অনেক আবদান রাখে।

পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই থাকে। কম ক্যালরিযুক্ত এই পেঁপে ফল তাই ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চর্বির পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে। প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে পেঁপেতে বিধায় সেটা পেট ভরার জন্য যথেষ্ট।

আঁশযুক্ত খাবার খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এ কারণে বারবার খাবার খেতে হয় না। এর ফলে অস্বাস্থ্যকর ক্যালোরি কম হওয়ার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে। সর্বোপরি যারা অর্জন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না অবশ্যই তাদের জন্য পেঁপে খাওয়া ও কার্যকরী। 

পেঁপের যতো উপকারিতা 

  • পেঁপে প্রায় সবাই খেয়ে থাকে। অনেকে আবার পেঁপে পছন্দ করে না। পেঁপে খাওয়ার উপকারের দিকগুলো জানলে তারা হয়তো সিদ্ধান্ত বদলাতেও পারে। তাহলে চলুন জানা যাক পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা গুলো। 
  • পেঁপে ফল হজমের জন্য খুব উপকারী। 
  • পেপেতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে। রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ বি সি ও ডি। এছাড়াও পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট। যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। 
  • পেঁপে বিভিন্ন রোগ সারাতে বেশ উপকারী। যা অনেক আগে থেকেই স্বীকৃত। 
  • টিভিতে রয়েছে আইরন, পটাশিয়াম, অ্যালবুমিন এনজাইম, সোডিয়াম পটাশিয়াম সহ  ইত্যাদি সব গুনাগুন। 
  • হাসেমের সমস্যার জন্য পেঁপে বেশ উপকারী। 
  • পেতে বিভিন্ন রোগ সরাতে কার্যকর। 
  • বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কসমেটিকে তৈরি করতে পেপে ব্যাবহার করা হচ্ছে। 
  • পেটে খাওয়ার ফলে শরীর সতেজ থাকে।গবেষণায় দেখে গেছে পেঁপে খাওয়ার ফলে ব্লাড সুগার স্বাভাবিক থাকে। পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক দূর করতে বেশি উপকারী। 
  • প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে এই পেঁপেতে। তাই পেঁপে খাওয়ার ফলে পেঁপেতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • নারীদের অনিয়মিত  ঋতুস্রাব সমস্যার জন্য পেঁপে  অনেক উপকারী। 
  • পেট পরিষ্কার রাখতে পেঁপে অনেক উপকারী। 
  • যেহেতু পেপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ভিটামিন ই ভিটামিন সি থাকে। পেঁপে হজমে সহায়তা করে  তাই কষ্ট কাঠিন্য দূর করতে পেঁপে  অনেক উপকারী। 
  • টিভিতে একধরনের বিটা ক্যারোটির নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট  থাকে। যা আমাদের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে। 
  • শরীরের বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রণা দূর করতে পেঁপে সাহায্য করে।বিশেষ করে যখন শরীরের কোন অংশ পড়ে যায় তখন পেঁপের নির্যাস তৈরি  করে দিলে অনেক স্বস্তি পাওয়া যায় । 
  • যাদের মুখে ব্রণ সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যার সমাধানের জন্য পেঁপে অনেক উপকারী। 
  • হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কাঁচা পেঁপে অনেক উপকারী। 
  • ওজন কমাতেও পেঁপে অনেক ভূমিকা রাখে কারণ পেঁপেতে  রয়েছে এক ধরনের এনজাইম । পেঁপে খাওয়ার ফলে দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। ওজন সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে। 

পেঁপে খাওয়ার অপকারিতা

পেঁপের পুষ্টিগুণ জানার আগে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে প্রেমের অপকারিতা কি। কারণ পেঁপের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন কিছু অপকারিতা রয়েছে। তাহলে চলুন এবার জেনে নিন পেঁপে খাওয়ার অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত -

আরও পড়ুনঃ পেয়ারা খাওয়ার ১০ টি  উপকারিতা ও অপকারিতা - পেয়ারার পুষ্টিগুণ কি ? 

  • গর্ভবতী মহিলার জন্য ক্ষতিকারকঃ গর্ভবতী মহিলাদের জন্য পেঁপে একদমই অপকারী। কারণ পেঁপে থাকে এক ধরনের ল্যাট্রিক্স। গর্ব অবস্থায় যদি পেঁপে খাওয়া হয় তাহলে পেঁপে তে থাকা ল্যাট্রিক্স জরায়ুর ক্ষতি করে। যেটা গর্বে থাকা শিশুর জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। পেঁপেতে থাকা এই ল্যাট্রিক্স রক্তপাত, জরায়ুর সংকোচন এমনকি গর্ভপাত পর্যন্তও ঘটাতে পারে।
  • ছোট বাচ্চাদের জন্য নিরাপদ নয়ঃ পেঁপে বাচ্চাদের জন্য নিরাপদ নয়। অনেক সময় এই চিকিৎসকরা বলে থাকে বাচ্চার বয়স এক বছর হওয়ার আগে পেঁপে দেওয়া ঠিক নয়। কারণ এমনিতে ছোট বাচ্চারা জল খুব কম পান করে।আর পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার। ফলে পেঁপে খাওয়ার ফলে মলকে আরো শক্ত করে তোলে ফলাফল ছোট বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
  • শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা তৈরি করেঃ পেঁপেতে এক ধরনের আ্যলোর্জেন থাকে,যার অতিরিক্ত গ্রহণ করার ফলে হাঁপানি এমনকি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা হতে পারে। যাদের এরকম সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য পেঁপে একদমই অপকারি। বিভিন্ন রোগ হলেও এটা খেতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। চিকিৎসক ই বলবে এটা আপনার জন্য কতটুকু পরিমাণ খাওয়া দরকার।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকরঃ সাধারণত পেতে থাকা পুষ্টি উপাদান টাইপ ওয়ান টাইপ টু ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে ভূমিকা রাখে। কিন্তু যদি বেশি পরিমাণে পেঁপে খাওয়া হলে সেটা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিপদজনক হতে পারে।কারণ রক্তে শর্করার পরিমাণ বাস করে । এজন্য ডায়াবেটিস রোগীরা পেঁপে খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সে বিষয়ে ডাক্তারের থেকে পরামর্শ নিতে হবে।
  • পেঁপে কাটার সময় কাঁচা পেঁপে থেকে এক ধরনের সাদা তরল বের হয়। যা চামড়ার অ্যালার্জি সৃষ্টির কারণ হতে পারে।
  • মাত্রাতিরিক্ত পেঁপে খাওয়ার ফলে তাদের খাদ্যনালী নষ্ট হতে পারে।
  • কিডনিতে পাথর থাকা রোগীদের জন্য পেঁপে একদমই অপকারী। কারণ পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।
  • পেঁপেতে এক ধরনের প্যাপিন থাকে যা হৃদস্পন্দন গতি কমানোর ফলে হৃদরোগ জনিত সমস্যা তৈরি করে।

পেঁপের পুষ্টিগুণ 

পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে। এছাড়াও পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন সি ভিটামিন বি ও ভিটামিন এ। পেঁপেতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার ফলে মাথাতে চুল গজায়। কারণ ভিটামিন এ চুল গজাতে ভূমিকা রাখে। পেঁপেতে চিনির পরিমাণ কম থাকায় এটা ডায়াবেটিসের জন্য ভালো।

পেতে থাকা পেপসিন হজমে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপে মেদ কমাতে সাহায্য করে। শরীরে জমে থাকা সোডিয়াম দূর করতে ভূমিকা রাখে। ১০০ গ্রাম পেঁপেতে ৩২ ক্যালোরি থাকে। এছাড়াও পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যালবুমিন সোডিয়াম ফসফরাস কার্বোহাইড্রেট ক্যালসিয়াম ইত্যাদি।

সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে কি হয় 

আমরা সকলেই পেঁপে খেয়ে থাকলেও অনেকে জানিনা সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে কি হয়। তাহলে চলুন এবার জেনে নিন সম্পর্কে -

  • হজমে স্বাস্থ্যঃ পেঁপেতে রয়েছে প্যাপেইন। যা হজমে সাহায্য কর। সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে সারা দিনের জন্য কি কিকস্টার্ট হজম করতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। সকালে খালি পেটে পেঁপে খাওয়ার ফলে পেঁপের এই উপাদান গুলো বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি কমায় এবং লড়াই করতে সাহায্য করে। দেহের অপ্রয়োজনীয় সব বজ্র পদার্থগুলোকে বাহির করে দেয়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ সকালে কাঁচা পেঁপে খাওয়া হলে সেটা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেক ভূমিকা রাখে। পাকস্থলীতে সুস্থ রাখে। বদহজমের সমস্যা কমায় ও এসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে।
  • সকালে খালি পেটে পেঁপে খেলে শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের টক্সিন বের হয়ে যায়। চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
  • এছাড়াও যদি প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে পেঁপে খাওয়া হয় তাহলে হার্ট ও সুস্থ থাকে।

পাকা পেঁপে খাওয়ার সঠিক সময় 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, সাধারণত কোন ভারি খাবারের মাঝে দুই বার ফল খাওয়া দরকার। তবে পেঁপেতে কিছু উপাদান থাকায় খালি পেটে পেঁপে খাওয়া উপকারী। সকালে খালি পেটে যদি পাকা পেঁপে খাওয়া হয় তাহলে সারাদিন শরীরে অনেক বেশি পুষ্টি প্রদান পাওয়া যায়। খালি পেটে সকালে যদি পেতে খাওয়া হয় তাহলে সেটা অনেক উপকারী।

রাতে খাবারের পরও হালকা করে পাকা পেঁপে খাওয়া যায়।দুপুরে খাওয়ার পর কিছু পেঁপে খাওয়া যায়। পেঁপেতে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং এটা অনেক উপকারী তাই সময় পেলেই পেঁপে খাওয়া যায়। বিকেলে নাস্তার সাথেও পেঁপে খাওয়া যায়। কিন্তু সবচেয়ে বেশি উপকারী হচ্ছে খালি পেটে পেঁপে খাওয়া। তাহলে শরীরে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।

আমাদের পরামর্শ

পেঁপের অনেক উপকারি দিক থাকলেও কিছু অপকারী দিক রয়েছে তাই অবশ্যই পেঁপে খাওয়ার ক্ষেত্রে এগুলো লক্ষ্য করা দরকার। গর্ভাবস্থায় পেঁপে এড়িয়ে চলাই ভালো। ডায়াবেটিস রোগিরা অবশ্যই এটা খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করবেন। 

প্রিয় পাঠক,এতক্ষণ তো পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানলেন। তো এই আর্টিকেলটি আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না।এ সকল তথ্য সেবা পেতে অবশ্যই আমাদের WWW.multiplebd.com ওয়েবসাইট টি নিয়মিত ভিজিড করুন। আর হ্যাঁ, আপনার বন্ধু কিংবা আশপাশের মানুষদেরও সকল তথ্যসহ পৌঁছে দিতে অবশ্যই ওয়েবসাইটটি শেয়ার করে দিন। ধন্যবাদ। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url