পেয়ারা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা - পেয়ারার পুষ্টিগুণ কি ?

কাঁচা রসুন খেলে উপকারিতা কি জানুনআজকের পোস্টে আমরা  পেয়ারা খাওয়ার ১০ টি  উপকারিতা ও অপকারিতা - পেয়ারার পুষ্টিগুণ কি ?  বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলচনা করবো। আপনি যদি পেয়ারা খাবার  এসব উপকারি দিক সম্পর্কে না জেনে থাকেন  তাহলে একদম জায়গা মত এসেছেন। কারণ আজকের পুরো পোস্ট  জুড়ে থাকছে পেয়ারা আর এসব উপকারি ও অপকারি দিক নিয়ে। তো চলুন জেনে নিন।
পেয়ারার পুষ্টিগণের মাত্রা অধিক। এটা আমাদের শরীরে অনেক উপকার করে। কিন্তু অনেকেই জানেন না এসব উপকার সম্পর্কে। যেগুলো জানতে পারবেন আজকের এই পোস্টে। শুধু কি তাই, এ পোস্টে আমরা আপনাকে আরো জানাবো পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কেও। তা অবশ্যই বিস্তারিত জানতে পোস্ট টি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভূমিকাঃ 

যত রকম ফলফলাদি রয়েছে তার ভিতরে পেয়ারা একটি অন্যতম ও সুস্বাদু ফল। বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে এ পেয়ারায়। যে কারণে পেয়ারা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।পুষ্টিকর এ ফলটির ত্বক গোলাকার বা ডিম্বাকৃতি হতে পারে। দেখতে অনেকটা সবুজ বা হলুদ এর  মত ।

পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময়

পেয়ারা আমাদের জন্য অনেক উপকারী তাই অবশ্যই জানা দরকার পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে। অনেকেই জানেন না কখন পেয়ারা খাওয়া ভালো। তাহলে আর দেরি কেন, চলুন জেনে এসে যাক পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে। পেয়ারা খাওয়ার ক্ষেত্রে ছক বাঁধা কোন নির্ধারিত নিয়ম মেনে খেতে হয়না। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে-

ভারি খাওয়ার খাওয়ার পরেও দিনে দুইবার ফল খাওয়া যায়। তাই এভাবে পেয়ারা খেতে পারেন। তবে পেয়ারা যদি দুপুরে খাওয়ার পর খাওয়া যায় আবার রাতে খাওয়ার আগে যদি খাওয়া হয় তাহলে উপকার অনেক পাওয়া যায়। এভাবে যদি পেয়ারা খাওয়া হয় তাহলে শুয়োরের জন্য অনেক উপকার মিলে। তবে যখনই মন চায় পেয়ারা খাওয়া যায়।

কিন্তু পেয়ারা খাওয়ার ক্ষেত্রে যদি এসব নিয়ম মেনে খাওয়া হয় তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। পেট ভরা অবস্থায় পেয়ারা না খেয়ে কিছুক্ষণ পর খাওয়া ভালো। বিকেলের সময়ে কিছু পেয়ারা খাওয়া যায়। পেয়ারা খেতে পারেন অনেক পরিশ্রম করার পর যদি পেয়ারা খাওয়া ভালো। কারণ শরীর থেকে প্রচুর গ্যালারি বের হয়, যার অভাব দূর করে পেয়ারা। কাজেই নিশ্চয়ই এতক্ষণ আপনি পেয়ারা পেয়ারা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে জেনে গেছেন।

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতাঃ

পেয়ারা ফলের অনেক উপকারিতা রয়েছে। আমরা সবাই পেয়ারা খেয়ে থাকি কিন্তু অনেকেই জানিনা পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা কি। তাহলে চলুন এবার জানা যাক পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
  • পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার রয়েছে যা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা 
  • নিয়ন্ত্রণ করাতে সাহায্য করতে পারে।
  • হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য পেয়ারা বিভিন্ন উপায়ে ভূমিকা রাখতে পারে। 
  • যারা অনেক মেদ সমস্যায় ভুগছেন ওজন কমানোর জন্য পেয়ারা খেতে পারেন। কারণ পেয়ারাতে ফাইবার থাকে যা ওজন কমানোর জন্য বেশ উপকারী। 
  • ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে যা পেয়ারাতে পাওয়া যায়। 
  • পরিপক্ক ও আঁশসমৃদ্ধ  পেয়ারা নিয়মিত খাওয়ার ফলে হজমের গন্ডগোল ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। 
  • চুল ও ত্বকের যত্নের জন্য পেয়ারা খুব অতুলনীয় একটি ফল।
  • পেয়ারা যদি চিবিয়ে খাওয়া হয় তাহলে এটা দাঁতের জন্য বেশ ভালো। 
  • আমাদের চোখের জন্য ভিটামিন এ অনেক উপকারী। আর ভিটামিন এ এর অন্যতম একটি ভাল  উৎস কাঁচা পেয়ারা। রাতকানা রোগ প্রতিরোধসহ চোখের কর্নিয়াকে সুস্থ রাখতে পেয়ারা বেশ ভূমিকা রাখে। 
  • ডায়রিয়া রোধ করার জন্য পেয়ারা খাওয়া উত্তম। 
  • আমাদের শরীরের হাড় মজবুত করতে পেয়ারা অনেক উপকারী কারণ পেয়াতে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকে।

পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতাঃ

যেকোনো ভালো কিছুই যদি মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার বা গ্রহণ করা হয় তাহলে তার ফলাফল ভালো থাকে না। পেয়ারা অনেক উপকারী হলেও এর মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণ আপনাকে ফেলতে পারে বেশ কিছু সমস্যায়। লোভে পড়ে মাত্রাতিরিক্ত পেয়ারা খাচ্ছেন হিতে বিপরীত হবে না তো..? চলুন তাহলে জেনে আসা যাক পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতা কি।

পেয়ারা খাওয়ার অপকারিতার নিম্নরূপ-

ব্যাকটেরিয়াঃ পেয়ারাতেও অন্যান্য ফলের মতো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয। এক্ষেত্রে যদি পেয়ারা চামড়া ফাটা বা দূষিত কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে তার ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

সুগার বৃদ্ধিঃ ব্লাড সুগার জাদের রয়েছে তাদের জন্য পেয়ারা একদমই উপকারী নয়। কারণ অধিক পেয়ারা খেলে ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

পেট ফাপাঃ আমরা সকলে জানি অধিক পরিমাণ ফুক্ট্রোজ আমাদের শরীরের জন্য উপযোগী নয়। পেয়ারা উচ্চ ফুক্ট্রোজ সমৃদ্ধ ফল। তাই বেশি পরিমাণে পেয়ারা খেলে এর খনিজ উপাদান এবং সাথে ব্যাকটেরিয়া মিলে আমাদের পেটে গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে যার কারণে পেট ফাঁপা অনভূত হয়।
  • আপনারা যারা ডায়রিয়া সমস্যায় ভুগেন তাহলে অতিরিক্ত মসলা দ্বারা পেয়ারা মাখানো খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।এতে পেটের ক্ষতি হতে পারে ।
  • আপনি যদি অতিরিক্ত খাবার খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই খাবার পর পেয়ারা খাওয়া উচিত নয়। এতে পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • পেয়ারা ফলের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিনি থাকে। যাকে আমরা ফ্রুক্টোজ বলি। তাই বেশি বেশি পেয়ারা খেলে পেয়ারার এই ফুক্ট্রোজ আমাদের শোষণ ও হজম করতে সমস্যা হয়।

পেয়ারা খাওয়ার নিয়মঃ

পেয়ারা এমন একটি ফল যেতে বিভিন্নভাবে খাওয়া যেতে পারে।প্রথমেই বলে রাখি, পেয়ারা খাওয়ার জন্য ছঁকবাধা কোনো নিয়ম নেই।যেভাবে  ইচ্ছা সেভাবেই চাইলে পেয়ারা খাওয়া যায়। তবে আমরা সাধারণত যেভাবে পেয়ারা খেয়ে থাকি সে বিষয়গুলো নিয়ে এখন আপনাদের সামনে আলোচনা করব। পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম গুলো নিম্নরূপঃ
  • পেয়ারা যদি কাঁচা অবস্থায় খেতে চান তাহলে এটা কুচি কুচি করে কেটে সাথে লবণ মরিচ কাসুন্দি ইত্যাদি মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এভাবে খেলে এটা অনেক মুখ রচক ও খুব সুস্বাদু ছাদ উপভোগ করা যায়।
  • এমন অনেকেই আছে যারা পেয়ারা আচার তৈরি করে খেয়ে থাকে। পেয়ারার আচার অনেক মুখরোচক ও সুস্বাদ হয়ে থাকে। তাই আচার বানিয়েও পেয়ারা খাওয়া যেতে পারে।
  • তাছাড়া খালি পেটে যদি সকালে পেয়ারা খাওয়া হয় তাহলে উপকার দেখা দেয়।
  • অভিজ্ঞ চিকিৎসকের মতানুসারে,পেয়ারা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো হতে পারে দুটি ভারী খাবারের মধ্যবর্তী টাইমে।
  • গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারা কাঁচা অবস্থায় খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার হতে পারে। তাই যতদূর সম্ভব হয় আপনি পেয়ারা কাঁচা অবস্থায় খাবেন।

পেয়ারার পুষ্টিগুণঃ

প্রিয় পাঠক , এতক্ষণ তো পেয়ারার বিভিন্ন  উপকারিতা - অপকারিতা  ও পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম সহ  বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে  জানলেন। তাহলে চলুন এবার জেনে আসা যাক পেয়ারার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। 
  • অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, ৪ টা কমলালেবু সমান পুষ্টিগুণ রয়েছে একটি পেয়ারাতে। পেয়ারা এমন একটি ফল যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম রয়েছে । তাছাড়া অনেকের মতে শুধুমাত্র একটি পেয়ারায় রয়েছে চারটি কমলা লেবু ও চারটি আপেলের পুষ্টিগুণ। ভিটামিন সি তে ভরপুর পেয়ারা। যা আমাদের মুখগহ্বর ও মাড়ি দাঁত সুস্থ রাখে।
  • পেয়ারাতে সব ধরনের খনিজ উপাদান ভরপুর থাকে। পেয়ারাতে থাকা ভিটামিন সি ও আ্যন্টি অক্রিডেন্ট আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাছাড়া এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরে কোথাও কেটে গেলে ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • যেহেতু পেয়ারাতে ভিটামিন এর উৎস তাই এতে থাকা ভিটামিন এ আমাদের চোখের কর্নিয়াকে সুস্থ রাখতে এবং যাদের রাতকানা রোগ রয়েছে তা প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • পেয়ারাতে রয়েছে পটাশিয়াম যা আমাদের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • পেয়ারাতে পানির পরিমাণ প্রচুর থাকে। যা তক ও চুল সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • পেয়ারাতে এক ধরনের আশ রয়েছে যা শরীর থেকে চিনি শোষণ কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারার রস সর্দি কাশি আমসা সহ কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের অসুখ দূর করাতে খুব উপকারি ।

আমাদের পরামর্শ 

নিঃসন্দেহে পেয়ারা অনেক উপকারী ও আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।কিন্তু তবুও পেয়ারার কিছু অপকারিতা রয়েছ। তাই পেয়ারা খাওয়ার সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবেন। পেয়ারা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি দিয়ে পেয়ারা ধুয়ে নিবেন। এবং পরিমাণ মত খাবেন ।

প্রিয় পাঠক পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কিংবা এ পোস্টের মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। সকল তথ্য গুলো পেতে অবশ্যই নিয়মিত ভিজিড করুন আমাদের এ WWW.multiplebd.com ওয়েবসাইটটি। কারণ আমরা নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট লিখে থাকি। আর হ্যা,আপনার বন্ধু কিংবা আশপাশের মানুষদেরও এ সকল তথ্য সেবা পেতে অবশ্যই ওয়েবসাইটটি শেয়ার করে দিন ধন্যবাদ ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাল্টিপল বিডির নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন । প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url